আধুনিক ফুটবলের দলবদল মানেই টাকার বস্তা নিয়ে খেলোয়াড় কিনতে নামা। প্রতি মৌসুমেই শীর্ষ দলগুলোর চোখ থাকে সেরা খেলোয়াড়দের দিকে। যেমন নির্দিষ্ট একটি ট্রান্সফার উইন্ডোতে সবচেয়ে বেশি খরচ করা দল চেলসি। শীর্ষ দশে আরও কারা আছে, একনজরে দেখে নেওয়া যাক।
খরচ: ৪৬ কোটি ৪০ লাখ ইউরো
দলবদলে চেলসি বরাবরই খরুচে দল হিসেবে পরিচিত। সেরা দশের মধ্যে তিনবারই এসেছে চেলসির নাম। তবে ২০২৩-২৪ মৌসুমে অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গিয়েছিল তারা। সেবার চেলসির খরচ ছিল ৪৬ কোটি ৪০ লাখ ইউরো, যা এখন পর্যন্ত দলবদলে সর্বোচ্চ। সেবার চেলসির কেনা সবচেয়ে দামি তারকা ছিলেন ময়জেস কাইসেদো। যাঁর জন্য ক্লাবটি খরচ করেছিল ১১ কোটি ৬০ লাখ ইউরো। একই দলবদলে রোমিও লাভিয়া (৬ কোটি ২১ লাখ), ক্রিস্টোফার এনকুনকু (৬ কোটি) এবং কোল পালমারের (৪ কোটি ৭০ লাখ ইউরো) মতো খেলোয়াড়কেও কিনেছিল তারা।
খরচ: ৩৫ কোটি ৩০ লাখ ইউরো
চেলসির পর দ্বিতীয় স্থানে আছে সৌদি আরবের ক্লাব আল হিলাল। যারা একই মৌসুমে খরচ করেছিল ৩৫ কোটি ৩০ লাখ ইউরো। এই ক্লাবটির বিশাল এই খরচের বড় অংশ গিয়েছিল নেইমারের পেছনে। ব্রাজিলিয়ান তারকাকে পিএসজি থেকে আনতে আল হিলালের খরচ হয়েছিল ৯ কোটি ইউরো। এ ছাড়া অন্যদের মধ্যে ম্যালকম (৬ কোটি ইউরো), রুবেন নেভেস (৫ কোটি ৫০ লাখ ইউরো) ও আলেকসান্দার মিত্রোভিচের জন্য (৫ কোটি ২৬ লাখ ইউরো) বড় অঙ্কের অর্থ খরচ করেছিল তারা।
খরচ: ৩৫ কোটি ইউরো
দলবদলের তৃতীয় সর্বোচ্চ খরচের দেখাও মিলেছিল ২০২৩-২৪ মৌসুমে। আর দলটি ছিল পিএসজি। সে সময় পরিবর্তনের ভেতর দিয়ে যাচ্ছিল ফরাসি ক্লাবটি। মেসি ও নেইমার ক্লাব ছেড়ে যান। ফলে দল পুনর্গঠনে বেশ খরচ করতে হয়েছিল পিএসজিকে। সেবার পিএসজির খরচ করা ৩৫ কোটি ইউরোর ৯ কোটি ৫০ লাখ ছিল রান্দাল কোলো মুয়ানির পেছনে। এ ছাড়া ৬ কোটি ৫০ লাখ ইউরো দিয়ে গনসালো রামোস, ৬ কোটি ইউরো দিয়ে ম্যানুয়াল উগার্তে এবং উসমান দেম্বেলেকে ৫ কোটি ইউরো দিয়ে কিনেছিল তারা।
খরচ: ৩৩ কোটি ১০ লাখ ইউরো
২০১৯-২০ মৌসুমে ইতিহাসের চতুর্থ সর্বোচ্চ দলবদলে রিয়াল মাদ্রিদ খরচ করেছিল ৩৩ কোটি ১০ লাখ ইউরো। যেখানে তারা নিজেদের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ফ্লপ দলবদলটিও সম্পন্ন করে। সেবার এডেন হ্যাজার্ডকে কেনার পেছনে রিয়ালের খরচ হয়েছিল ১২ কোটি ইউরোর বেশি। এই মৌসুমে রিয়ালের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অর্থ খরচ হয়েছিল লুকা ইয়োভিচের পেছনে। যাঁর জন্য ৬ কোটি ৩০ লাখ ইউরো খরচ করে রিয়াল। অন্যদের মধ্যে এদের মিলিতাও, ফেরলাঁ মেন্দি ও রদ্রিগোকেও সেবার দলে ভেড়ায় রিয়াল।
খরচ: ৩৩ কোটি ইউরো
খুব প্রয়োজন না হলে দলগুলো সাধারণত শীতকালীন দলবদলে খুব একটা খরচ করে না। কিন্তু চেলসি প্রচলিত সেই ধারণাও বদলে দিয়েছে। ২০২২-২৩ মৌসুমে জানুয়ারিতেই বিপুল পরিমাণ অর্থ খরচ করে দলটি। যেখানে বিশ্বকাপজয়ী এনজো ফার্নান্দেজের পেছনেই ক্লাবটির খরচ ছিল ১২ কোটি ১০ লাখ ইউরো।
খরচ: ৩০ কোটি ৮০ লাখ ইউরো
চলতি দলবদল এখনো শেষ হয়নি। কিন্তু লিভারপুল এরই মধ্যে ৩০ কোটি ৮০ লাখ ইউরো খরচ করেছে। যেখানে তারা সবচেয়ে বেশি খরচ করেছে বায়ার লেভারকুসেনের জার্মান তারকা ফ্লোরিয়ান ভির্টৎসের পেছনে। তাঁর জন্য ক্লাবটির খরচ ১২ কোটি ৫০ লাখ ইউরো। সর্বশেষ লিভারপুল দলে ভিড়িয়েছে আইনট্রাখট ফ্রাঙ্কফুর্টের ফ্রেঞ্চ স্ট্রাইকার হুগো একিতিকেকে। তাঁর পেছনে লিভারপুলের খরচ প্রায় ৯ কোটি ৫০ লাখ ইউরো।
খরচ: ৩০ কোটি ১০ লাখ ইউরো
২০২২-২৩ মৌসুমের গ্রীষ্মে চেলসির খরচ ছিল ৩০ কোটি ১০ লাখ ইউরো। যেখানে সবচেয়ে বেশি অর্থ তারা খরচ করেছিল ওয়েইসলি ফোফানার পেছনে। তাঁর জন্য ব্লুজদের খরচ ছিল ৮ কোটি ইউরো। ডিফেন্ডার মার্ক কুকুরেয়ার পেছনেও সেবার তারা ৬ কোটি ৫৩ লাখ ইউরো খরচ করেছিল।
খরচ: ২৭ কোটি ৯০ লাখ ইউরো
২০১৯-২০ মৌসুমের দলবদলে বার্সেলোনা খরচ করেছিল ২৯ কোটি ৯০ লাখ ইউরো। সেবারের দলবদলে ছোট-বড় একাধিক তারকা ফুটবলারকে দলে ভেড়ায় বার্সা। তবে সবচেয়ে আলোচিত দলবদল ছিল আঁতোয়ান গ্রিজমানের। যাঁর জন্য বার্সা খরচ করেছিল ১২ কোটি ইউরো। সেই একই দলবদলে বার্সা দলে টানে ফ্রেঙ্কি ডি ইয়ং (৮ কোটি ৬০ লাখ ইউরো) ও পেদ্রির (২ কোটি ৩০ লাখ ইউরো) মতো দুই তারকাকে।
খরচ: ২৬ কোটি ৫০ লাখ ইউরো
জুভেন্টাসের নিজেদের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি খরচ করেছিল ২০১৮-১৯ মৌসুমে। সেবার সবচেয়ে আলোচিত দলবদলের সঙ্গেও জড়িয়ে ছিল জুভেন্টাসের নাম। সেই দলবদলেই ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকে ১১ কোটি ৭০ লাখ ইউরোতে কিনে নিয়ে আলোচনার জন্ম দেয় জুভেন্টাস। রোনালদো ছাড়া জুভেন্টাসের অন্য দুই শীর্ষ রিক্রুট ছিলেন জোয়াও কানসেলো (৪ কোটি ইউরো) ও দগলাস কস্তা (৪ কোটি ইউরো)।
খরচ: ২৫ কোটি ৯০ লাখ ইউরো
এই শতাব্দীর প্রথম দশকে সবচেয়ে আলোচিত দলবদলটি ছিল ২০০৯-১০ মৌসুমের দলবদল। সেবার টাকার বস্তা নিয়ে খেলোয়াড় কিনতে নেমে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছিল রিয়াল মাদ্রিদ। যেখানে তারা ইতিহাস গড়ে ৯ কোটি ৪০ লাখ ইউরোতে কিনে নেয় ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকে। শুধু রোনালদোই নন, একই দলবদলে ব্যালন ডি’রজয়ী কাকাকেও ৬ কোটি ৭০ লাখ ইউরোতে দলে টানে রিয়াল। সেবার রিয়ালে আসা অন্য দুই তারকা ছিলেন করিম বেনজেমা (৩ কোটি ৫০ লাখ ইউরো) ও জাবি আলোনসো (৩ কোটি ৪৫ লাখ ইউরো)।