মার্সেলো বললেন, ‘আমার ভুঁড়ি ছিল, জিমে যাইনি, ডায়েটও করিনি’
আধুনিক ফুটবলে এখন কেবল পায়ের জাদু থাকলেই চলে না; সঙ্গে লাগে নিখুঁত ফিটনেস, মেদহীন শরীর আর মেপে মেপে খাওয়াদাওয়া। মনে করা হয়, প্রতিভার সঙ্গে ফিটনেসের মিলন ঘটলেই তবেই একজন ফুটবলার সেরা হতে পারবেন।
কিন্তু এই নিয়মের বেড়াজালে সবাই কি আর আটকা পড়েন? কেউ কেউ থাকেন একদম আলাদা, খ্যাপাটে আর সহজাত প্রতিভার অধিকারী। ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি মার্সেলো ঠিক তেমনই একজন।
রিয়াল মাদ্রিদের এই ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি প্রায় ১৯ বছর মাঠ দাপিয়ে বেড়িয়েছেন ফিটনেস বা খাদ্যাভ্যাসের তোয়াক্কা না করেই। রিয়াল যখনই খারাপ সময় পার করত, সমালোচকেরা আঙুল তুলতেন মার্সেলোর দিকে।
বলতেন, ‘ওর ওজন বেড়েছে, ভুঁড়ি হয়েছে!’ মার্সেলো অবশ্য এসব কথা কানেই তুলতেন না। সর্বকালের অন্যতম সেরা এই লেফটব্যাক নিজেই স্বীকার করেছেন, অ্যাথলেটদের মতো নিজের শরীরের যত্ন নেওয়ার বালাই তাঁর কোনোকালেই ছিল না।
সম্প্রতি স্প্যানিশ গোলরক্ষক ইকার ক্যাসিয়াসের পডকাস্ট ‘আন্ডার দ্য গোলপোস্টস’-এ এসে মনের আগল খুলে হাসতে হাসতে মার্সেলো শুনিয়েছেন মজার সব গল্প। নিজের পেটানো শরীর না থাকার কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘সেদিন বাসায় বাচ্চাদের আমার কিছু পুরোনো ভিডিও দেখাচ্ছিলাম। লিয়াম তো সরাসরি জিজ্ঞেসই করে বসল—বাবা, তুমি কি তখন মোটা ছিলে? আমি বললাম, হ্যাঁ, অবশ্যই! আমার শরীরের গঠন সব সময়ই এমন ছিল। একটু ভুঁড়ি ছিল, ক্রিস্টিয়ানোর (রোনালদো) মতো সিক্স-প্যাক আমার কখনোই ছিল না।’
আসলে কঠোর নিয়মকানুন মার্সেলোর ধাতে নেই। পডকাস্টে অকপটে স্বীকার করেছেন, ‘আমি আসলে কখনোই প্রথাগত অ্যাথলেট ছিলাম না। আমি জীবনটা মনভরে উপভোগ করতে ভালোবাসি। অনুশীলন ঠিকই করতাম, কিন্তু নিয়ম করে জিমে যাওয়া বা ডায়েট মেপে খাওয়া—এসব আমার দ্বারা হতো না। ক্যারিয়ারের শেষের দিকে এসে নিজের কিছুটা যত্ন নিয়েছি ঠিকই, কিন্তু খেলার ধরনে পরিবর্তন আনিনি। তবে রিয়াল হারলেই সবাই আমার ওজন নিয়ে কথা তুলত। এটা অবশ্য আমি মেনে নিয়েছিলাম।’
সমালোচকেরা ডায়েট কিংবা ভুঁড়ি নিয়ে যতই কথা বলুন না কেন, মার্সেলোর ফুটবল–প্রতিভা আর সাফল্যের গ্রাফে তা কখনো বাধা হতে পারেনি। রিয়ালের হয়ে ছয়টি লা লিগা আর পাঁচটি চ্যাম্পিয়নস লিগসহ মোট ২৮টি ট্রফি সে কথাই যেন বলছে।