ইন্টারের ‘ইয়ামাল-ঠেকাও ফর্মুলা’: দুই নাকি তিন, কতজন লাগবে

বার্সেলোনার অনুশীলনে লামিনে ইয়ামালএএফপি

আর একটা ধাপ। সেটা পেরোলেই চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনাল। যে ফাইনালে ২০১৫ সালের পর আর কখনো খেলেনি বার্সেলোনা। ইন্টার মিলান অবশ্য ফাইনাল খেলেছে ২০২৩ সালেই। তবে শিরোপা জিততে পারেনি। তাদের সর্বশেষ শিরোপা সেই ২০১০ সালে। সেই ইন্টার এবার সেমিফাইনালে বার্সেলোনার মুখোমুখি।

আরও পড়ুন

আরও একটা ফাইনালে খেলার স্বপ্ন নিয়ে মাঠে নামা দুই দলের সেই সেমিফাইনালের প্রথম লেগটা ড্র হয়েছে ৩-৩ গোলে। ওটা ছিল বার্সেলোনার মাঠে। আজ ইন্টারের মাঠে ফিরতি লেগ। স্কোরলাইনে বলছে দুই দলই সমতায়। তবে নিজের মাঠে এ ম্যাচটা খেলবে বলে মানসিকভাবে ইন্টারই কিছুটা এগিয়ে থাকবে। কিন্তু এই এগিয়ে থাকাটা খুব একটা কাজে আসবে না যদি বার্সেলোনার বিস্ময় বালক লামিনে ইয়ামাল জ্বলে ওঠেন আবার। আর সে জন্যই ইন্টার ডিফেন্ডার আলেসান্দ্রো বাস্তোনি ও কোচ সিমোনে ইনজাগির আজ একটাই লক্ষ্য, দরকার হলে দুই-তিনজন মিলে ইয়ামালকে থামানো।

ইয়ামালকে থামানো ‘হোমওয়ার্ক’ সেরেছে ইন্টার। ম্যাচে পারবে তো
ইন্টার মিলান ওয়েবসাইট

প্রথম লেগেও দারুণ খেলেছেন ইয়ামাল, গোলও পেয়েছেন একটা। সেই গোলেই বার্সা তারকা গড়েছিলেন এক কীর্তিও। চ্যাম্পিয়নস লিগের ইতিহাসে কিলিয়ান এমবাপ্পের পর দ্বিতীয় কিশোর খেলোয়াড় হিসেবে শেষ ষোলো, কোয়ার্টার ফাইনাল ও সেমিফাইনালে গোল করেছেন ইয়ামাল।

১৭ বছর বয়সী ইয়ামাল এবার চ্যাম্পিয়নস লিগে এরই মধ্যে করে ফেলেছেন ৬টি গোল। বয়স ২০ হওয়ার আগেই চ্যাম্পিয়নস লিগের এক মৌসুমে ৬ গোল আছে শুধু এমবাপ্পে (৬), রাউল (৬) ও হলান্ডের (১০)। তাঁর ৪৪টি শট, ১৯টি লক্ষ্যে থাকা শট এবং ৭৮টি ড্রিবল—সবই টিনএজার হিসেবে চ্যাম্পিয়নস লিগ ইতিহাসে নতুন রেকর্ড।

আরও পড়ুন

সেমিফাইনালের আগেও ইন্টার ডিফেন্ডার আলেসান্দ্রো বাস্তোনি ইয়ামালের মুখোমুখি হয়েছেন—গত ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে। কিন্তু এখনকার ইয়ামাল, তাঁর চোখে, সম্পূর্ণ ভিন্ন এক খেলোয়াড়, ‘তাকে আগেও দেখেছি, কিন্তু এখন সে যে মানের খেলা দেখাচ্ছে, তা অভাবনীয়।’

২৬ বছর বয়সী ইতালিয়ান ডিফেন্ডারের কথা, ‘ওর বয়স, ওর সাহস, ওর বল পায়ে বিস্ময় তৈরি করার ক্ষমতা—সব মিলিয়ে সে এখন বিশ্বের সেরাদের একজন। আমরা প্রথম লেগের মতো আবারও তাকে ডাবল, এমনকি ট্রিপল মার্ক করব। তবে অতিরিক্ত কিছু করলে বিপদ বাড়বে, কারণ বার্সেলোনা মানে শুধু ইয়ামাল নয়।’

সান সিরোতে আজ রাতের ম্যাচটিকে বাস্তোনি তুলনা করেছেন এনবিএ ফাইনালের সপ্তম ম্যাচের সঙ্গে—যেখানে হারলে সব শেষ। তবে ঘরের মাঠে খেলাটা যে তাঁদের জন্য বড় একটা সুবিধা, সেটাও বললেন বাস্তোনি, ‘এটা ৫০-৫০ ম্যাচ। প্রথম লেগের মতোই হবে। তবে ঘরের মাঠে খেলব, সেটাই আমাদের বড় শক্তি। আমরা জানি আমাদের সমর্থকেরা কীভাবে দলকে উজ্জীবিত করে। আমরা স্বপ্ন দেখছি চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়ের, আর সেই স্বপ্ন পূরণের একেবারে কাছাকাছি চলে এসেছি।’

ইন্টার কোচ ইনজাগিও একমত বাস্তোনির সঙ্গে। ইয়ামালকে ঘিরেই যে তাদের রক্ষণকৌশল সাজানো হচ্ছে, সেটা বোঝা গেল ইনজাগির কথা শুনেও, ‘ওকে (ইয়ামাল) বল না দেওয়া গেলে ভালো, কিন্তু আধুনিক ফুটবলে সেটা প্রায় অসম্ভব। বল পেলে ওর সময় লাগে না—তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নেয়। বিপজ্জনক হয়ে ওঠে প্রতি মুহূর্তে। তাই ওকে ডাবল মার্ক করতেই হবে।’

এখন দেখার অপেক্ষা, এ রকম দুই-তিনজন মার্কারকে দিয়ে ইন্টার ইয়ামালকে আজ ঠেকাতে পারে কি না।