ঘরের ছেলে যখন পরের মাঠে

জোয়াও কানসেলো ও জোয়াও ফেলিক্স—দুই পর্তুগিজ বার্সেলোনায় খেলছেন ধারেএফসি বার্সেলোনা

চলতি মৌসুমে বার্সেলোনার ফরোয়ার্ডদের মধ্যে রবার্ট লেভানডফস্কির পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ম্যাচ খেলেছেন জোয়াও ফেলিক্স। ডিফেন্ডারদের মধ্যে তৃতীয় সর্বোচ্চ ম্যাচ জোয়াও কানসেলো। মৌসুমজুড়ে বার্সেলোনার প্রতিনিধিত্ব করে এলেও আক্রমণ ও রক্ষণে খেলা দুই পর্তুগিজ আদতে এই ক্লাবের খেলোয়াড় নন। দুজনই বার্সেলোনায় খেলছেন ধারে। কানসেলোকে ধারে পাঠিয়েছে ম্যানচেস্টার সিটি, ফেলিক্সকে আতলেতিকো মাদ্রিদ।

দলগুলো খেলোয়াড় কেনে অনেক চিন্তাভাবনা করে, বড় অঙ্কের অর্থ খরচ করে। এর পরও নানা কারণে পাঠিয়ে দেওয়া হয় অন্য ক্লাবে। হালনাগাদ তথ্য বলছে, ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লিগের দলগুলোর মধ্যে ২০২৩-২৪ মৌসুমে সবচেয়ে বেশি খেলোয়াড় ধারে পাঠিয়েছে সিরি আ–এর সাসসুয়োলো। আর বাজারমূল্য বিবেচনায় সবচেয়ে বেশি দামের খেলোয়াড় পাঠিয়েছে প্রিমিয়ার লিগের চেলসি। বাজারে দাম আছে, এমন খেলোয়াড়দের ধারে পাঠিয়ে রেখেছে ম্যানচেস্টার সিটি আর পিএসজিও।

একটি ক্লাব তার চুক্তিবদ্ধ খেলোয়াড়কে আরেক ক্লাবে পাঠানোর নানা কারণ থাকতে পারে। এর মধ্যে আছে তাঁকে বেশি বেশি খেলার সুযোগ দেওয়া, কিছু অর্থ সাশ্রয় করা, স্কোয়াডের ব্যাপ্তি কমানো, তরুণ খেলোয়াড়কে উন্নতির সুযোগ করে দেওয়া, ক্লাব-খেলোয়াড়ের সম্পর্কে দূরত্ব, অপর ক্লাবের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়ন, বিক্রির ব্যবস্থা না হওয়ার পর অস্থায়ীভাবে ছেড়ে দেওয়াসহ বিভিন্ন কারণ।

চেলসি যেমন রোমেলু লুকাকুকে রোমায় পাঠিয়েছে স্টামফোর্ড ব্রিজে খুব একটা কাজে লাগবে না ধরে নিয়ে। রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে খেলা গোলকিপার কেপা আরিসাবালাগাও চেলসিরই খেলোয়াড়। দলবদল বাজারে গত মৌসুমে বিপুল অর্থ খরচ করা চেলসি হাকিম জিয়েশকে পাঠিয়েছে তুরস্কের গালাতাসারাইয়ে। সব মিলিয়ে চলতি মৌসুমে চেলসির ১১ জন খেলোয়াড় বিভিন্ন ক্লাবে খেলছেন, ট্রান্সফার মার্কেট অনুসারে যাঁদের সম্মিলিত বাজারমূল্য ১৭ কোটি ৩০ হাজার ইউরো।

আরও পড়ুন

দামি খেলোয়াড় ধারে পাঠানোয় এর পরেই অবস্থান সিটির। পেপ গার্দিওলার দল ধারে পাঠিয়েছে মোট ৯ জনকে। এর মধ্যে কানসেলোর মতো ২৯ বছর রাইটব্যাক যেমন আছেন, আছেন ২১ বছর বয়সী সেন্ট্রাল মিডফিল্ডার জেমস ম্যাকাটিও (শেফিল্ড ইউনাইটেড)। সিটির ধারের তালিকায় অবশ্য ক্লদিও এচেভেরিও আছে, ১৮ বছর বয়সী যে তরুণকে রিভারপ্লেট থেকে কিনে একই ক্লাবে এক বছরের জন্য রেখে দেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে সিটির ধারে থাকা খেলোয়াড়দের বাজারমূল্য ১৫ কোটি ৫০ হাজার ইউরো।

আর্জেন্টাইন তরুণ ক্লদিও এচেভেরিকে রিভারপ্লেট থেকে কিনে একই ক্লাবে এক বছরের ধারে রেখেছে ম্যানচেস্টার সিটি
ফিফা

ফরাসি চ্যাম্পিয়ন পিএসজির ধারে পাঠানো খেলোয়াড়দের মোট দাম ১২ কোটি ৭৯ লাখ ইউরো। রোমায় রেনাতো সানচেজ, লাইপজিগে জাভি সিমন্স, বেনফিকায় হুয়ান বারনাতসহ মোট ১৩ জনকে ধারে পাঠিয়ে পিএসজি।

আরও পড়ুন

ইতালিতে সর্বোচ্চ ৯ কোটি ৭৩ লাখ ইউরোর খেলোয়াড় ধারে পাঠিয়েছে জুভেন্টাস। লাৎসিওতে নিকোলো রোভেলা, ফিওরেন্তিনায় আর্থার মেলো, জিরোনায় কনি ডি উইন্টারসহ ১২ জনকে ধার দিয়েছে তারা। বুন্দেসলিগায় শীর্ষে ৪ কোটি ৪৩ লাখ ইউরোর খেলোয়াড় পাঠানো বায়ার্ন মিউনিখ। পিএসভি আইন্দহফেনে মালিক টিলমান, বায়ার লেভারকুসেনে ইওসিপ স্তানিসিচসহ ৮ জনকে ধারে দিয়েছে দলটি। আর লা লিগায় এ হিসাবে এগিয়ে বার্সেলোনা।

সিটি ও আতলেতিকো থেকে খেলোয়াড় ধার নেওয়া বার্সা নিজেদের একাডেমি থেকে গড়ে তোলা প্রতিভা আনসু ফাতিকে পাঠিয়েছে ব্রাইটনে। এ ছাড়া জিরোনায় খেলা এরিক গার্সিয়া ও পাবলো তোরে এবং অ্যাস্টন ভিলায় খেলা ক্লেমঁ লংলে বার্সেলোনারই খেলোয়াড়। সব মিলিয়ে ৯ কোটি ১৫ লাখ ইউরোর ৯ জনকে ধারে পাঠিয়েছে বার্সেলোনা।

খেলোয়াড় সংখ্যায় পাঁচ লিগের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ধারে পাঠিয়েছে সিরি আ–র সাসসুয়োলো—মোট ৩১ জন। একই লিগের জেনোয়া ধার দিয়েছে ২৬ জনকে।

আরও পড়ুন