দি মারিয়ার অভিযোগের জবাবে যা বললেন ফন গাল

আনহেল দি মারিয়া ও লুই ফন গালছবি: এএফপি

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দ্বিতীয় রাউন্ডের ম্যাচে খেলেননি। আসলে খেলতে দেয়নি চোট। আজ কোয়ার্টার ফাইনালে আবার মাঠে ফেরার কথা আনহেল দি মারিয়ার। লুই ফন গালের সঙ্গে হয়তো দেখাও হবে আবার। কুশল বিনিময় করবেন তো দুজন? সম্ভাবনা কম।

লুই ফন গাল থাকবেন আজ আর্জেন্টিনার প্রতিপক্ষ দলের ডাগআউটে। নেদারল্যান্ডসের কোচ এই ম্যাচ নিয়ে তাঁর পরিকল্পনা সাজানোর সময় লিওনেল মেসির মতো আনহেল দি মারিয়ার জন্যও নিশ্চয়ই বাড়তি একটু সময় ব্যয় করেছেন। দি মারিয়াকে তো খুব ভালো করেই চেনেন তিনি। যদিও সেই চেনাজানাটা খুব একটা প্রীতিকর কিছু নয়।

আরও পড়ুন

২০১৪ সালে রিয়াল মাদ্রিদ থেকে পাঁচ বছরের চুক্তিতে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে যোগ দিয়েছিলেন দি মারিয়া। লুই ফন গাল তখন ইউনাইটেডের কোচ। এক মৌসুম পরই যে আর্জেন্টাইন উইঙ্গার ইউনাইটেড ছেড়ে দিলেন, তার পেছনে বড় কারণ ছিলেন ফন গাল। দি মারিয়া তা গোপন তো করেনইনি, বরং একেবারে ধুয়ে দিয়েছিলেন ডাচ কোচকে। তা কী বলেছিলেন দি মারিয়া? ‌‘ইউনাইটেডে আমার সমস্যা ছিল কোচ। ফন গাল আমার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বাজে কোচ।’ এই দাবির পক্ষে যেসব প্রমাণ দিয়েছিলেন, তা সত্যি হলে মানতে হয়, দি মারিয়ার সঙ্গে কোনো ব্যক্তিগত সমস্যা ছিল ফন গালের।

ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের দিনগুলোয় ফন গালের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো ছিল না দি মারিয়ার
ছবি: টুইটার

এই বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল দুজনকে মুখোমুখি করিয়ে দেওয়ার পর দি মারিয়া আর ফন গালের পুরোনো সমস্যা আবার উঠে এসেছে আলোচনায়। আর্জেন্টিনার বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনালের আগে নেদারল্যান্ডসের সংবাদ সম্মেলনে ফন গালকে সরাসরিই যে প্রশ্ন করে বসলেন এক আর্জেন্টাইন সাংবাদিক। দি মারিয়া যে বলেছেন, আপনি তাঁর ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বাজে কোচ—এ সম্পর্কে কী বলবেন?

লুই ফন গালের মুখ দেখে মনের ভাব বোঝার উপায় নেই। এমন একটা প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে বেশির ভাগ কোচের মুখেই হয়তো একটা বিব্রত ভাব ফুটে উঠত, অথবা বিরক্তির। লুই ফন গালের মুখে এসবের চিহ্নমাত্র নেই। খুবই স্বাভাবিকভাবে প্রশ্নটার উত্তর দিলেন। পাশে বসে থাকা ডাচ ফুটবলার মেম্ফিস ডিপাইকে জড়িয়ে রসিকতা করে সাংবাদিকদের হাসালেনও।

আরও পড়ুন
আরও পড়ুন

প্রথমেই ‌‘দি মারিয়া খুব ভালো ফুটবলার’ বলে প্রশংসা করে নিলেন। তারপর তাঁর দৃষ্টিকোণ থেকে ইউনাইটেডে দি মারিয়ার কী সমস্যা হয়েছিল, সেটিও বললেন বিস্তারিত, ‌‘ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে খেলার সময় ওর অনেক ব্যক্তিগত সমস্যা ছিল। ওর বাড়িতে একটা ডাকাতি হয়েছিল, ফিটনেসেও সমস্যা ছিল। ও যে আমাকে সবচেয়ে বাজে কোচ বলেছে, খুব কম খেলোয়াড়ই কিন্তু এমন বলেছে। সাধারণত এটা উল্টো হয়। খুবই দুঃখজনক যে, আনহেল এমন বলেছে। খুবই দুঃখজনক।‘

সংবাদ সম্মেলনে ফন গাল ও মেম্ফিস ডিপাই
ছবি: এএফপি

দুঃখের কথা বলার সময়ও ফন গালের মুখে তার কোনো ছাপ নেই। উল্টো মেম্ফিস ডিপাইয়ের উদাহরণ টানতে গিয়ে যা বললেন, তাতে সাংবাদিকদের মধ্যে হাসির রোল উঠল। দি মারিয়া ইউনাইটেড ছেড়ে প্যারিস সেন্ট–জার্মেইয়ে চলে যাওয়ার পর ফন গালের ইউনাইটেডে যোগ দিয়েছিলেন ডিপাই। সেই কথা মনে করিয়ে দিয়ে বললেন, ‌‌‘এই যে আমার পাশে বসে থাকা মেম্ফিস ডিপাই, ও ইউনাইটেডে খেলেছে। ওর সঙ্গেও আমার এমন ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু এখন আমাদের এমন সম্পর্ক যে, এখন আমরা পরস্পরকে চুমু খাই। একেবারে মুখে মুখ লাগিয়ে চুমু। ফুটবলে এমন হয়ই।‌’

আরও পড়ুন

মেম্ফিস ডিপাই তখন হাসছেন। ফন গালের কথা অবশ্য তখনো শেষ হয়নি, ‘আমি মেস্ফিসকে সেমিফাইনালের (২০১৪ বিশ্বকাপ) দলে রাখিনি। যাতে ও নিশ্চয়ই কষ্ট পেয়েছিল। কিন্তু হেড কোচ হিসেবে এমন অনেক সিদ্ধান্তই নিতে হয়। তা নেওয়ার পেছনে কারণও থাকে।‌ কখনো এটা ভুলও হতে পারে। কিন্তু এরপর কী হয়, এখানেই দেখো। মেস্ফিস রাজি নয় বলে আমি অবশ্য এখানে ওকে চুমু খেতে পারছি না।‌’