বার্সা ছাড়ার আগে ‘অনেক কেঁদেছেন’ নেইমার

২০১৭ সালে বার্সা ছেড়ে পিএসজিতে আসেন নেইমারছবি: এএফপি

স্প্যানিশ ফুটবলে রীতিমতো ঝড় তুলেছে দেশটির সংবাদমাধ্যম ‘এল মুন্দো’। বার্সেলোনায় থাকার জন্য লিওনেল মেসির দেওয়া কিছু শর্ত ও জেরার্দ পিকের চুক্তির তথ্য ফাঁস করে বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছে সংবাদমাধ্যমটি। কিন্তু তারা এখানেই থামেনি। বার্সায় নেইমারের শেষ দিনগুলো নিয়েও তথ্য প্রকাশ করেছে এল মুন্দো।

সান্তোস থেকে ২০১৩ সালে বার্সায় যোগ দেন নেইমার। চার মৌসুম বার্সায় কাটিয়ে দলবদল ফির বিশ্ব রেকর্ড গড়ে ২০১৭ সালে যোগ দেন পিএসজিতে। কাতালান ক্লাবটিতে নেইমারের শেষ দিনগুলো নিয়ে বার্সার তখনকার পরিচালক রাউল সাঙ্গেইয়ের লেখা কিছু মেইল ফাঁস করেছে এল মুন্দো।

এসব মেইল থেকেই জানা গেছে, নেইমারের বাবা চেয়েছিলেন তাঁর ছেলে বার্সাতেই থাকুক। এ নিয়ে কয়েক দফা ছেলের মন ঘোরানোর চেষ্টাও করেছেন নেইমার সিনিয়র।

বার্সার জার্সিতে নেইমার
ফাইল ছবি

এল মুন্দোর প্রকাশ করা তথ্য থেকে স্পেনের আরেক সংবাদমাধ্যম মার্কা জানিয়েছে, নেইমারকে ধরে রাখতে একটি সংকটকালীন বোর্ড গঠন করেছিল বার্সা। আর এই বোর্ডের দায়িত্বে ছিলেন সাঙ্গেই।

নেইমারের সঙ্গে কথা বলে তাঁকে বার্সায় থাকতে রাজি করানোর দায়িত্বও ছিল তাঁর কাঁধে। সাঙ্গেই তখন বাবা ও ছেলের সঙ্গে কথা বলে বুঝতে পেরেছিলেন, নেইমারের বাবার অবস্থান বার্সার পক্ষে। মানে ছেলে বার্সাতেই থাকুক, সেটা তাঁর চাওয়া।

তবে নেইমার সিনিয়র এ অবস্থান থেকে সরে এসেছিলেন বার্সায় নেইমারের সাইনিং বোনাস ফি ফাঁস হওয়ার পর। ব্রাজিলিয়ান তারকার বার্সায় সই করার বোনাসের অঙ্ক ছিল ৬ কোটি ৪৪ লাখ ইউরো।

মেসি–নেইমার যখন বার্সার হয়ে খেলেছেন
ফাইল ছবি

নেইমার ও তাঁর বাবাকে নিয়ে সাঙ্গেইয়ের মেইলে বলা কথাগুলো ফাঁস করেছে এল মুন্দো। নেইমারের বাবাকে নিয়ে সাঙ্গেই বলেছেন, ‘আমি এই লোকের সঙ্গে ঘণ্টার পর ঘণ্টা থেকেছি। তিনি কখন মিথ্যা বলছেন, আর কখন সত্য বলছেন, তা বুঝি। এ বিষয়ে (নেইমারকে বার্সার ধরে রাখার চেষ্টা করা) তিনি যে আমাদের দলে, তা আমি নিশ্চিত।’

ফাঁস হওয়া মেইলে সাঙ্গেই উল্লেখ করেন সমস্যাটা আসলে নেইমারের, ‘সমস্যাটা নেইমারের মাথায়। ছেলেটা অনেক কিছুর ভেতর দিয়ে যাচ্ছে, ভালো নেই। তার প্রচুর ব্যক্তিগত সমস্যা, ঠিকমতো সিদ্ধান্ত নিতে পারে না, তাই ভুগছে। সে ভেবেছে, বার্সা ছাড়লেই সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে (অথচ উচিত ছিল সব সমস্যার মুখোমুখি হয়ে সমাধান করা এবং ক্লাব না ছাড়া)। আমি সরাসরি তার সঙ্গে কথা বলেছি, সে একাধিকবার আমার সামনে কেঁদেছে। আমার কাছে একাধিকবার স্বীকার করেছে, সে সঠিক পথে নেই।’

বার্সায় নেইমারকে নিয়ে পরিস্থিতি যখন এমন, তখন তাঁর সাইনিং বোনাসের অঙ্ক ফাঁস করে সংবাদমাধ্যম। এরপর নেইমারের বাবাও চিন্তাভাবনা বদলে তাঁর ছেলের পাশে দাঁড়ান। অর্থাৎ ছেলের বার্সা ছাড়তে চাওয়ার পক্ষে অবস্থান নেন।

আরও পড়ুন

এ নিয়ে নেইমার সিনিয়র একটি বার্তাও পাঠিয়েছিলেন বার্সাকে, যা ফাঁস করেছে এল মুন্দো, ‘আমি আর তোমাদের বিশ্বাস করি না। তোমরা মিথ্যা বলেছ। প্রথমে (সান্দ্রো) রোসেল মিথ্যা বলেছে, এরপর বার্তো (বার্তোমেউ)। আর এখন বোনাসের অঙ্কও ফাঁস হয়ে গেল। আমি আজ এই বোনাস না পেলে আইনগতভাবে চুক্তি বাতিল করতে পারব। তখন তোমরা ২২ কোটি ২০ লাখ ইউরো পাবে না।’

নেইমারের রিলিজ ক্লজ ছিল ২২ কোটি ২০ লাখ ইউরো, যা পরিশোধ করে তাঁকে দলে ভেড়ায় পিএসজি। ক্লাব ফুটবলে এখন পর্যন্ত এটাই সবচেয়ে দামি দলবদল। তবে নেইমার সিনিয়র যে সাইনিং বোনাসের অর্থ দাবি করেছিলেন, বার্সা কিন্তু তা দেয়নি এবং তারপরই ক্যাম্প ন্যু ছাড়েন ব্রাজিলিয়ান তারকা।

আরও পড়ুন