যে কারণে সালাহ-ফন ডাইকদের কাছে এই শিরোপা বিশেষ
একসময় ইংলিশ ফুটবলের রাজা তারাই ছিল। ষাটের দশকের মাঝামাঝি থেকে আশির দশকের শেষ পর্যন্ত তো বলতে গেলে লিভারপুলেরই একচ্ছত্র আধিপত্য ছিল ইংল্যান্ডের শীর্ষ লিগে। তখন অবশ্য নামটা প্রিমিয়ার লিগ ছিল না, ছিল প্রথম বিভাগ লিগ। ১৯৯২ সালে প্রিমিয়ার লিগ নাম হওয়ার পর থেকে যেন লিভারপুলের দুর্ভাগ্যের শুরু। প্রথম বিভাগ যুগে ১৮টি লিগ জেতা লিভারপুল প্রিমিয়ার লিগ যুগে এসে জিততেই ভুলে গেল!
প্রিমিয়ার লিগে শুরু হলো ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের একচ্ছত্র রাজত্ব। স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসনের অধীন ১৩বার লিগ জিতে ইউনাইটেডের মোট লিগ শিরোপা হয়ে গেল ২০টি। লিভারপুলকে পেরিয়ে তারা হয়ে গেল ইংল্যান্ডের ইতিহাসে সবচেয়ে সফল ক্লাব।
ইউনাইটেডের সেই আধিপত্যও শেষ হলো ২০১৩ সালে ফার্গুসনের অবসরের পর। কিন্তু রাজত্ব ফিরে পেল না লিভারপুল। ইংলিশ ফুটবলের নতুন রাজা হয়ে ওঠল ম্যানচেস্টার সিটি। পেপ গার্দিওলার অধীন সর্বশেষ সাত মৌসুমে ছয়বার শিরোপা জিতে সিটি একের পর এক নতুন রেকর্ড গড়তে থাকল।
মাঝে ২০১৯-২০ মৌসুমে ৩০ বছর পর লিভারপুল পেল ইংলিশ লিগের শিরোপার স্বাদ। তবে পৃথিবী তখন করোনা মহামারি চলছে। শিরোপা উৎসব হলো না লিভারপুলের মনের মতো।
এবার আর্নে স্লটের অধীন প্রথম মৌসুমেই আবার চ্যাম্পিয়ন লিভারপুল। সেটাও কী রাজকীয়ভাবে! চার ম্যাচ হাতে রেখে, নিজেদের মাঠ অ্যানফিল্ডে, ভরা গ্যালারির সামনে। লিভারপুলের এটি ২০তম লিগ শিরোপা, ইউনাইটেডের সঙ্গে যৌথভাবে তারাও এখন ইংল্যান্ডের সবচেয়ে সফল ক্লাব।
কোডি গাকপো, ফরোয়ার্ড
অসাধারণ। আমরা এই বছর সত্যিই কঠোর পরিশ্রম করেছি। বিশেষ কিছু মুহূর্ত ছিল, চ্যাম্পিয়নস লিগে হতাশার কিছু মুহূর্তও ছিল। শেষ পর্যন্ত এটা (লিগ শিরোপা) পাওয়াটা অসাধারণ। আশা করি, আমরা আগামী কয়েক বছরে আমরা আরও উন্নতি করতে পারব।
অ্যালেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টার, মিডফিল্ডার
বিশ্বকাপ জিতেছিলাম, এখন জিতলাম প্রিমিয়ার লিগ। আমার জন্য এটা সত্যিই বিশেষ কিছু। আমার সতীর্থদের ছাড়া এটি সম্ভব হতো না। তারা আমার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এই দলটা সত্যিই, সত্যিই ভালো।
অ্যান্ডি রবার্টসন, ডিফেন্ডার
শেষবার যখন আমরা এটা জিতেছিলাম, সময়টা অন্যরকম ছিল। কিন্তু আজকের অভিজ্ঞতা এবং খেলার সময় ও পরে মাঠে গিয়ে সমর্থকদের দেখার অনুভূতির সঙ্গে কিছুরই তুলনা হয় না। এর ধারেকাছেও কিছু নেই।
মোহাম্মদ সালাহ, ফরোয়ার্ড
অবিশ্বাস্য। এখানে সমর্থকদের সামনে প্রিমিয়ার লিগ জেতা, অবিশ্বাস্য! এটা সত্যিই বিশেষ কিছু। পাঁচ বছর আগে জেতা শিরোপার চেয়েও এটা বেশি আনন্দময়। সমর্থকদের সামনে পেয়ে এটা আরও বেশি বিশেষ মনে হচ্ছে।
আলিসন বেকার, গোলকিপার
কী যে ভালো লাগছে, ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন। সত্যি বলতে, আমি খুব আবেগপ্রবণ ছিলাম, মনের মধ্যে নানা কিছু চলছিল। আমরা কত ত্যাগ স্বীকার করেছি, কত চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছি; কোচ পরিবর্তন, চোট, কত কিছু। কিন্তু আজ যেভাবে আমরা জিতেছি, সমর্থকদের সামনে, এটা কল্পনাতীত।
কার্টিস জোন্স, মিডফিল্ডার
আমি বাক্রুদ্ধ! এটাই আমার জন্য সবকিছু। প্রথমবার যখন আমরা এটা জিতেছিলাম, সেবার আমি বেশি ম্যাচ খেলিনি। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে আমি এর একটা বড় অংশ, বেশি ম্যাচ খেলেছি, গোল করেছি, অ্যাসিস্ট করেছি, দলকে সাহায্য করেছি। আমি সবকিছুই উপভোগ করছি।