মোরছালিনের মতো গোল করা তাঁদেরও স্বপ্ন

মোরছালিনের মতো দারুণ সব গোল করতে চান রাকিব–ফাহিমওছবি: প্রথম আলো

রাকিব হোসেনের মনটা খুব খারাপ।

দুই হলুদ কার্ড পাওয়ায় গতকাল কিংস অ্যারেনায় লেবাননের বিপক্ষে ম্যাচটি খেলতে পারেননি। এমন একটা ম্যাচ তিনি ডাগআউটে বসে কাটালেন, যে ম্যাচে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স হৃদয় ছুঁয়েছে বাংলাদেশের ফুটবলপ্রেমীদের। কিংস অ্যারেনার অপেক্ষাকৃত ছোট গ্যালারি থেকে তাঁরা অকুণ্ঠ সমর্থন দিয়েছেন জাতীয় দলকে। শেখ মোরছালিনের দারুণ এক গোলে ফিফা র‍্যাঙ্কিংয়ে ৭৯ ধাপ এগিয়ে থাকা লেবাননের বিপক্ষে বাংলাদেশ ড্র করলেও গোটা ম্যাচে দলের যে পারফরম্যান্স ছিল, তাতে ম্যাচটা বাংলাদেশ জিততেও পারত। লেবাননের মতো দলের বিপক্ষে ড্র করেও ফুটবলপ্রেমীদের মনে না জেতার আক্ষেপ যেন এ দেশের ফুটবলের নতুন দিনেরই শুরু। রাকিবের দুঃখ, এমন একটা ম্যাচ দুই হলুদ কার্ডের কারণে বাইরে বসেই দেখতে হলো তাঁকে।

লেবাননের বিপক্ষে আরও একটি অসাধারণ গোল মোরছালিনের
ছবি: প্রথম আলো

তবে রাকিব দারুণ খুশি তাঁর সতীর্থদের পারফরম্যান্সে। প্রথম আলোকে তিনি বললেন, ‘দলের প্রত্যেক সদস্যই দারুণ খেলেছে। নিজেদের সামর্থ্যের পুরোটা ঢেলে দিয়েছে। খারাপ লাগছে ম্যাচটা খেলতে পারলাম না, তবে দল ভালো করায় আমি খুশি।’

মোরছালিনের দুর্দান্ত সেই গোলটি নিয়ে উচ্ছ্বাসের কমতি নেই রাকিবের, ‘ওর গোলটা অসাধারণ। এমন গোল আমরা খুব বেশি করতে পারি না। গোলের আগে ফাহিমের (ফয়সাল আহমেদ) কাছ থেকে বল নিয়ে ওর রিসিভ, বল ধরেই লেবাননের গোলমুখে ওর দৌড়, সবকিছুই দুর্দান্ত। যে শটে ও গোল করেছে, তাতে উপস্থিত বুদ্ধির পরিচয় সে দিয়েছে। অসাধারণ একজন প্রতিভা পেয়েছি আমরা বাংলাদেশ দলে। আমিও ওর মতো গোল করতে চাই।’

রাকিব–ফাহিম দুজনই আক্রমণভাগের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য
ছবি: প্রথম আলো

কোচ হাভিয়ের কাবরেরার কৌশলে মোরছালিনের সঙ্গেই আক্রমণে জুটি রাকিবের। দুজনের রসায়নটা কেমন, ‘আপনারা সর্বশেষ কয়েকটি ম্যাচে দেখেছেন আমাদের মধ্যে বোঝাপড়া কেমন। ফাহিমের সঙ্গেও আমার বোঝাপড়া ভালো। মোরছালিন খুব ভালো বল বাড়াতে পারে। ফরোয়ার্ডদের জন্য ওই পাসগুলো খুব আকর্ষণীয়। আমি মনে করি মাত্র তো ৯টা ম্যাচ খেলেছে সে, ২০-২৫টা ম্যাচ খেলতে পারলে দেখবেন, মোরছালিন কত বিপজ্জনক খেলোয়াড় হয়ে ওঠে।’

ফাহিমের কাছে মোরছালিনের সঙ্গে তাঁর প্রতিযোগিতাটা ‘স্বাস্থ্যকর’
ছবি: প্রথম আলো

আক্রমণে জাতীয় দলের আরেক সঙ্গী ফয়সাল আহমেদ ফাহিম। কাল তাঁর অ্যাসিস্ট থেকেই মোরছালিন করেছেন অসাধারণ গোলটি। কী ভাবছেন ফাহিম, ‘কী বলব, গোলটা অসাধারণ! এমন গোল করা আমার নিজেরও স্বপ্ন। মোরছালিন, রাকিব ভাই দুজনের সঙ্গেই আমার বোঝাপড়া খুব চমৎকার।’

৯ ম্যাচ খেলেই নিজেকে অপরিহার্য প্রমাণ করেছেন মোরছালিন
ছবি: প্রথম আলো

কাবরেরার একাদশে মোরছালিন আর রাকিবই প্রথম দুই পছন্দ। ফাহিম সাধারণত আসেন বদলি হিসেবে। শৃঙ্খলাজনিত সমস্যায় মোরছালিন মালদ্বীপের বিপক্ষে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের প্রাথমিক রাউন্ডে জাতীয় দলে ছিলেন না। ফাহিমকে কাবরেরা তখন খেলিয়েছিলেন একাদশে। মালদ্বীপের বিপক্ষে ঢাকার ম্যাচে ফাহিম খেলেছেন অসাধারণ। একটি গোলও আছে। কাল রাকিব না থাকায় মোরছালিনের সঙ্গী হয়েছিলেন তিনি। গোল করায় অবধারিতভাবেই মোরছালিনই ফিরবেন প্রথম একাদশে। ফাহিম ব্যাপারটিকে দেখছেন কীভাবে, ‘এটা কোনো সমস্যাই না। কোচ ঠিক করবেন, কে একাদশে থাকবে, কে থাকবে না। আমাকে যদি বদলি হিসেবেও নামানো হয়, আমি নিজের শতভাগ উজাড় করে দেব। তা ছাড়া এমন প্রতিযোগিতা আমাদের সবার জন্যই ভালো। এতে পারফরম্যান্স আরও ভালো হবে। আমি তো এখন চাইব, মোরছালিনের চেয়েও ভালো গোল করতে। এসব প্রতিযোগিতা খুবই স্বাস্থ্যকর।’