রুদ্ধশ্বাস জয়ে শিরোপা লড়াইটা ‘এল ক্লাসিকো’ পর্যন্ত নিয়ে গেল রিয়াল
প্রায় সব হারানো রিয়াল মাদ্রিদের ভরসা এখন লা লিগার শিরোপা। যেখানে প্রতিটি ম্যাচ এখন রিয়ালের জন্য বাঁচা-মরার। একটি হার কিংবা ড্র রিয়ালের স্বপ্নকে মিশিয়ে দিতে পারে ধুলোয়। যার ফলে মৌসুমও তাদের শেষ করতে হতে পারে শূন্য হাতে। তেমনই এক পরিস্থিতিতে আজ সেল্তা ভিগোর মুখোমুখি হয়ে রুদ্ধশ্বাস জয় পেয়েছে রিয়াল।
অথচ ম্যাচটা রিয়ালের সহজেই জেতার কথা ছিল। কিলিয়ান এমবাপ্পে ও আরদা গুলেরের নৈপুণ্যে ৪৮ মিনিটেই রিয়াল এগিয়ে যায় ৩-০ গোলে। এমবাপ্পে করেছেন জোড়া গোল আর গুলের একটি গোলের পাশাপাশি করেছেন একটি অ্যাসিস্টও। কিন্তু তিন গোলের সেই লিডও এক সময় যথেষ্ট মনে হচ্ছিল না।
দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে ৭৬ মিনিটে ব্যবধান ৩-২ করে সেল্তা। গোল করেন জাভি রদ্রিগেজ ও উইল্ট সুইডবার্গ। ব্যবধান কমিয়ে রিয়ালের ওপর আক্রমণের ঝড়ও তোলে অতিথিরা। সমতা ফেরানোর একাধিক সুযোগও তৈরি করে তারা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সমতাসূচক গোলটি আর পায়নি।
শ্বাসরুদ্ধকর এই জয়ের ফলে বার্সেলোনার সঙ্গে পয়েন্টের ব্যবধানটা ৭ থেকে ৪-এ নামিয়ে আনল রিয়াল। ৩৪ ম্যাচে বার্সার পয়েন্ট ৭৯ আর সমান ম্যাচে রিয়ালের পয়েন্ট ৭৫। এখন লা লিগায় নিজেদের পরের ম্যাচে একের অপরের মুখোমুখি হবে রিয়াল-বার্সা। মূলত সেই ম্যাচটিতেই হতে পারে লা লিগার শিরোপা নির্ধারণ। ম্যাচটিতে জিতলে আশা বাঁচিয়ে রাখতে পারবে রিয়াল আর হারলে ট্রফি উঁচিয়ে ধরে রাখার সম্ভাবনা একরকম শেষ হয়ে যাবে বললেই চলে।
ঘরের মাঠ সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে শুরুতে খানিকটা চাপেই পড়েছিল রিয়াল। সেল্তা আক্রমণে একাধিকবার কেঁপে উঠে রিয়ালের রক্ষণ। থিবো কোর্তোয়ার কারণে অবশ্য বড় কোনো বিপদে পড়তে হয়নি রিয়ালকে। শুরুর চাপ সামলে রিয়াল অবশ্য চেষ্টা করে সুযোগ তৈরির। কয়েকবার কাছাকাছি গিয়েও ব্যর্থ হলেও ৩৩ মিনিটে ভুল করেননি আর্দা গুলের।
বুলেট গতির দুর্দান্ত এক শটে এগিয়ে দেন রিয়ালকে। গোল খাওয়ার ধাক্কা সামলানোর আগেই সেল্তার জালে দ্বিতীয়বার জাল জড়ায় রিয়াল। এবার গোল করেন এমবাপ্পে। আক্রমণের শুরুটা অবশ্য হয়েছিল কোর্তোয়ার দুর্দান্ত এক সেভ থেকে। এরপরই মূলত পাল্টা আক্রমণে যায় রিয়াল। আর সেই আক্রমণকে দুর্দান্ত শটে গোল করে পরিণতি দেন এমবাপ্পে। দুই গোলের লিড নিয়েই বিরতিতে যায় রিয়াল।
বিরতির পরও দাপট ধরে রাখে রিয়াল। ম্যাচের ৪৮ মিনিটে গুলেরের দারুণ পাস ধরে রিয়ালকে ৩-০ ব্যবধানে এগিয়ে দেন এমবাপ্পে। তিন গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর রিয়ালের জয় অনেকটাই নিশ্চিত মনে হচ্ছিল। কিন্তু আকস্মিকভাবেই যেন বদলে যায় দৃশ্যপট। ৬৯ ও ৭৬ মিনিটে গোল করে লড়াইয়ে ফেরার বার্তা দেয় সেল্তা।
ব্যবধান ৩-২ করে সেল্তা যেন আরও আগ্রাসী হয়ে উঠে। একের পর এক আক্রমণে কাঁপিয়ে দেয় রিয়ালকে। কোর্তোয়া বাধা হয়ে না দাঁড়ালে সমতাসূচক গোলটি পেয়েও যেতে পারত তারা। যদিও শেষ পর্যন্ত তেমন কিছু হয়নি। রুদ্ধশ্বাস ম্যাচটা জিতেই মাঠ ছেড়েছে তারা।