দুই ম্যাচ খেলেই শেষ হতে পারে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ অভিযান

২০২৬ বিশ্বকাপ ফুটবলের বাছাইপর্বেও দুই লেগের প্লে–অফ দিয়ে শুরু করতে হতে পারে বাংলাদেশকেফাইল ছবি

কাতার বিশ্বকাপ শুরু হতে এখনো সাড়ে তিন মাস বাকি। ২০২২ বিশ্বকাপের ডামাডোল বেজে ওঠার আগেই ২০২৬ বিশ্বকাপের বাছাইপর্বের এশিয়া অঞ্চলের পথপরিক্রমা চূড়ান্ত করেছে এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশন (এএফসি)। ৪৮ দলের যুক্তরাষ্ট্র-কানাডা-মেক্সিকো বিশ্বকাপে এশিয়ার আটটি দল সরাসরি খেলবে। এশিয়া থেকে বাড়তি একটি দলের আন্তমহাদেশীয় প্লে-অফ খেলে সুযোগ পাওয়ার সম্ভাবনা আছে। বাছাইপর্বের কাঠামো ও সম্ভাব্য সূচি প্রকাশ করেছে এএফসি। ২০২৩ সালে অক্টোবরে শুরু হবে এশীয় অঞ্চলের বাছাইপর্ব।

বিশ্বকাপে দল বাড়লেও সেই কাঠামো বাংলাদেশের মতো র‌্যাঙ্কিংয়ে পিছিয়ে থাকা দলগুলোর জন্য কোনো সুখবর আনেনি। মাত্র দুটি ম্যাচ খেলেই বিশ্বকাপ বাছাই পর্ব শেষ হয়ে যেতে পারে অন্তত ১১টি দলের। তবে বাদ পড়া দলগুলো এশিয়ান কাপের বাছাইপর্বে আরেকটি সুযোগ পাবে।

একটি নির্দিষ্ট সময়ে ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে এএফসির ২৬ থেকে ৪৭ নম্বরে থাকা ২২টি দল খেলবে প্রাথমিক প্লে-অফ। ড্রতে বাছাই করা হবে কোন ১১টি দল কোন ১১টি দলের বিপক্ষে খেলবে তা। সর্বশেষ ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে এশিয়ায় দলগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ আছে ৪২ নম্বরে।

একটি নির্দিষ্ট সময়ে ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে এএফসির ২৬ থেকে ৪৭ নম্বরে থাকা ২২টি দল খেলবে প্রাথমিক প্লে-অফ। ড্রতে বাছাই করা হবে কোন ১১টি দল কোন ১১টি দলের বিপক্ষে খেলবে তা। হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে দুই লেগের প্লে-অফের পেরিয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডে র‌্যাঙ্কিংয়ে এগিয়ে থাকা ২৫টি দলের সঙ্গে যোগ দেবে ১১টি দল। সর্বশেষ ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে এশিয়ায় দলগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ আছে ৪২ নম্বরে। এএফসির সদস্য ৪৭টি দলের সবাই বাছাইপর্বে অংশ না নিলে প্লে-অফের কাঠামো এদিকওদিক হতে পারে। ২০২৬ বিশ্বকাপের বাছাইপর্বটা ২০২৭ এশিয়ান কাপের বাছাইপর্ব হিসাবেও কাজ করবে। প্লে-অফ থেকে বিশ্বকাপে জায়গা পেতে এশিয়ার একটি দলকে কমপক্ষে তিনটি রাউন্ড পেরোতে হবে।

জটিল ও দীর্ঘ বাছাইপর্ব পেরিয়ে দলগুলো কীভাবে বিশ্বকাপে ও এশিয়ান কাপে যাবে সেই ধাপগুলোর বর্ণনা দেওয়া হলো এখানে।

প্রথম রাউন্ড (প্লে-অফ)

ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে এশিয়ার শেষ ২২টি দলকে (২৬ থেকে ৪৭) খেলতে হবে প্রথম পর্ব। ড্রতে বাছাই করা হবে কোন ১১টি দল কোন ১১টি দলের বিপক্ষে খেলবে। হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে দুই লেগের প্লে-অফের পেরিয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠবে ১১টি দল। বাদ পড়াদের বিশ্বকাপ শেষ এখানেই।

দ্বিতীয় রাউন্ড

র‌্যাঙ্কিংয়ের প্রথম ২৫টি দলের সঙ্গে প্লে-অফ পেরিয়ে আসা ১১টি দল যোগ দেবে। ৩৬টি দলকে ভাগ করা হবে ৯টি গ্রুপে। প্রতিটি দল হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে পদ্ধতিতে এক অপরের সঙ্গে দুবার করে খেলবে। প্রতিটি গ্রুপের শীর্ষ দুটি দল উঠবে পরের রাউন্ডে। এই ১৮টি দলের ২০২৭ এশিয়া কাপে খেলাও চূড়ান্ত হবে।

এশিয়ান বাছাইপর্বের পথপরিক্রমা
ছবি: এএফসি

তৃতীয় রাউন্ড

১৮টি দলকে তিন গ্রুপে ভাগ হয়ে খেলবে। প্রতি গ্রুপে একেকটি দল ১০টি করে ম্যাচ খেলবে। প্রতি গ্রুপের শীর্ষ দুটি দল ২০২৬ বিশ্বকাপে সরাসরি জায়গা পাবে। আশা বেঁচে থাকবে তৃতীয় ও চতুর্থ দলগুলোরও। দুই গ্রুপের তলানির দুটি করে দল বাদ পড়ে যাবে।

চতুর্থ রাউন্ড (এশিয়ান প্লে-অফ)

তিন গ্রুপের তৃতীয় ও চতুর্থ হওয়া ছয়টি দলকে দুটি গ্রুপে ভাগ করা হবে। দলগুলো এই পর্বে একবার করে মুখোমুখি হবে পরস্পরের। দুই গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন সুযোগ পাবে বিশ্বকাপে। দুই গ্রুপের রানার্সআপরা একটি প্লে-অফ খেলবে। জয়ী দল যাবে আন্তমহাদেশীয় প্লে-অফে।

আন্তমহাদেশীয় প্লে-অফ

কোন মহাদেশের বিপক্ষে খেলবে এশিয়ার দলটি তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি।

এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের প্লে-অফ

প্রথম পর্বের প্লে-অফে বাদ পড়া ১১টি দলের মধ্যে র‌্যাঙ্কিংয়ে পিছিয়ে থাকা শেষ ১০টি দল হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে পদ্ধতিতে এক রাউন্ডের প্লে-অফ খেলবে। জয়ী পাঁচটি দল এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের পরবর্তী ধাপে উঠবে।

এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বে চূড়ান্তপর্ব

প্লে-অফ পেরোনো পাঁচটি দল ও বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের প্রথম রাউন্ডে খেলা র‌্যাঙ্কিংয়ে এগিয়ে থাকা দলটি যোগ দেবে আরও ১৮টি দলের সঙ্গে। বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের দ্বিতীয় রাউন্ড থেকে বাদ পড়া এই ১৮টি দল। ২৪টি দলকে ছয়টি গ্রুপে ভাগ করা হবে। প্রতি গ্রুপের শীর্ষ দলটি জায়গা পাবে এশিয়ান কাপে।