রেফারির ওপর ক্ষুব্ধ হলান্ডের মুখে হাসি ফোটাল যে ছবি

এভাবেই রেফারির ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করেন হলান্ডটুইটার

প্রিমিয়ার লিগে ম্যানচেস্টার সিটি–টটেনহাম ম্যাচে তখন ৩–৩ সমতা। খেলা চলছিল যোগ করা সময়ের পঞ্চম মিনিটের। ঠিক সে সময় রদ্রির কাছ থেকে বল পেয়ে প্রতি আক্রমণে যাওয়ার চেষ্টায় ফাউলের শিকার হন আর্লিং হলান্ড। রেফারি ফাউলের বাঁশি না বাজিয়ে সুবিধা দিয়ে খেলা চালু রাখার সিদ্ধান্ত দেন। যার সুযোগ নিয়ে হলান্ড বল বাড়িয়ে দেন সতীর্থ জ্যাক গ্রিলিশের উদ্দেশে।

প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডারদের ফাঁদ এড়িয়ে এগিয়ে যাচ্ছিলেন গ্রিলিশ। সামনে ছিল কেবলই গোলরক্ষকের বাধা। কিন্তু গ্রিলিশকে আক্রমণ শেষ করতে না দিয়ে তখন অনেকটা আকস্মিকভাবে ফাউলের বাঁশি বাজিয়ে দেন রেফারি। এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে রেফারি সাইমন হুপারকে ঘিরে ধরেন হলান্ডসহ অন্যরা। যদিও এতে কোনো কাজ হয়নি, উল্টো হলুদ কার্ড দেখেছেন হলান্ড।

আরও পড়ুন

এ নিয়ে ম্যাচের পরও ক্ষোভ আড়াল করতে পারেননি নরওয়েজীয় তারকা। এমনকি টটেনহামের দুই খেলোয়াড় জিওভানি লো সেলসো ও ব্রেনান জনসনের সঙ্গেও লেগে যায় তাঁর। এ সময়ও চিৎকর দিয়ে গালিবাচক শব্দ উচ্চারণ করতে দেখা যায় তাঁকে। পরে ফাউলের ঘটনার একটি ভিডিও রিটুইট করেছেন হলান্ড। সঙ্গে ক্যাপশনে জুড়ে দিয়েছেন গালি হিসেবে ব্যবহার হয়, এমন একটি শব্দ। যে কারণে হলান্ডের ওপর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার গুঞ্জনও শোনা যাচ্ছে। এমনকি খেলোয়াড়দের নিয়ন্ত্রণ করতে না পারায় সিটির বিরুদ্ধে এরই মধ্যে অভিযোগ এনেছে ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (এফএ)।

এ ঘটনা নিয়ে পর মুখ খুলেছেন গার্দিওলাও। তবে মিকেল আরতেতার মতো রেফারিদের কোনো বাজে কথা বলতে চান না বলে মন্তব্য করেছেন সিটি কোচ। ‘পরবর্তী প্রশ্ন করুন। আমি মিকেল আরতেতার মন্তব্য করতে চাই না।’ তবে হলান্ডের প্রতিক্রিয়াকে ‘স্বাভাবিক’ বলেই মন্তব্য করেছেন গার্দিওলা। তিনি বলেছেন, ‘এটা স্বাভাবিক। তার প্রতিক্রিয়া অন্য ১০ জন খেলোয়াড়ের মতোই।’

এ ঘটনার পর প্রায় সারা দিন ধরে রেফারির ওপর হলান্ডের ক্ষোভ প্রকাশের একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এমনকি এ ছবির নানা ক্যারিকেচারও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। তেমন একটি ক্যারিকেচার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে পোস্ট করেছে ‘আউট অব কনটেক্সট ফুটবল’ নামে একটি পেজ।

তারা মূলত হলান্ডের স্বদেশী প্রখ্যাত চিত্রশিল্পী এডভার্ড মুঙ্কের বিখ্যাত ছবি ‘দ্য স্ক্রিম’কে ব্যবহার করে ছবিটি তৈরি করে। তাদের সেই পোস্ট নিজের ওয়ালে রিটুইট করে হলান্ড লিখেছেন, ‘এটা সারা দিনে প্রথমবারের মতো আমার মুখে হাসি ফোটাল।’
সেই পোস্টের নিচেও অবশ্য হাস্যরস করেছেন অনেকে। একজন লিখেছেন, ‘কেউ গিয়ে এই লোকের কাছ থেকে ফোনটা সরিয়ে নিন। লোকটা কষ্ট পাচ্ছে।’ এর রিয়াল সমর্থক লিখেছেন, ‘হাসতে হলে তোমাকে রিয়াল মাদ্রিদে আসতে হবে।’

আরও পড়ুন

এদিকে হলান্ডের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া আহ্বান জানিয়েছেন আর্সেনালের ভক্তরা। তাঁদের দাবি, হলান্ড রেফারির গায়ে হাত দিয়েছেন, যে কারণে তাঁর বড় শাস্তি হওয়া উচিত। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে একজন লিখেছেন, ‘হলান্ড নিশ্চিতভাবে রেফারির গায়ে হাত দিয়েছে। যদি এফএ এবং প্রিমিয়ার লিগ শক্তিশালী সংগঠন হয় অবশ্যই তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনতে হবে এবং তাকে শাস্তি দিতে হবে।’ এরপর অন্য একজন লিখেছেন, ‘বিরক্তিকর আচরণ।’ আরেকজন লিখেছেন, ‘তারা কী করেছে, তা–ও দেখেছি। রেফারিকে ঘিরে ধরেছে। যদি দলটি আর্সেনাল হতো তবে বিষয়টা ভিন্ন হতো।’

হলান্ডের হতাশা
এএফপি

কেউ কেউ আলক্সোন্দার মিত্রোভিচের ওপর গত মৌসুমে ৮ ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার ঘটনার কথাও মনে করিয়ে দিয়েছেন। এফএ কাপে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের কাছে ফুলহাম হারার পর মিত্রোভিচ রেফারি ক্রিস কাভানাগের ওপর চিৎকার করেছিলেন। একজন লিখেছেন, ‘মিত্রোভিচ ৮ ম্যাচ নিষিদ্ধ হয়েছিল। তোমার সঙ্গে আগামী মৌসুমে দেখা হবে হলান্ড।’