মেসিদের বিশ্বজয়ের মঞ্চে আফঈদা-শাহেদাদের কিছুক্ষণ

কাতার সফরে বিভিন্ন ক্রীড়া স্থাপনা পরিদর্শন করেন আফঈদা–শাহেদারা। ছবিটি এডুকেশন সিটি স্টেডিয়ামে তোলা।শাহেদা আক্তারের ফেসবুক পোস্ট থেকে

কাতারের লুসাইল স্টেডিয়ামে দাঁড়িয়ে যেন ২০২২ সালের ১৮ ডিসেম্বর ফিরে গিয়েছিলেন আফঈদা খন্দকার ও শাহেদা আক্তার। যেদিন বিশ্বকাপের ফাইনালে ফ্রান্সকে হারিয়ে আকাশি–সাদার জার্সিতে শিরোপা উৎসব করেছিলেন মেসি–দি মারিয়ারা। সেই মঞ্চে পা রেখেই স্মৃতির সাগরে ডুব দেন বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দলের এই দুই ফুটবলার।

আর্থনা সম্মেলনে যোগ দিতে গত সোমবার চার দিনের সফরে কাতার গিয়েছিলেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। যে সফরে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গী হয়েছিলেন আফঈদা ও শাহেদা এবং জাতীয় নারী দলের দুই ক্রিকেটার সুমাইয়া আক্তার ও শারমিন সুলতানা। আজ ঢাকার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সেই সফরের দারুণ সব অভিজ্ঞতার কথাই বলেছেন এই চার খেলোয়াড়।

নারী ফুটবল দলের অধিনায়ক আফঈদা বলেন, ‘আসলে অনুভূতিগুলো বলে বোঝানো যাবে না। মেসি যখন টুক টুক করে হেঁটে বিশ্বকাপটা উঁচিয়ে ধরেছিল, সেই মুহূর্তটা চোখে ভাসছিল। তাদের ড্রেসিংরুম, অনুশীলন–ওয়ার্মআপের জায়গাগুলো ঘুরে ঘুরে দেখলাম। সবকিছু স্বপ্নের মতো লেগেছে।’

যদিও আফঈদার প্রিয় ফুটবলার নেইমার। কিন্তু এত কাছ থেকে ঐতিহাসিক স্টেডিয়ামটি এবং সেখানে মেসিদের উদ্‌যাপনের দৃশ্যগুলো তাঁর কল্পনার জগৎটা ভালোভাবেই নাড়িয়ে দিয়েছে। আফঈদার সতীর্থ এবং রোনালদোভক্ত শাহেদাও রোমাঞ্চিত, ‘মেসিরা যেখানে বিশ্বকাপ জিতেছে, সেই স্টেডিয়াম দেখে খুবই ভালো লেগেছে। আগে কখনো এমন সুযোগ পাইনি।’

ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কাতার সফরের অভিজ্ঞতা শোনান চার নারী ক্রীড়াবিদ (বাঁ থেকে) আফঈদা, শাহেদা, সুমাইয়া ও শারমিন। মাঝে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের উপ–প্রেস সচিব আজাদ মজুমদার।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং

তবে দেশের ক্রীড়াঙ্গনের নানা সমস্যার কথা কাতার ফাউন্ডেশনের সিইও শেখ হিন্দ বিনতে হামাদ আল থানিকে জানিয়েছেন এই ফুটবলার, ‘আমরা যখন চোটে পড়ি, বাংলাদেশে তেমন একটা সুযোগ–সুবিধা থাকে না। আমরা এ বিষয়টি তাঁকে (কাতার ফাউন্ডেশনের সিইও শেখ হিন্দ বিনতে হামাদ আল থানি) বলেছি। নেইমার–রোনালদোরা চোটে পড়লে কাতারে আসেন। এরপর তিনি আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন সহযোগিতা করার।’

রাষ্ট্রীয় এই সফরে প্রথমবার যাওয়া চার ক্রীড়াবিদের ভিন্ন ভিন্ন অভিজ্ঞতা হয়েছে। লুসাইল স্টেডিয়াম ছাড়াও কাতারের স্কুল ক্রিকেট প্রজেক্ট, দেশটিতে পিএসজির একাডেমির কার্যক্রম দেখে মুগ্ধ হয়েছেন তাঁরা।

লুসাইল স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপ ট্রফির রেপ্লিকা নিয়ে তোলা ছবিটি পোস্ট করেছেন শাহেদা আক্তার।
শাহেদা আক্তারের ফেসবুক পোস্ট থেকে

এ সফরে সরকারের পক্ষ থেকেও দ্বিপক্ষীয় নানা বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। যার মধ্যে বাংলাদেশে জিমনেসিয়াম তৈরি করা, রিহ্যাবে সহযোগিতা, নারী ক্রীড়াবিদদের জন্য ডরমিটরি নির্মাণে সহযোগিতা—এসব নিয়ে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে। এ নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার উপ–প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘এ সফরের মধ্য দিয়ে তাদের সঙ্গে যোগাযোগটা স্থাপিত হলো। এর ধারাবাহিকতায় ভবিষ্যতে আমরা ক্রীড়াক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য কিছু সহযোগিতা পাব।’

কাতার ফাউন্ডেশনের সিইও শেখ হিন্দও বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধিতে সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দেন। যদিও কাতার ক্রিকেট নিয়ে ততটা ভাবে না। তবে ক্রিকেটার সুমাইয়া ও শারমিন ক্রিকেট নিয়ে তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। সুমাইয়া যেমন বললেন, ‘আমরা তাঁদের সঙ্গে ক্রিকেট নিয়ে কথা বলেছি। শেখ হিন্দকে আমাদের দেশে এসে ক্রিকেট দেখার আমন্ত্রণও জানিয়েছি।’

আরও পড়ুন