যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজাই প্রেরণা ফিলিস্তিনের ফুটবলারদের

অনুশীলনে ফিলিস্তিন ফুটবল দলতানভীর আহাম্মেদ

১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য ফুটবলকে ‘অস্ত্র’ বানিয়ে যুদ্ধ করেন একঝাঁক ফুটবলার। সে সময় স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল ভারতে ঘুরে ঘুরে প্রীতি ম্যাচ খেলেছিল। তা থেকে প্রাপ্ত অর্থ দেওয়া হয়েছিল মুক্তিযুদ্ধ তহবিলে। ফিলিস্তিনের ফুটবলাররা ঠিক সে রকম আন্তর্জাতিক ম্যাচ হয়তো খেলছেন না। তবে তাঁরা বিশ্ব সম্প্রদায়ের মনোযোগ কেড়েছেন। ফিলিস্তিন ফুটবল দলের ম্যাচে ‘মুক্ত ফিলিস্তিনের’ দাবিতে ব্যানার-প্ল্যাকার্ড দেখা যায়। ফুটবলাররা বিভিন্নভাবে আবেদন জানান তাঁদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য।

আগামীকাল ঢাকার বসুন্ধরা কিংস অ্যারোনায় বেলা সাড়ে তিনটায় বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে ফিরতি লেগে বাংলাদেশের বিপক্ষে মাঠে নামছে ফিলিস্তিন। এই ম্যাচের আগেও ফিলিস্তিনের ফুটবলারদের বুকে রক্তক্ষরণ চলছে। ইসরায়েলের হামলা থেকে বাঁচতে ফিলিস্তিনের ফুটবলাররা কী বার্তা দেবেন তাঁদের দেশবাসীকে?

আরও পড়ুন

ঠিক এই প্রশ্নটি করা হয়েছিল আজ বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় ফিলিস্তিন দলের সংবাদ সম্মেলনে। দলটির তিউনিসিয়ান কোচ মাকরাম দাবোবের পাশে বসে উত্তরটা দেন দলের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় মোহামেদ রাশিদ, ‘আমাদের বার্তাটা পরিষ্কার। আমরা মুক্ত জীবন চাই। পেছনের দিকে ঠেলে দেওয়ার মতো কিছু চাই না। আমরা বিশ্বকে দেখাতে চাই যে ফিলিস্তিন ফুটবল দল এগিয়েছে এবং ফুটবল দল জিতলে সেটা আনন্দের উপলক্ষ হয় দেশবাসীর জন্য। কখনোই আমরা হাল ছাড়ি না। আমরা এগিয়ে যেতে চাই।’

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় বহু হতাহত হয়েছে। সেখানে যুদ্ধ চলছে নিরন্তর। দেশবাসীকে চূড়ান্ত ঝুঁকির মধ্যে রেখে ফুটবল খেলা কতটা কঠিন—তা বোঝাতে কোচ মাকরাম বলেন, ‘অবশ্যই এটা আমাদের জন্য কঠিন। বিশেষ করে যেসব খেলোয়াড়ের পরিবার-পরিজন গাজায় আছে, তাদের জন্য। অনেকের পরিবার বাড়ি হারিয়েছে, আত্মীয়স্বজন হারিয়েছে। এই অবস্থায় খেলাটা সহজ ব্যাপার নয়। তবে সেটাকেই আমরা প্রেরণা বানিয়ে খেলি।’

যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজাই ফিলিস্তিনের প্রেরণা
প্রথম আলো

বাংলাদেশের ক্রীড়াভিত্তিক টিভি চ্যানেল টি স্পোর্টস বাংলাদেশ-ফিলিস্তিন প্রথম ম্যাচ সম্প্রচার করছে। আগামীকালের ম্যাচও সরাসরি সম্প্রচার করবে টিভি চ্যানেলটি। ম্যাচ দুটি দেখা যাচ্ছে অ্যাপের মাধ্যমেও। তা থেকে পাওয়া সব টাকাই ফিলিস্তিনিদের জন্য দেওয়া হবে। এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন ফিলিস্তিন কোচ, ‘এটা দারুণ ব্যাপার। টি-স্পোর্টসকে ধন্যবাদ। ফিলিস্তিনি জনগণের জন্য এটা দারুণ সহায়তা। আমরা এটাকে স্বাগত জানাই।’

ফুটবল মাঠে ফিলিস্তিনকে বরাবরই সমর্থন করে এসেছে বাংলাদেশ। এই গত ২১ নভেম্বর বিশ্বকাপ বাছাইয়ে কিংস অ্যারেনায় বাংলাদেশ-লেবানন ম্যাচে দেখা গেছে, বাংলাদেশের এক যুবক ফিলিস্তিনের পতাকা নিয়ে মাঠে ঢুকে যান। ফিলিস্তিনকে বাঁচানোর দাবি জানিয়ে ব্যানারও নিয়ে আসেন কেউ কেউ। এতেই বোঝা যায়, বাংলাদেশিদের মনে আছে ফিলিস্তিন।

আরও পড়ুন

এসব প্রসঙ্গ টেনে ফিলিস্তিন কোচ বললেন, ‘বাংলাদেশের জনগণকে অনেক অনেক ধন্যবাদ, তাঁরা আমাদের সমর্থন করেন। আমি জানি, বাংলাদেশ-লেবানন ম্যাচে ফিলিস্তিনের পতাকা নিয়ে বাংলাদেশি সমর্থকেরা মাঠে এসেছিলেন। আমরা এর আগে বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধু কাপে খেলেছি, তখনো দেখেছি। আর এতে আমরা অনেক খুশি।’