আত্মঘাতী গোলে প্রমোশনের সুযোগ, এরপর যা ঘটল
সহজ ভাষায় ফুটবল বলতে বোঝায় প্রতিপক্ষের জালে গোল দেওয়া আর নিজেরা গোল না খাওয়া। তবে কখনো কখনো খেলোয়াড়েরা ভুলে নিজেদের জালেই বল পাঠিয়ে দেন, ফুটবলে যা আত্মঘাতী গোল হিসেবে পরিচিত। আত্মঘাতী গোল একটি দলকে ম্যাচ হারিয়ে দিতে তো পারেই, ফাইনালে এমন কিছু ঘটলে ট্রফিও হাতছাড়া হয়ে যাওয়ার শঙ্কা থাকে।
তবে আত্মঘাতী গোল সব সময় খারাপ নয়, কখনো কখনো উপকারীও হতে পারে—আর এমন অদ্ভুতুড়ে এক পরিস্থিতির মুখে পড়েছিল জার্মান ক্লাব তুর্কস্পোর ন্যুর্নবার্গ। একটি আত্মঘাতী গোল করলেই দলটি লিগে প্রমোটেড হতো। কিন্তু দলটি সেটি করেনি। এরপর যা হয়েছে, তা দলটির জন্য বেদনাদায়ক।
এটি ছিল জার্মানি মিডল ফ্রাঙ্কোনিয়ার ডিস্ট্রিক ফুটবল লিগের ম্যাচ। ওপরের ধাপের লিগে জায়গা করতে দুটি টিকিটের লড়াইয়ে ছিল তিনটি ক্লাব তুর্কস্পোর ন্যুর্নবার্গ, এসভি টেনেনলো এবং গোগেলসবাখ। এর মধ্যে টেনেনলো প্রথম দুই ম্যাচ জিতে পরের ধাপে জায়গা করে নেয়। বাকি জায়গাটির লড়াইয়ে ছিল ন্যুর্নবার্গ ও গোগেলসবাখ। ১৩ জুনের ম্যাচে লিগ প্রমোশনের জন্য গোগেলসবাখকে ২ গোল ব্যবধানে জিততে হতো। বিপরীতে এর কম ব্যবধানে হারলেই প্রমোশন নিশ্চিত ছিল ন্যুর্নবার্গের।
ম্যাচে ৯০ মিনিট শেষে দুই দলের স্কোরলাইন ছিল ১–১। অর্থাৎ গোগেলবাখ জিততে পারেনি। তবে লিগের অদ্ভুত এক নিয়মের কারণে ম্যাচটি সেখানে শেষ হয়নি। নিয়মটি হচ্ছে প্রমোশন ম্যাচ ড্র হওয়া চলবে না, অবশ্যই ফল হতে হবে। ফলের জন্য ৯০ মিনিট পর খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে।
ন্যুর্নবার্গের জন্য এই নিয়মটি হয়ে পড়ে গলার ফাঁস। কারণ, ম্যাচের শেষ দিকে একটি আত্মঘাতী গোল করলেই ব্যবধান হয়ে যেত গোগেলসবাখ ২, ন্যুর্নবার্গ ১। ম্যাচ হারলেও গোল ব্যবধান এক হওয়ায় লিগ প্রমোশন হতো ন্যুর্নবার্গের। কিন্তু দলটি সে পথে হাঁটেনি। পরে অতিরিক্ত সময়ের খেলায় গোগেলসবাখ আরও দুই গোল করে ৩–১ ব্যবধানে এগিয়ে যায়। এ পর্যায়েও আবার আত্মঘাতী গোল হজম করে ব্যবধান কমিয়ে লিগ প্রমোশনের সুযোগ ছিল ন্যুর্নবার্গের সামনে। কিন্তু এবারও দলটি সুযোগ নেয়নি। অতিরিক্ত সময়ের জোড়া গোলে ম্যাচ জিতে প্রমোটেড হয় গোগেলসবাখ।
একটি আত্মঘাতী গোলই যেখানে প্রমোশন এনে দিত, সেখানে এমন সুযোগ কেন নেয়নি ন্যুর্নবাগ? ফাসবলএন–কে ন্যুর্নবার্গ অধিনায়ক আমিরহান কারাসলান বলেন, ‘দলের প্রমোশন নিশ্চিত করতে আত্মঘাতী গোল করাটা খেলোয়াড় হিসেবে আমরা করতে পারি না।’ পরে ক্লাবটির ফেসবুক পেজে এক বিবৃতিতে লেখা হয়, ‘আমরা ন্যায্যতা, সম্মান ও খেলার সততার পক্ষে। কারণ, আমরা বিশ্বাস করি, ফুটবলের ভাগ্য নির্ধারিত হওয়া উচিত মাঠের খেলায়, কোনো অযৌক্তিক হিসাব–নিকাশ বা কৌশলগতভাবে বাধ্য হয়ে আত্মঘাতী গোল করার মাধ্যমে নয়।’