সবচেয়ে বেশি গোল করে ইউনাইটেডের বিদায় আরও যাদের মনে করাচ্ছে
চ্যাম্পিয়নস লিগে ‘এ’ গ্রুপের তলানিতে থেকে বিদায় নিয়েছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। তবে চার দলের মধ্যে চতুর্থ হয়ে বিদায় নেওয়া দলটিই আবার নিজেদের গ্রুপে যৌথভাবে সর্বোচ্চ গোল করেছে। গ্রুপে বায়ার্ন মিউনিখ ও ইউনাইটেড—দুই দলই গোল করেছে ১২টি করে। এরপর গালাতাসারাই করেছে ১০ গোল এবং কোপেনহেগেনের গোল ৮টি।
এতগুলো গোল করেও অবশ্য শেষ রক্ষা হয়নি ইউনাইটেডের। এমনকি তাদের করা ১২ গোল দলটিকে ইউরোপা লিগেও নিতে পারেনি। এর পেছনে বড় কারণ হচ্ছে, ইউনাইটেড যত উদারভাবে গোল করেছে, তার চেয়ে বেশি উদারভাবে গোল হজমও করেছে। প্রতিপক্ষ দলগুলো ইউনাইটেডের জালে বল জড়িয়েছে ১৫ বার। অবশ্য চ্যাম্পিয়নস লিগ বা ফুটবল ইতিহাসে এমন ঘটনা এবারই প্রথম নয়। অতীতেও একাধিকবার এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে।
চ্যাম্পিয়নস লিগে এর আগে মোনাকো (২০০০-০১) এবং রোমার (২০০২-০৩) সঙ্গেও ঘটেছিল দুটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। সেবার গ্রুপ ‘ডি’ থেকে শীর্ষে থেকে শেষ ষোলোয় গিয়েছিল অস্ট্রিয়ান ক্লাব স্টার্ম গ্রাজ। অথচ সেই দল মোনাকো ও রেঞ্জার্সের কাছে হেরেছিল ৫-০ গোলের ব্যবধানে। দুই ম্যাচে বড় হারের পরও সবাইকে চমকে দিয়ে শীর্ষে থেকে পরের পর্বে গিয়েছিল দলটি। আর গ্রুপে সবচেয়ে বেশি ১৩ গোল করে তলানিতে ছিল মোনাকো। প্রতিযোগিতার ইতিহাসে এখন পর্যন্ত আর কোনো দল এত বেশি গোল নিয়ে তলানিতে থাকেনি। সেবার ৬ ম্যাচের ২টি জিতলেও ফরাসি ক্লাবটি হেরেছিল ৩ ম্যাচে এবং অন্য ম্যাচে ড্র করেছিল মোনাকো।
২০০২-০৩ মৌসুমে রোমার ঘটনা আবার উল্টো। প্রথম গ্রুপ পর্বে ৬ ম্যাচে মাত্র ৩ গোল করে পরের পর্বে গিয়েছিল তারা। এই গ্রুপে শীর্ষে থাকা রিয়াল মাদ্রিদ গোল করেছিল ১৫টি। দ্বিতীয় হওয়া রোমার গোল ছিল ৩। এমনকি তিনে থাকা একে এথেন্সও গোল করেছিল ৭টি। দ্বিতীয় গ্রুপ পর্বে অবশ্য উল্টো অভিজ্ঞতা হয় রোমার। যেখানে সর্বোচ্চ ৭ গোল করেও তলানিতে জায়গা হয় তাদের।
একই ধরনের ঘটনা দেখা গেছে বিশ্বকাপেও। গত বছরের কাতার বিশ্বকাপে গ্রুপ ‘জি’তে সর্বোচ্চ গোল করেছিল সার্বিয়া। ৩ ম্যাচে তারা করেছিল ৫ গোল। কিন্তু উল্টো ৮ গোল হজম করে বসায় তাদের অবস্থান হয় তলানিতে। এই গ্রুপে সবচেয়ে কম ৩ গোল করেও শীর্ষে থেকে পরের পর্বে যায় ব্রাজিল। গ্রুপ পর্বে ব্রাজিল গোল করে মাত্র ৩টি। বিপরীতে অবশ্য মাত্র ১ গোল হজম করেন নেইমাররা। এর আগে ১৯৯০ বিশ্বকাপে সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং ২০১০ বিশ্বকাপে ইতালিও যৌথভাবে সবচেয়ে বেশি গোল করে তলানিতে থেকে গ্রুপ পর্ব শেষ করে।
একই ঘটনা ১৯৭৯ সালের কোপা আমেরিকায় ঘটেছিল আর্জেন্টিনার সঙ্গে। চার ম্যাচে ৭ গোল করে যৌথভাবে শীর্ষে থেকে শেষ পর্যন্ত তলানিতে ঠাঁই হয় ডিয়েগো ম্যারাডানোর দলের। ২০০৪ সালের আফ্রিকা কাপ নেশনসে জিম্বাবুয়েকেও বরণ করতে হয় একই পরিণতি।
তবে সবচেয়ে অদ্ভুত ঘটনাটি সম্ভবত ম্যানচেস্টার সিটির সঙ্গে। ১৯৩৭-৩৮ মৌসুমে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন হিসেবে ডিভিশন ওয়ানে (শীর্ষ লিগে) খেলতে আসা দলটি সেবার ৪২ ম্যাচে গোল করেছিল ৮০টি। কিন্তু এরপরও ২২ দলের লিগে ২১ নম্বরে থেকে অবনমনের শিকার হয়েছিল দলটি। আর একই মৌসুমে চতুর্থ সর্বোচ্চ গোল করা ওয়েস্ট ব্রোমের অবস্থান হয়েছিল সবার নিচে। ৭৪ গোল দেওয়ার বিপরীতে অবশ্য ৯১ গোল হজম করেছিল তারা।