ইরানকে কাতার বিশ্বকাপে নিষিদ্ধ করার দাবিতে ফিফাকে চিঠি

তেহরানে অবস্থিত ইরান ফুটবল ফেডারেশনছবি: টুইটার

কাতার বিশ্বকাপ থেকে ইরানকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে ফিফাকে আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি পাঠিয়েছেন ইরানের ক্রীড়া ব্যক্তিত্বরা। স্পেনের আইনজীবী ফার্ম রুইজ-হুয়ের্তা অ্যান্ড ক্রেসপোর মাধ্যমে এই চিঠি পেয়েছে ফিফা। বিবিসি জানিয়েছে, ইরানের কিছু ফুটবলার এবং অন্য অ্যাথলেটরা তাঁদের দেশের ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনকে নিষিদ্ধ করার অনুরোধ করেছেন ফিফার কাছে।

হিজাব নীতি না মানায় গত ১৬ সেপ্টেম্বর মাসা আমিনি নামের এক তরুণী দেশটির নীতি পুলিশের হেফাজতে নিহত হন। এর পর থেকে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে ইরানে। সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, চলমান এ বিক্ষোভে এখন পর্যন্ত প্রায় ২০০ মানুষ মারা গেছেন। এরই প্রতিবাদে ইরানকে বিশ্বকাপ থেকে নিষিদ্ধ করার অনুরোধ করা হয়েছে ফিফার কাছে। চিঠিতে দাবি করা হয়, ফুটবলে সরকারি হস্তক্ষেপ ফিফার নিয়মের বিরোধী। ইরানে নারীদের স্টেডিয়ামে ঢুকতে দেওয়া হয় না। তাই ‘নিরপেক্ষ থাকার সুযোগ নেই ফিফার।’

ইরান জাতীয় ফুটবল দল
ছবি: টুইটার

স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম ‘এএস’ জানিয়েছে, রুইজ-হুয়ের্তা অ্যান্ড ক্রেসপো আইনি প্রতিষ্ঠানটির মাধ্যমে পাঠানো বার্তায় স্বাক্ষর করেছেন ইরানের ক্রীড়াজগতের তারকা, সংবাদকর্মী এবং নারী অধিকারকর্মীরা। এদের মধ্যে নাম জানা গেছে শুধু নারী অধিকারকর্মী মাসিহ আলীনেজাদের।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আইনি প্রতিষ্ঠান রুইজ-হুয়ের্তা অ্যান্ড ক্রেসপোর মাধ্যমে ইরানের ফুটবল এবং অন্যান্য খেলাধুলার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিত্বরা মিলে ফিফা ও এর সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনোর কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন। সেখানে ইরানের ফুটবল ফেডারেশনকে তাৎক্ষণিকভাবে নিষিদ্ধ করার দাবি করা হয় এবং তা ২০ নভেম্বর শুরু হতে যাওয়া বিশ্বকাপ থেকেই কার্যকরের অনুরোধ করা হয়েছে।’

সংবাদমাধ্যম চিঠির অংশবিশেষও প্রকাশ করেছে। স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম ‘মার্কা’ প্রকাশিত চিঠির অংশবিশেষে লেখা হয়েছে, ‘দেশের মেয়েদের যদি স্টেডিয়ামে ঢুকতে না দেওয়া হয় এবং ফেডারেশন যদি সরকারের কথায় ওঠবস করে, তাহলে তাদের স্বাধীন প্রতিষ্ঠান হিসেবে দেখার সুযোগ নেই, যারা যেকোনো প্রভাব এড়িয়ে চলবে। এটা ফিফার আইনের (১৯ নম্বর ধারা) বিরোধী। কুয়েত, ভারত এবং অতীতে ইরানের ক্ষেত্রেও এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’ দেশের ফুটবল ফেডারেশনে সরকারি হস্তক্ষেপের অভিযোগে গত আগস্টেই ভারতকে নিষিদ্ধ করেছিল ফিফা। পরে এ নিষেধাজ্ঞা তুলেও নেওয়া হয়।

জুরিখে ফিফার সদরদপ্তর
ছবি: টুইটার

চিঠিতে ফিফাকে চাপ দিয়ে বলা হয়, ‘ফিফাকে অবশ্যই যেকোনো একটি পক্ষ বেছে নিতে হবে। নিরপেক্ষ থাকার সুযোগ নেই। কারণ, ইরানের ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনও নিরপেক্ষ নয়। তারা খেলাধুলা থেকে নারীদের পরিকল্পনামাফিক ছিটকে ফেলছে...অনেক হয়েছে, এখন ফিফাকে পদক্ষেপ নিতে হবে।’

কাতারে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া বিশ্বকাপে ‘বি’ গ্রুপে আছে ইরান। চার দলের গ্রুপে অন্য তিনটি দল যুক্তরাষ্ট্র, ইংল্যান্ড ও ওয়েলস।