চার গোলে ইতিহাসে সুয়ারেজ, চূড়ান্ত হলো দক্ষিণ আমেরিকা থেকে প্লে অফের দল
২০২৬ বিশ্বকাপের জন্য দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের বাছাই শেষ হলো আজ। ৫টি ম্যাচ খেলতে মাঠে নেমেছিল দক্ষিণ আমেরিকার ১০ দল। মোট ১২ গোলের এই শেষ রাউন্ডে ব্রাজিলকে ১-০ গোলে হারিয়ে সবচেয়ে বড় চমক দেখিয়েছে বলিভিয়া।
এল আলতোয় নিজেদের ম্যাচটা জেতায় এবং মাতুরিনে স্বাগতিক ভেনেজুয়েলাকে কলম্বিয়া ৬-৩ গোলে হারানোয় পয়েন্ট তালিকার সপ্তম দল হিসেবে আন্তমহাদেশীয় প্লে–অফে খেলা নিশ্চিত করে বলিভিয়া। অর্থাৎ ১৯৯৪ আসরের পর প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ টিকিয়ে রাখল তারা।
আগামী মার্চে ছয় দলের প্লে–অফ টুর্নামেন্টে দক্ষিণ আমেরিকা (কনমেবল) অঞ্চলের সপ্তম দল ছাড়াও থাকবে আফ্রিকা, এশিয়া, ওশেনিয়া, কনকাক্যাফ (তিন আয়োজক ছাড়া) থেকে একটি করে দল। বাকি দুটি দল আসবে ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে এগিয়ে থাকা দলগুলোর মধ্য থেকে। এখান থেকে দুটি দল বিশ্বকাপে খেলার টিকিট পাবে।
দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশ থেকে সরাসরি ছয় দল খেলবে বিশ্বকাপে। সপ্তম দলটিকে খেলতে হবে প্লে–অফে। সরাসরি ছয় দলের বিশ্বকাপের টিকিট পাওয়া আগের রাউন্ডেই নিশ্চিত হয়েছে। এই মহাদেশ থেকে বিশ্বকাপে খেলা নিশ্চিত করেছে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষ ছয় দল—আর্জেন্টিনা, ইকুয়েডর, কলম্বিয়া, উরুগুয়ে, ব্রাজিল ও প্যারাগুয়ে। এর মধ্যে গত সপ্তাহে ১৭তম রাউন্ডে বিশ্বকাপে খেলা নিশ্চিত করে উরুগুয়ে, প্যারাগুয়ে ও কলম্বিয়া। ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা ও ইকুয়েডরের বিশ্বকাপে খেলা নিশ্চিত হয়েছে আরও আগে।
বাংলাদেশ সময় আজ বুধবার সকালে অনুষ্ঠিত শেষ রাউন্ডের ম্যাচগুলোর মধ্যে কলম্বিয়া-ভেনেজুয়েলা ও বলিভিয়া-ব্রাজিল ম্যাচে চোখ ছিল সবার। কারণ, এ দুটি ম্যাচ ঘিরে প্লে–অফের দল নিশ্চিতের সমীকরণ ছিল। সপ্তম স্থান দখলে নিজ নিজ ম্যাচে মাঠে নেমেছিল ভেনেজুয়েলা ও বলিভিয়া। সমীকরণ ছিল এমন—বলিভিয়া যদি ব্রাজিলকে হারায় আর ভেনেজুয়েলা কলম্বিয়ার বিপক্ষে ড্র করে বা হেরে যায়, তাহলে ভেনেজুয়েলাকে পয়েন্ট তালিকায় আটে নামিয়ে সপ্তম স্থান দখল করে প্লে-অফে যাবে বলিভিয়া। শেষ পর্যন্ত ঘটেছেও ঠিক তা–ই। ১৮ ম্যাচে ২০ পয়েন্ট নিয়ে সাতে উঠে আসে বলিভিয়া। সমান ম্যাচে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে আটে নেমে যায় ভেনেজুয়েলা।
কলম্বিয়ার বিপক্ষে জিতলেই অবশ্য সপ্তম স্থান নিয়ে প্লে–অফে খেলত ভেনেজুয়েলাই।
কিন্তু কলম্বিয়া তা হতে না দেওয়ায় দলটিকে ধন্যবাদ জানাতেই পারে বলিভিয়া। বিশেষ করে কলম্বিয়ান ফরোয়ার্ড লুইস সুয়ারেজকে, তিনি একাই ৪ গোল করেন। দক্ষিণ আমেরিকান বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ইতিহাসে ষষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে এক ম্যাচে একাই ৪ গোল করলেন পর্তুগিজ ক্লাব স্পোর্টিংয়ের সুয়ারেজ।
কলম্বিয়ান সুয়ারেজের আগে এই মহাদেশের বিশ্বকাপ বাছাইয়ে সর্বশেষ একাই এক ম্যাচে ৪ গোল করেছিলেন আরেক সুয়ারেজ। তিনি উরুগুয়ে কিংবদন্তি লুইস সুয়ারেজ (২০১১)। ইন্টার মায়ামির এই ফরোয়ার্ডের আগে ২০০০ সালে একই নজির গড়েন ব্রাজিলের কিংবদন্তি রোমারিও। ১৯৯৭ সালে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচে একাই পাঁচ গোল করেছিলেন চিলি কিংবদন্তি ইভান জামোরানো। ১৯৮৯ সালে ব্রাজিলের ক্যারেকাও এক ম্যাচে করেন ৪ গোল। ১৯৭৭ সালে প্রথম এই নজির গড়েন ব্রাজিলের কিংবদন্তি জিকো। তবে এই ছয়জনের মধ্যে শুধু রোমারিও ও কলম্বিয়ার সুয়ারেজ প্রতিপক্ষের মাটিতে এক ম্যাচে চার গোল করেছেন।
কলম্বিয়ার হয়ে এই ম্যাচে গোল করতে পারেননি লুইস দিয়াজ। ফলে দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলে প্রথমবারের মতো শীর্ষ গোলদাতা হিসেবে বাছাইপর্ব শেষ করলেন মেসি। দিয়াজ করেছেন ৭ গোল, মেসির গোল ৮টি।