‘দেয়াল’ ভাঙলেন আলবা, শিরোপার আরও কাছে বার্সেলোনা

গোলদাতা আলবার সঙ্গে হাস্যোজ্জ্বল রাফিনিয়ারয়টার্স

বার্সেলোনা ১ : ০ ওসাসুনা

ম্যাচের ২৬ মিনিটেই ১০ জনের দলে পরিণত হলো ওসাসুনা। তবে একজন কম খেলোয়াড়ের অভাব যেন একাই পুষিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব নিলেন ওসাসুনা গোলরক্ষক এইতর ফার্নান্দেজ। দারুণ ক্ষিপ্রতায় ফিরিয়ে দিলেন রবার্ট লেভানডফস্কি, আনসু ফাতি, রাফিনিয়া আর পেদ্রিদের একের পর এক আক্রমণ।

তবে ৬টি দুর্দান্ত সেভ করা ওসাসুনা গোলরক্ষক আটকাতে পারলেন না জর্দি আলবাকে। ৮৫ মিনিটে দেওয়া এই ডিফেন্ডারের গোলে ওসাসুনাকে ১-০ ব্যবধানে হারিয়েছে বার্সেলোনা।

এই জয়ে লা লিগা শিরোপা নিশ্চিতের পথে আরও এগিয়ে গেল বার্সা। ৩৩ ম্যাচে ৮২ পয়েন্ট দলটির। দ্বিতীয় স্থানে থাকা রিয়াল মাদ্রিদ আছে ১৪ পয়েন্ট পেছনে।

ক্যাম্প ন্যুর ম্যাচটিতে বল দখলে শুরু থেকেই এগিয়ে ছিল বার্সেলোনা। কিন্তু ওসাসুনার রক্ষণ দেয়ালে গিয়ে থমকে যেতে হচ্ছিল বারবার। ছিল নিজেদের ভালো ফিনিশিংয়ের ঘাটতিও। ম্যাচের ২৫ মিনিটেই যেমন গোলের সহজ সুযোগ নষ্ট করেন পেদ্রি। কয়েকজন ডিফেন্ডারকে পাশ কাটিয়ে বাঁ পাশ থেকে গোলমুখে বল বাড়ান আলেহান্দ্রো বালদে। পায়ের কাছে বল পেয়ে গেলেও ঠিকমতো পা ছোঁয়াতে পারেননি পেদ্রি।

গুরুতর চোটের শঙ্কায় গাভিকে তুলে নেন জাভি
রয়টার্স

পরের মিনিটে বল নিয়ে ডি বক্সের দিকে ছুটে যাওয়া পেদ্রিকে হাত ধরে ফেলে দিয়ে লাল কার্ড দেখেন ওসাসুনার ডিফেন্ডার হোর্হে হেরান্দো। ১০ জনের দলের বিপক্ষে গোলের সম্ভাবনাও তখন বেড়ে যায়।

কিন্তু ওসাসুনার জমাট রক্ষণের সামনে বারবারই খেই হারাতে হচ্ছিল লেভানডফস্কি, রাফিনিয়াদের। এর মধ্যে পায়ে আঘাত পাওয়ায় পাবলো গাভিকে তুলে নিয়ে ফাতিকে নামান বার্সেলোনা কোচ। প্রথমার্ধে বার্সেলোনার সর্বশেষ ভালো সম্ভাবনা তৈরি হয় ৪২ মিনিটে। তবে কাছ থেকে আরাউহোর হেড চলে যায় বারের ওপর দিয়ে।

দুই দল প্রথমার্ধ শেষ করে গোলশূন্য স্কোরলাইনে। সব মিলিয়ে এই অর্ধে ওসাসুনা গোলমুখে একটি শটও লক্ষ্যে রাখতে পারেনি বার্সেলোনা। জাভি হার্নান্দেজ কোচের দায়িত্ব নেওয়ার পর এই প্রথম ক্যাম্প ন্যুতে ম্যাচের প্রথম ৪৫ মিনিটে লক্ষ্যে শট রাখতে পারেনি বার্সা।

ওসাসুনার হয়ে দেয়াল হয়ে দাঁড়ান গোলরক্ষক ফার্নান্দেজ
রয়টার্স

দ্বিতীয়ার্ধে গোলমুখে শট বাড়লেও এবার দেয়াল হয়ে দাঁড়ান ওসাসুনা গোলরক্ষক ফার্নান্দেজ। ৫৬ মিনিটে ফ্রেঙ্কি ডি ইয়ংয়ের শট দারুণ ক্ষিপ্রতায় প্রতিহত করেন স্প্যানিশ এই গোলরক্ষক। ৬৭ মিনিটে রুখে দেন লেভানডফস্কির তৈরি করা গোলের সুযোগও।

৭৬ মিনিটে অবশ্য গোল প্রায় পেয়েই যাচ্ছিল বার্সেলোনা। পেদ্রির বাড়ানো বল ধরে দ্রুত ওসাসুনা ডি বক্সের দিকে ছুটে যান লেভানডফস্কি। বিপদ বুঝে ওসাসুনা গোলরক্ষক পোস্ট ছেড়ে বেরিয়ে এসে বল ফিরিয়ে দেন মাঝমাঠের দিকে। ছুটে আসা ফেরান তরেস পাল্টা শট নিলে বল যায় জালের দিকে। তবে শেষ মুহূর্তে খানিকটা বাঁক নিয়ে পোস্টের বাইরে দিয়ে চলে যায়। এর পরের মিনিটে জটলার ভেতর থেকে বল জালে জড়িয়ে দেন লেভা। তবে আক্রমণ তৈরিতে তরেস অফসাইডে থাকা গোল বাতিল হয়ে যায়।

নানা চেষ্টার পরও যে গোলটি আসছিল না, ৮৫ মিনিটে সেটিই এনে দেন জর্দি আলবা। ডি বক্সের ভেতরে ডি ইয়ংয়ের হেডে বাঁ পাশে পাহারাহীন অবস্থায় বল পেয়ে যান আলবা। তাঁর নেওয়া কোনাকুনি শট ঝাঁপিয়ে হাতেও লাগান ওসাসুনা গোলরক্ষক। তবে বলে স্পর্শ করতে পারলেও দিক পাল্টাতে পারেননি। পোস্টের ভেতরের অংশ ঘেঁষে বল চলে যায় জালে।

ভাঙে ফার্নান্দেজের নেতৃত্বে গড়া ওসাসুনা দেয়াল, বার্সা পেয়ে যায় ৩ পয়েন্ট তোলার উপলক্ষ। শেষ পর্যন্ত ওই ব্যবধান ধরে রাখে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে কাতালান ক্লাবটি।