হংকংয়ে কেন খেলতে পারেননি, ব্যাখ্যা দিলেন মেসি

জাপানে সংবাদ সম্মেলনে লিওনেল মেসি ব্যাখ্যা দিয়েছেন হংকং একাদশের বিপক্ষে ইন্টার মায়ামির হয়ে কেন খেলতে পারেনিএএফপি

লিওনেল মেসি কেন হংকং একাদশের বিপক্ষে খেলেননি, এ নিয়ে হংকংয়ে চলছে তোলপাড়। ইন্টার মায়ামি ও হংকং একাদশ ম্যাচের সবচেয়ে বড় বিজ্ঞাপন ছিলেন মেসি। গত পরশু ম্যাচটির আগে টেলিভিশনের বিজ্ঞাপন, বিভিন্ন বিলবোর্ড আর পোস্টারে সময়ের সবচেয়ে বড় তারকা মেসিকেই দেখানো হয়েছে বেশি করে। আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ককে কাছ থেকে দেখার জন্য ন্যূনতম ১২৫ ডলারের (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১৪ হাজার টাকা) টিকিট কিনেছেন হংকংয়ের ফুটবলপ্রেমীরা।

কিন্তু হংকং একাদশের বিপক্ষে ইন্টার মায়ামির ৪–১ গোলে জয়ের ম্যাচে বেঞ্চ গরম করেই কেটেছে মেসির সময়। এ নিয়ে বেজায় চটেছেন হংকংয়ের ফুটবলপ্রেমীরা। ম্যাচের শেষ দিকে মেসিকে দুয়ো দিয়েছেন, টিকিটের মূল্য ফেরত চেয়েও স্লোগান দিয়েছেন তাঁরা। এ ম্যাচের আয়োজকদের বিরুদ্ধে প্রতারণা মামলা করা যায় কি না, আলোচনা হয়েছে তা নিয়েও। এ পরিস্থিতি দেখে হংকংয়ের ক্রীড়ামন্ত্রী কেভিন ইয়েউং বলেছেন, এই ম্যাচে মেসিকে অন্তত ৪৫ মিনিট খেলানো হবে বলে চুক্তি হয়েছিল। এরপরও তাঁকে কেন খেলানো হয়নি, অবশেষে এই ব্যাখ্যা দিয়েছেন মেসি নিজেই।

মায়ামির সঙ্গে মেসি এই মুহূর্তে আছেন জাপান সফরে। সেখানে জাপানের ক্লাব ভিসেল কোবের বিপক্ষে বাংলাদেশ সময় আগামীকাল বিকেল ৪টায় ইন্টার মায়ামি তাদের পরবর্তী প্রাক্-মৌসুম প্রস্তুতি ম্যাচটি খেলবে। এই ম্যাচের আগে আজ জাপানে এক সংবাদ সম্মেলনে হংকং একাদশের বিপক্ষে খেলতে না পারার ব্যাখ্যা দিয়েছেন আর্জেন্টিনা ও ইন্টার মায়ামির অধিনায়ক।

আরও পড়ুন
অ্যাডাক্টর পেশির সমস্যায় ভুগছেন মেসি
রয়টার্স

মেসি সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘হংকং ম্যাচে আমার খেলতে না পারাটা দুর্ভাগ্য। সৌদি আরবে প্রথম ম্যাচ খেলার সময় আমি অ্যাডাক্টর পেশিতে (ঊরুর পেশি) অস্বস্তি অনুভব করি। এ কারণে আমি মাঠ থেকে উঠে যাই। (সৌদি আরবে) দ্বিতীয় ম্যাচে দেখতে চেয়েছিলাম কী রকম বোধ করি। কারণ, এমআরআই করানোর পর আমি জানতে পেরেছিলাম যে আমার অ্যাডাক্টর পেশিতে ফোলা আছে। কোনো চোট ছিল না বলে সেই ম্যাচে আমি খেলার চেষ্টা করেছি।’

সৌদি আরবে দ্বিতীয় ম্যাচে আল নাসরের বিপক্ষে শেষ দিকে বদলি হিসেবে মাঠে নেমেছিলেন মেসি। এরপর হংকংয়ে হংকং একাদশের বিপক্ষে খেলতে চলে যায় মায়ামি। এমএলসের দলটি হংকংয়ে পৌঁছানোর পরই মেসিকে নিয়ে শুরু হয় উন্মাদনা। তাঁকে কাছ থেকে একনজর দেখতে রাস্তায় নামে হাজার হাজার মানুষ। একপর্যায়ে সেখানকার পুলিশ শহরের রাস্তা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়।

হংকং সফর নিয়ে মেসি বলেছেন, ‘হংকংয়ে আমরা উন্মুক্ত অনুশীলন করি এবং আমি সেই অনুশীলনে ছিলাম। কারণ, অনেক মানুষ সেখানে এসেছিল। এ ছাড়া শিশুদের নিয়েও একটা পর্ব ছিল। আমি সেখানে থাকতে চেয়েছি এবং অংশ নিতে চেয়েছি। কিন্তু সত্যি হচ্ছে, আমার (অ্যাডাক্টরে) অস্বস্তি ছিল এবং খেলাটা আমার জন্য কষ্টকরই ছিল। দুর্ভাগ্যজনকভাবে ফুটবলে এমন ঘটনা যেকোনো ম্যাচেই হতে পারে। আমাদের চোট থাকতে পারে। আমার ক্ষেত্রে এটাই হয়েছে।’

আরও পড়ুন
সংবাদ সম্মেলনে মেসি
রয়টার্স

মেসি এখানেই থামেননি; হংকংয়ে খেলতে না পেরে তিনি নিজেও যে হতাশ হয়েছেন, এরপর সেটাই বলেছেন আর্জেন্টিনার অধিনায়ক, ‘আমি যে হংকং ম্যাচে খেলতে পারিনি, এটা দুঃখজনক। আমি সব সময়ই খেলতে চাই। বিশেষ করে আমরা যখন সফর করি এবং মানুষ আমাদের ম্যাচ দেখার জন্য উন্মুখ থাকে।’ এরপর হংকংয়ের ফুটবলপ্রেমীদের সান্ত্বনা দেওয়ারই যেন চেষ্টা করেছেন মেসি, ‘আশা করছি আমরা আবার আসব এবং আরেকটা ম্যাচ খেলব আর আমি সেখানে থাকব। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, আমার খেলতে না পারাটা দুঃখজনক।’

মেসি এরপর যা বলেছেন, সেটাতে হয়তো হংকংয়ের ফুটবলপ্রেমীদের আক্ষেপ একটু বাড়বে, ‘আজ বিকেলে আমরা অনুশীলন করব। আমি আবার চেষ্টা করব। সত্যি হচ্ছে, আমি গত কয়েক দিনের তুলনায় আমি অনেক ভালো বোধ করছি। সবকিছু নির্ভর করছে অনুশীলনে কেমন বোধ করি, তার ওপর। সত্যি বলছি, (ভিসেল কোবের) বিপক্ষে খেলতে পারব কি না, তা এখনো জানি না। কিন্তু আমি আগের চেয়ে ভালো বোধ করছি এবং খেলতে চাই।’

আরও পড়ুন