নটিংহাম ফরেস্টের কোচ হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছিলেন গত ৯ সেপ্টেম্বর। শনিবার (১৮ অক্টোবর) চেলসির কাছে ঘরের মাঠে ৩-০ গোলে বিধ্বস্ত হওয়ার পরই বরখাস্ত হলেন অ্যাঞ্জে পোস্তেকোগলু। সিটি গ্রাউন্ডে খেলা শুরুর এক ঘণ্টা পরই ফরেস্টের মালিক ইভানজেলোস মারিনাকিস বুঝে গিয়েছিলেন, যথেষ্ট হয়েছে! শেষ বাঁশি বাজার পর মাত্র ১৯ মিনিট সময় নিলেন তিনি। তারপর দিলেন পোস্তেকোগলুকে ছাঁটাই করার ঘোষণা। আর তাতেই প্রিমিয়ার লিগের ইতিহাসে সবচেয়ে কম সময়ে চাকরি হারানো কোচদের ছোট এক তালিকায় নাম লেখালেন অস্ট্রেলিয়ান এই কোচ।
চলুন দেখা যাক, প্রিমিয়ার লিগে চাকরি ১০০ দিন হওয়ার আগেই বরখাস্ত হয়েছেন এমন ১০ কোচের তালিকায় আর কারা আছেন।
রালফ হাসেনহাটলের জায়গায় ২০২২ সালের নভেম্বরে সাউদাম্পটনের দায়িত্ব নেন নাথান জোন্স। ওয়েলসের এই কোচ এর আগে ২০১৯ সালে স্টোক সিটিতে ১০ মাসের দুর্বিষহ এক অধ্যায় পার করে গেছেন। সাউদাম্পটনেও তাঁর ভাগ্য খোলেনি। ১৪ ম্যাচে ৯ হারের পর পেলেন বরখাস্ত হওয়ার চিঠি। একই মৌসুমে তৃতীয়বার কোচ খুঁজতে হয় সাউদাম্পটনকে।
মিক ম্যাকার্থির দীর্ঘদিনের সহকারী ছিলেন তিনি। ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ম্যাকার্থি বরখাস্ত হওয়ার পর দায়িত্ব দেওয়া হয় কনরকে। তখন উলভস পয়েন্ট তালিকার ১৮ নম্বরে। কিন্তু কনরের অধীনে টানা সাত ম্যাচ হেরে বসে উলভস। এপ্রিলেই অবনমন নিশ্চিত হয়, পুরো মৌসুমে মাত্র ২৫ পয়েন্ট জুটেছিল তাদের। ২০১১-১২ মৌসুমের বাকি সময়টা কোনোভাবে কনর টিকে থাকলেও, পরের মৌসুমে আর রাখা হয়নি তাঁকে।
পোজ্জো পরিবারের অধীনে ওয়াটফোর্ডের কোচ বদলের চক্র যেন এক ‘মেরি-গো-রাউন্ড’। সানচেজ ফ্লোরেস এই চক্রে দুবার চড়েছেন। ২০১৫-১৬ মৌসুমে ৪৪ ম্যাচের জন্য একবার; আর তিন বছর পর ফিরে এসে মাত্র এক ডজন ম্যাচে, যেখানে জয় মাত্র দুটি।
প্রিমিয়ার লিগে কোচিং করানো প্রথম আমেরিকান। ২০১৬ সালের অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত টিকে ছিলেন। বড় দিনের আগেই বরখাস্ত হননি, বরং টিকে ছিলেন ২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত! ১১ ম্যাচে পেয়েছিলেন মাত্র ৮ পয়েন্ট। দল তখন ছিল ১৯ নম্বরে। তাঁর পর পল ক্লেমেন্ট এসে সোয়ানসিকে রেলিগেশন থেকে বাঁচান।
সাবেক ডাচ ডিফেন্ডার ২০১৭ সালের গ্রীষ্মে দায়িত্ব নেন প্যালেসের। চার ম্যাচের একটিতেও জিততে পারেননি, এমনকি দল কোনো গোলও করতে পারেনি। ফলে মাত্র ৭৭ দিনের মাথায় বিদায়। প্রিমিয়ার লিগে স্থায়ী কোচ হিসেবে সবচেয়ে কম ম্যাচে ছাঁটাইয়ের রেকর্ডও এখনো তাঁর দখলে।
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে ১২ বছর সহকারী কোচ হিসেবে কাজ করার পর ২০১৩-১৪ মৌসুমে ফুলহামের দায়িত্ব নেন এই ডাচ কোচ। ১৩ ম্যাচে ৯টিতে হারায় তাঁর দল নেমে যায় টেবিলের তলানিতে। শেষ পর্যন্ত মৌসুম শেষ হওয়ার আগেই চাকরি হারান।
২০২২-২৩ মৌসুমের মাঝপথে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতিতে লিডসের দায়িত্ব নেন স্প্যানিশ কোচ গ্রাসিয়া। ১২ ম্যাচে তিনটি জয়, সাতটি হার ও দুটি ড্র। ৬৯ দিনের মাথায় ক্লাব তাঁকে সরিয়ে এনে বসায় স্যাম অ্যালারডাইসকে।
চার্লটনে অ্যালান কার্বিশলির সহকারী হিসেবে তিনি বেশ সুনাম অর্জন করেছিলেন। বিভিন্ন ক্লাবে পরামর্শক ও পরিচালক পদে বহু বছর কাটানোর পর, ২০০৬ সালে তিনি আবার চার্লটনে ফেরেন ইয়ান ডোয়ির সহকারী হিসেবে। নভেম্বরে ডোয়ি বরখাস্ত হলে রিডকেই প্রধান কোচের পদে বসানো হয়। তবে তাঁর সময়ে আরও বড় বিপর্যয়ের মুখে পড়ে চার্লটন। ৭ ম্যাচে মাত্র ৪ পয়েন্ট, লিগ কাপ থেকেও বিদায়—সব মিলিয়ে বড়দিনের আগের দিনই চাকরি হারাতে হয় তাঁকে।
নটিংহাম ফরেস্টের কোচ হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছিলেন গত ৯ সেপ্টেম্বর। শনিবার (১৮ অক্টোবর) চেলসির কাছে ঘরের মাঠে ৩-০ গোলে বিধ্বস্ত হওয়ার পরই বরখাস্ত হলেন অ্যাঞ্জে পোস্তেকোগলু। সিটি গ্রাউন্ডে খেলা শুরুর এক ঘণ্টা পরই ফরেস্টের মালিক ইভানজেলোস মারিনাকিস বুঝে গিয়েছিলেন, যথেষ্ট হয়েছে! শেষ বাঁশি বাজার পর মাত্র ১৯ মিনিট সময় নিলেন তিনি। তারপর দিলেন পোস্তেকোগলুকে ছাঁটাই করার ঘোষণা। আর তাতেই প্রিমিয়ার লিগের ইতিহাসে সবচেয়ে কম সময়ে চাকরি হারানো কোচদের ছোট এক তালিকায় নাম লেখালেন অস্ট্রেলিয়ান এই কোচ।
২০১৬ সালে ইংল্যান্ড জাতীয় দলের কোচ হিসেবে মাত্র এক ম্যাচ ও ৬৭ দিন টিকেছিলেন স্যাম অ্যালারডাইস। ইংল্যান্ড জাতীয় দলের ইতিহাসে সবচেয়ে স্বল্পস্থায়ী কোচ। সেই অ্যালারডাইস পরে প্রিমিয়ার লিগেও গড়লেন একই রকম রেকর্ড। ২০২৩ সালের মে মাসে অবনমন এড়াতে মরিয়া লিডস ইউনাইটেড বরখাস্ত করল হাভি গ্রাসিয়াকে। শেষ ভরসা হিসেবে ডাক পড়ল অ্যালারডাইসের। হাতে ছিল চার ম্যাচ, কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না। তিন হার আর এক ড্রয়ের পর লিডস নেমে গেল নিচের লিগে। অ্যালারডাইস বিদায় নিলেন মোটা অঙ্কের ক্ষতিপূরণ নিয়ে। রেখে গেলেন প্রিমিয়ার লিগ ইতিহাসের সবচেয়ে ক্ষণস্থায়ী কোচ হওয়ার রেকর্ড—মাত্র ৩০ দিন!