রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে পেনাল্টি নেওয়ার দায়িত্ব এখন কার?
ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো চলে যাওয়ার পর দায়িত্বটা ছিল করিম বেনজেমার। গত মৌসুম শেষে বেনজেমা চলে যাওয়ার পর প্রাক–মৌসুম পর্বে সেটি বর্তায় ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের কাঁধে। গতকাল সেল্তা ভিগোর বিপক্ষে রিয়াল যখন পেনাল্টি পায়, ভিনিসিয়ুস তখন চোট পেয়ে মাঠের বাইরে। কার্লো আনচেলত্তির চাওয়া ছিল শট নেবেন লুকা মদরিচ। কিন্তু পেনাল্টি আদায় করা রদ্রিগোই সেটি নিতে যান, আর তাঁর শট প্রতিহত হয় ঝাঁপিয়ে পড়া সেল্তা গোলরক্ষক ইভান ভিলারের হাতে।
ব্যাপারটা ভালো লাগেনি রিয়াল কোচের। তাৎক্ষণিকভাবেই মেজাজ হারিয়ে হাতে থাকা কী যেন মাটিতে ছুড়েও ফেলেন। ম্যাচ শেষে এ নিয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে প্রতিক্রিয়া আড়াল করেননি আনচেলত্তি। জানিয়েছেন, শট কে নেবে—সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার স্বাধীনতা খেলোয়াড়দের দেওয়া হয়নি। সেল্তার বিপক্ষে ম্যাচটা রিয়াল মাদ্রিদ ‘কোয়ালিটি’র কারণে নয়, ‘নিবেদনে’র কারণেই জিতেছে বলে মনে করেন রিয়াল মাদ্রিদ কোচ।
গোলশূন্য প্রথমার্ধের পর রিয়াল মাদ্রিদ যখন পেনাল্টি পায়, ম্যাচে তখন ৬৫তম মিনিট চলছে। এর মিনিট চারেক আগে বদলি হিসেবে নামেন মদরিচ। ওই সময়ের কথা উল্লেখ করে আনচেলত্তি বলেন, ‘শট কে নেবে, সেই স্বাধীনতা দেওয়া হয়নি। আমি জানি না কী ঘটেছে। ওটা নেওয়ার কথা ছিল লুকার। ভিনিও নিতে পারত, কিন্তু সে তখন ছিল না। ওরা সিদ্ধান্ত নিল রদ্রিগো নেবে। শটটা মদরিচ নিক, সেটা বলার মতো সময় আমি পাইনি।’
রদ্রিগো পেনাল্টিতে গোল করতে ব্যর্থ হওয়ার স্পষ্টতই ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন আনচেলত্তি। সংবাদ সম্মেলনে এ নিয়ে রাখঢাকও রাখেননি ইতালিয়ান কোচ, ‘আমি কি ক্ষুব্ধ? হ্যাঁ, কিছুটা তো বটেই। ওই সময় যোগাযোগ করাটা কঠিন ছিল। আমি ফেদেকে (ভালভের্দে) বলেছিলাম লুকা নিক। কিন্তু তখন আর সময় ছিল না। সামনে এ নিয়ে কথা বলতে হবে।’
রিয়াল মাদ্রিদকে অবশ্য পেনাল্টি–ব্যর্থতা নিয়েও নিজেদের মধ্যে আলোচনা করতে হবে। এ নিয়ে রিয়ালের নেওয়া সর্বশেষ ১৭ পেনাল্টির ৫টিই প্রতিপক্ষ আটকে দিয়েছে। অথচ এর আগের ৫টি সেভ হয়েছিল ৭৭ পেনাল্টিতে।
রদ্রিগোর আগে প্রাক–মৌসুম পর্বে বার্সেলোনার বিপক্ষে পেনাল্টি মিস করেছিলেন ভিনিসিয়ুসও। ২৩ বছর বয়সী এই ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড সেল্তার বিপক্ষে ম্যাচের ১৮তম মিনিটেই চোট পেয়ে মাঠ ছেড়ে যান। চোট গুরুতর মনে না হলেও রিয়ালের পরের ম্যাচে তাঁকে খেলানো হবে না বলে জানিয়েছেন আনচেলত্তি।
রিয়ালের পরের ম্যাচ আগামী শনিবার হেতাফের বিপক্ষে। এর আগের দিনই লা লিগার দলবদল বাজার বন্ধ হয়ে যাবে। তার আগে রিয়াল আক্রমণভাগে কোনো খেলোয়াড় যুক্ত করবে কি না, এমন প্রশ্নও করা হয় আনচেলত্তিকে। এই কয়েক দিনে কাউকে আনার সম্ভাবনা বিষয়ে রিয়াল কোচের জবাব ছিল এ রকম, ‘আক্রমণে আমাদের কাউকে দরকার নাই। করিম না থাকার পরও আমাদের ছয় গোল হয়ে গেছে। ভিনিকে ছাড়াও। আক্রমণে আমাদের রসদ আছে। আমি ব্রাহিমকে আনার কথা ভেবেছিলাম। তবে কোনো চমকও দিতে চাইনি। এই স্কোয়াড পূর্ণাঙ্গ স্কোয়াড। কোর্তোয়া, মিলিতাও, করিম, ভিনিকে ছাড়াই আমরা জিতেছি। দল হিসেবে এটা ভালোই।’
সেল্তার বিপক্ষে ১–০ ব্যবধানের জয়টি রিয়াল মাদ্রিদের এবারের মৌসুমের তৃতীয়। টানা তিন ম্যাচে জয় তুলে ৯ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে আনচেলত্তির দল।