কোপা দেল রে ‘এল ক্লাসিকো’য় স্মরণীয় ১০
১১ বছর পর আবার কোপা দেল রে ফাইনালে মুখোমুখি হতে যাচ্ছে বার্সেলোনা ও রিয়াল মাদ্রিদ। সেভিয়ার মাঠ দে লা কার্তুহা স্টেডিয়ামে শনিবার রাতে মুখোমুখি হবে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দল। ই
তিহাসে এখন পর্যন্ত সাতবার এই কাপ টুর্নামেন্টের ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছে বার্সা–রিয়াল। যেখানে রিয়াল ৪ বার এবং বার্সা জিতেছে ৩ বার। এই সাত ফাইনাল উপহার দিয়েছে চিরস্মরণীয় কিছু মুহূর্ত। তেমনই ১০টি ঘটনা নিয়ে এই আয়োজন—
১
২০১১ সালের কোপা দেল রে ফাইনালে বার্সাকে হারিয়ে শিরোপা জেতে রিয়াল। খেলোয়াড়েরা যখন বাসের ওপর দাঁড়িয়ে ট্রফিটি প্রদর্শন করছিলেন, সের্হিও রামোসের হাত থেকে কাপটি পড়ে যায় রাস্তায় এবং ভেঙে যায়। ট্রফিটিতে গাড়ির ধাক্কাও লাগে। চূর্ণবিচূর্ণ সেই ট্রফিটি এখন জাদুঘরে প্রদর্শনের বস্তু।
২
মেস্তায়ায় ২০১৪ সালে কোপা দেল রের ফাইনালের কথা সম্ভবত বার্সেলোনা ও গ্যারেথ বেল ভুলতে পারবেন না। সেদিন ঘণ্টায় ২৭ কিলোমিটার গতিতে ৫৮ মিটার দৌড়ে অবিশ্বাস্য এক গোল করেছিলেন বেল। সেই ফাইনাল রিয়াল জিতেছিল ২–১ গোলে।
৩
বাহু দেখিয়ে উদ্যাপন। এমন উদ্যাপনকে বেশ বাজেভাবেই দেখা হয়। কোপা দেল রের ফাইনালে দুবার এমন উদ্যাপন দেখা গেছে। ১৯৮৩ সালের ফাইনালে মার্কোস আলোনসোর গোলের পর এই উদ্যাপন করেন বার্সেলোনার বার্নড সুস্টার। ২০১১ সালের ফাইনালে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর গোলের পর একই উদ্যাপন করতে দেখা যায় পেপেকে।
৪
কিংবদন্তি রিয়াল গোলরক্ষক রিকার্ডো জামোরাকে ডাকা হতো ‘দিভিনো’ নামে। ১৯৩৬ সালের ফাইনালে জোসেফ এসকোলার গোলের প্রচেষ্টা ঠেকিয়ে দিয়ে ইতিহাসে অমর হয়ে আছেন জামোরা। এটিকে ফুটবল ইতিহাসের সেরা সেভগুলোর একটি বিবেচনা করা হয়।
৫
রিয়াল–বার্সার কোপা দেল রের ফাইনালে প্রথম গোলদাতা হলেন এগুয়েনিও। ১৯৩৬ সালের সেই ফাইনালে রিয়ালের ২–১ গোলের জয়ে ৬ মিনিটে গোলটি করেছিলেন এই ফরোয়ার্ড। ফুটবলার হিসেবে সেটি ছিল তাঁর শেষ ম্যাচ। এরপর গৃহযুদ্ধ শুরু হয়ে যাওয়ায় সব খেলা বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তী সময়ে ১৯৪৪ সালে ৩৪ বছর বয়সে মারা যান এগুয়েনিও।
৬
১৯৮৩ সালের ফাইনাল শুরু হয়েছিল অদ্ভুত এক সময়ে। রাত ১০টা ১৫ মিনিটে। এটা অবশ্য নির্ধারিত সময় ছিল না। সময়টা বদলে গিয়েছিল ঐতিহাসিক এক ঘটনার কারণে। একই দিন রাত ৮টা ৩০ মিনিটে ইতালির সঙ্গে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল স্পেনের বাস্কেটবল দল। দুই ম্যাচের সময় যেন সাংঘর্ষিক না হয়, সে জন্য বদলানো হয়েছিল এল ক্লাসিকোর সময়সূচি।
৭
১৯৮৩ সালের ফাইনালকে বার্সা একটি ম্যাচের চেয়ে বেশি কিছু হিসেবে দেখেছিল। জারাগোজায় ভ্রমণের আগে খেলোয়াড়দের উৎসাহিত করতে হাজির হয়েছিলেন স্বয়ং কাতালান সরকারের প্রধান জর্দি পুয়োল। এই রাজনীতিবিদ ব্যক্তিগতভাবে খেলোয়াড়দের সঙ্গে কথা বলেন। তবে এ সময় একজন অনুপস্থিত ছিলেন। তিনি হলেন শুস্টার। মূলত ছবি তোলা এড়াতে নীরবে সরে গিয়েছিলেন তিনি।
৮
১৯৮৩ সালের কোপা দেল রে ফাইনালে বার্সার হয়ে মাঠে ছিলেন ডিয়েগো ম্যারাডোনা। রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে সেটি আর্জেন্টাইন কিংবদন্তির খেলা একমাত্র ম্যাচ। ম্যাচে বার্সেলোনা জিতেছিল ২–১ গোলে।
৯
১৯৯০ সালের ফাইনালে রিয়ালকে ২–০ গোলে হারিয়েছিল বার্সা। তবে সেদিনের ট্রফি জয়ের আনন্দ অল্প সময়ের মধ্যে দুঃখে রূপান্তরিত হয়েছিল। বার্সা যখন উদ্যাপন করছিল, তখন স্ট্যান্ডস থেকে কিছু একটা পড়ে মাথায় আঘাত পান আন্দোনি জুবিজারেতা। রক্তাক্ত অবস্থাতেই সেদিন তড়িঘড়ি করে মাঠ ছাড়তে হয়েছিল তাঁকে।
১০
ঘটনাটি ১৯৬৮ সালের ফাইনালের। ম্যাচের শুরুতেই বার্সার এলাদোর সঙ্গে বাজেভাবে ধাক্কা লাগে রিয়ালের গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় পিরির। সে ধাক্কায় পিরির কলার বোন স্থানচ্যুত হয়। তখন বদলি নামানোর নিয়ম ছিল না। আহত অবস্থাতেই খেলা চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন পিরি। এভাবেই সেদিন সবাইকে অবাক করে পুরো ম্যাচ খেলেন পিরি।