সাক্ষাৎকারে জামাল ভূঁইয়া

‘সুযোগ পেলে আবারও আর্জেন্টিনায় যাব’

বাংলাদেশ দলের জার্সিতে খেলছেন ১৩ বছর ধরে। খেলে ফেলেছেন দেশের হয়ে সর্বোচ্চ ৮২টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ। জাতীয় ফুটবল দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করছেন ২০১৮ সাল থেকে। সম্প্রতি নাইর ইকবালকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি কথা বলেছেন বাংলাদেশের ফুটবল এবং আরও অনেক কিছু নিয়েই—

প্রথম আলো:

দেশের হয়ে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ ৮২টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন। দেশের জার্সিতে ১৩ বছরের এই যাত্রাকে কীভাবে দেখেন?

জামাল ভূঁইয়া: এটা আমার জন্য বিরাট ব্যাপার। আমি দেশের হয়ে খেলতে পেরেছি। ১৩ বছর আগে যখন নেপালের বিপক্ষে প্রথম খেলি, তখন জানতাম না আমি কত দূর যেতে পারব। কিন্তু আল্লাহর রহমতে ৮২টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে পেরেছি। জাতীয় দলের অধিনায়ক হয়েছি। পৃথিবীর যে প্রান্তেই থাকি না কেন, যেখান থেকেই আসি না কেন, বাংলাদেশের জার্সিতে খেলেই আমার সব পরিচিতি।

প্রথম আলো:

দেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেললেও ক্লাব ফুটবলে আপনার উপস্থিতি ততটা উজ্জ্বল নয় কেন?

জামাল: আমি কখনোই এভাবে দেখিনি। আমি সাইফ স্পোর্টিংয়ের হয়ে খেলেছি, শেখ রাসেল ক্রীড়াচক্রের হয়ে খেলেছি। যে ক্লাবের হয়েই খেলেছি, খেলেছি আমার নিজের ইচ্ছায়। আমি কখনোই এমন কিছু ভাবিনি যে নির্দিষ্ট অমুক ক্লাবে আমাকে খেলতে হবে। হ্যাঁ, বসুন্ধরা কিংসের হয়ে হয়তো খেলিনি। ঢাকা মোহামেডানের হয়ে খেলিনি। তবে ঢাকা আবাহনীতে এবার খেললাম। ভারতের আই লিগে কলকাতা মোহামেডানের হয়ে খেলেছি।

দেশের হয়ে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ ৮২টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন জামাল
শামসুল হক
প্রথম আলো:

গত মৌসুমে আর্জেন্টিনার তৃতীয় বিভাগের দল সোল দো ময়োতে খেলতে গেলেন। অভিজ্ঞতা ভালো হয়নি বলেই জানি। আর্জেন্টিনায় যাওয়াটা কি ভুল ছিল?

জামাল: সার্বিকভাবে আর্জেন্টিনার অভিজ্ঞতা খারাপ নয়। সুযোগ পেলে আবারও আর্জেন্টিনায় যাব। হ্যাঁ, সেখানে কিছু সমস্যা হয়েছে, তবে অভিজ্ঞতাও তো অর্জন করেছি, এটাই–বা কম কী! দক্ষিণ এশিয়ার কয়জন ফুটবলার বলতে পারবে যে সে লাতিন আমেরিকা বা ইউরোপে খেলেছে।

আরও পড়ুন
প্রথম আলো:

আর্জেন্টিনা থেকে ফিরে ঢাকা আবাহনীতে যোগ দিলেন প্রিমিয়ার লিগের দ্বিতীয় পর্বে। কিন্তু সেখানেও নিয়মিত খেলা হলো না। কারণটা কী?

জামাল: কোচ ডিয়েগো ক্রুসিয়ানি আমাকে খেলাতে চাইতেন। কিন্তু অন্য কিছু কারণে তিনি আমাকে খেলাতে পারেননি। এর বেশি কিছু বলতে চাই না।

পরের মৌসুমে কোথায় খেলবেন জামাল
প্রথম আলো
প্রথম আলো:

পরের মৌসুমেও আবাহনীতে থাকবেন? বাজারে খবর, আপনি শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবে যোগ দিতে পারেন। মোহামেডানেও নাকি কথা হচ্ছে...

জামাল: মাত্র তো মৌসুম শেষ হলো। এসব নিয়ে কথা বলার সময় এখনো আসেনি। দেখা যাক কী হয়।

প্রথম আলো:

ইদানীং জাতীয় দলের ম্যাচগুলোয় পুরো ৯০ মিনিট খেলছেন না। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে কোচ আপনাকে নামালেন অনেক পরে। বয়স কি একটু জানান দিতে শুরু করেছে?

জামাল: আমার দিক দিয়ে কোনো সমস্যা নেই। ক্লান্তির প্রশ্নই ওঠে না। বয়স বা ফিটনেসও সমস্যা নয়। কোচের হয়তো কোনো পরিকল্পনা থাকে আমাকে নিয়ে। আমি দেশের হয়ে নিজের সর্বোচ্চটা দিয়েই খেলার জন্য প্রস্তুত থাকি।

আরও পড়ুন
প্রথম আলো:

বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে ৬ ম্যাচ থেকে বাংলাদেশের অর্জন মাত্র ১ পয়েন্ট। দেশের বাইরের ম্যাচগুলোয় দল মোটেও ভালো খেলেনি। দলের এই পারফরম্যান্স কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?

জামাল: আমরা লড়াই করেছি, এতটুকু বলতে পারি। কিছু ভুলের কারণে কাঙ্ক্ষিত ফল পাইনি। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে মেলবোর্নে বড় ব্যবধানে হারলেও ঢাকায় ব্যবধান অনেক কমানো গেছে। ফিলিস্তিনের বিপক্ষে কুয়েতে মোটেও ভালো খেলিনি। তবে ঢাকায় জয় না হলেও ড্র করতে পারতাম। দুর্ভাগ্য, শেষ মুহূর্তের গোলে হেরেছি। লেবাননের বিপক্ষে ঢাকায় ড্র করা ম্যাচটিই এবার আমাদের সেরা ম্যাচ। তবে দোহায় লেবাননের বিপক্ষে ফিরতি ম্যাচটা আসলেই বাজে খেলেছি আমরা।

লেস্টার সিটির ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার হামজা চৌধুরী
ইনস্টাগ্রাম
প্রথম আলো:

ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে লেস্টার সিটির ব্রিটিশ-বাংলাদেশি ফুটবলার হামজা চৌধুরীকে জাতীয় দলে খেলানোর তোড়জোড় চালাচ্ছে বাফুফে। এ নিয়ে আপনার মন্তব্য কী?

জামাল: হামজা চৌধুরী দুর্দান্ত ফুটবলার। সে এলে বাংলাদেশ দল উপকৃত হবে। শক্তি বহুগুণ বেড়ে যাবে। যত দূর জানি, হামজাকে আনতে কাজ করে যাচ্ছে ফুটবল ফেডারেশন। হয়তো শিগগিরই পাব তাকে। শুধু হামজাই নয়, পৃথিবীর যেকোনো প্রান্ত থেকে প্রতিভাবান প্রবাসী বা অন্য কোনো দেশের ভালো ফুটবলারকে যদি বাংলাদেশের জার্সিতে খেলিয়ে উপকার পাওয়া যায়, সেটা করা উচিত।

প্রথম আলো:

ভারতের সুনীল ছেত্রী অবসর নিলেন। তাঁকে নিয়ে আবেগঘন পোস্ট দিয়েছেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে...

জামাল: সুনীল ছেত্রী কিংবদন্তি। আন্তর্জাতিক ফুটবলে দেশের হয়ে গোল করার ক্ষেত্রে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো ও লিওনেল মেসির পরই তার অবস্থান। ভারতের মতো একটা দেশের হয়ে খেলে এই অর্জন অন্য মাত্রার। তার সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত সম্পর্ক দারুণ। যখনই দেখা হয়েছে, আন্তরিকভাবে আমাকে বরণ করে নিয়েছে সে।

আরও পড়ুন