যে ৩ কারণে বার্সার কাছে হেরেছে রিয়াল

ফাইনালে ব্যর্থ রিয়াল মাদ্রিদছবি : টুইটার

২০২৩ সালটা ঠিক নিজেদের মতো করে রাঙাতে পারছে না রিয়াল মাদ্রিদ। এক ম্যাচে জেতে তো পরের ম্যাচেই সঙ্গী হয় হার। নতুন বছরে যে দুটি ম্যাচ জিতেছে, সেটাও ঠিক ‘রিয়ালসুলভ’ নয়।

গত সপ্তাহে স্প্যানিশ লা লিগায় ভিয়ারিয়ালের কাছে পা হড়কানোর পরই ফুটবলবোদ্ধারা আশঙ্কা করেছিলেন, এটাই শেষ নয়। শিগগিরই আরেক দফা হোঁচট খাবে রিয়াল। সেই ধাক্কাটা খেয়েছে গত রাতে, স্প্যানিশ সুপার কাপের ফাইনালে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বার্সেলোনার কাছে ৩-১ ব্যবধানে বিধ্বস্ত হয়ে।

কার্লো আনচেলত্তির প্রায় সব কৌশল কাল জাভি হার্নান্দেজের কাছে মার খেয়েছে। ফেদে ভালভের্দে-আন্তোনিও রুডিগারদের দেখে মনে হয়েছে, বড় হারটা তাঁদের পাওনা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

জাভির সামনে আনচেলত্তির সব কৌশল বিফলে গেছে
ছবি : সংগৃহীত

অথচ সৌদি আরবের রিয়াদে গত রাতের আগে সবশেষ ২০১০ সালে কোনো ফাইনাল হেরেছিলেন রিয়ালের কোচ কার্লো আনচেলত্তি। তবে কি অতি-আত্মবিশ্বাসই কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে? ফাইনাল–পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে আনচেলত্তি নিজেই এর ব্যাখ্যা দিয়েছেন। দলের পারফরম্যান্স বিশ্লেষণ করতে গিয়ে তিনটি বড় ভুল খুঁজে পেয়েছেন তিনি। দেখে নেওয়া যাক, আনচেলত্তির চোখে বার্সার সঙ্গে পেরে না ওঠার তিন কারণ—


সর্বোচ্চটা দেওয়ার তাড়নার অভাব

রিয়াল মাদ্রিদ শুরু থেকেই গড়পড়তা মানের দলগুলোর মতো খেলেছে। সেটার সুযোগ নিয়ে প্রথমার্ধেই দুই গোলে এগিয়ে গেছে বার্সেলোনা। সেখান থেকে আর ম্যাচে ফিরতে পারেনি রিয়াল। আনচেলত্তিও বিষয়টি স্বীকার করেছেন, ‘দলে সর্বোচ্চটা দেওয়ার তাড়নার ঘাটতি ছিল। আমাদের খেলায় ধার ছিল না। প্রথমার্ধেই আমরা ২৫ বার ওদের পায়ে বল তুলে দিয়েছি। ওয়ান-অন-ওয়ানে আমাদের গতির অভাব ছিল। বেশ কয়েকটি দ্বৈত লড়াইয়েও পেরে উঠিনি। সব দিক বিবেচনায় এটা আমাদের জন্য একটা বাজে ম্যাচ।’

ট্রফি নিয়ে লেভা (মাঝে), গাভি (ডানে) ও দেম্বেলের উদ্‌যাপন
ছবি : রয়টার্স

এলোমেলো রক্ষণ

সের্হিও রামোস, রাফায়েল ভারানরা ক্লাব ছাড়ার পর থেকে রিয়ালের রক্ষণ-দুর্বলতা স্পষ্ট ফুটে উঠছে। এদের মিলিতাও, আন্তোনিও রুডিগার, ফেরলাঁ মেন্দিরা প্রতিপক্ষের আক্রমণ রুখতে ব্যর্থ। অভিজ্ঞ দানি কারভাহাল সবে সুস্থ হয়ে ফিরেছেন। তবে চোটে ছিটকে গেছেন অন্য দুই ডিফেন্ডার লুকাস ভাজকেজ ও ডেভিড আলাবা।

আরও পড়ুন

রিয়ালের এলোমেলো রক্ষণ আনচেলত্তির কপালেও চিন্তার ভাঁজ ফেলে দিয়েছে, ‘যখন আপনি তিন গোল খাবেন, বুঝে নিতে হবে রক্ষণে প্রচুর উন্নতি প্রয়োজন। খেলোয়াড়েরাও জানে, তারা যে ভুলগুলো করেছে চাইলেই শোধরাতে পারে। প্রতিপক্ষ এগিয়ে গেলেই আমাদের জন্য ঘুরে দাঁড়ানো কঠিন হয়ে পড়ছে। লিগেও এমনটা ঘটছে।’

বার্সার আক্রমণের সঙ্গে পেরে ওঠেনি রিয়ালের রক্ষণ
ছবি : সংগৃহীত

অতি-আত্মবিশ্বাসই টার্নিং পয়েন্ট

রিয়াল মাদ্রিদ সাধারণত ফাইনালে হারে না—কথাটা যেন রিয়াল খেলোয়াড়দের মনে গেঁথে গিয়েছিল। কিন্তু এই অতি-আত্মবিশ্বাসই ফাইনালের টার্নিং পয়েন্ট হয়ে দাঁড়িয়েছে। পারফরম্যান্সের গ্রাফ ক্রমেই নিম্নমুখী হলেও ইতিহাসই রিয়ালকে শিরোপা এনে দেবে, এমন ধারণা তৈরি হয়েছিল।

এ ব্যাপারে আনচেলত্তি বলেছেন, ‘দলের প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ মনোভাব ও ঘুরে দাঁড়ানোর সক্ষমতা এই জায়গায় এনে দিয়েছে। এই মুহূর্তে আমরা সংগ্রাম করছি। সেরা সময়ে না থাকলেও মনে করেছি এবারও জিতব। কিন্তু এখন আমাদের কষ্ট পেতে হচ্ছে।’