মেসির শহরে বার্সেলোনার ম্যাচ, আপত্তি রিয়াল মাদ্রিদের
লা লিগার ম্যাচে বার্সেলোনা খেলতে চায় মায়ামিতে, আর এতেই খেপেছে রিয়াল মাদ্রিদ। রিয়াল বলছে, এমনটা হলে নাকি বার্সেলোনা ‘অযৌক্তিক সুবিধা’ পাবে আর এর মাধ্যমে তৈরি হবে ‘এক অগ্রহণযোগ্য নজির’।
কী হয়েছে আসলে? স্প্যানিশ ফুটবল ফেডারেশন (আরএফইএফ) গত সোমবার উয়েফার কাছে একটি অনুরোধ পাঠিয়েছে। তাদের প্রস্তাব, আগামী মৌসুমের ১৭তম সপ্তাহের ম্যাচ, যা ২০ ডিসেম্বর হওয়ার কথা, তা যেন মায়ামির হার্ড রক স্টেডিয়ামে আয়োজনের অনুমতি দেওয়া হয়। লা লিগার নতুন মৌসুম শুরু হচ্ছে আগামী শুক্রবার থেকে। মায়ামির এই স্টেডিয়ামটিই লিওনেল মেসির ক্লাব ইন্টার মায়ামির হোম গ্রাউন্ড। মেসি ২০২১ সালে বার্সা ছেড়ে পিএসজি ঘুরে ২০২৩ সালে মায়ামিতে যোগ দেন।
লা লিগা কর্তৃপক্ষ অবশ্য আগেও একবার বিদেশে ম্যাচ আয়োজনের চেষ্টা করেছিল। ২০১৮-১৯ মৌসুমে তারা মায়ামিতে একটি ম্যাচ আয়োজনের প্রস্তাব দিয়েছিল, কিন্তু ফিফা, আরএফইএফ এবং মার্কিন ফুটবল ফেডারেশনের আপত্তিতে সেই পরিকল্পনা আর আলোর মুখ দেখেনি।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে রিয়াল মাদ্রিদ এবং লা লিগার মধ্যে নানা ইস্যুতে মতবিরোধ চলছে। সভাপতি হাভিয়ের তেবাসের অধীনে লিগের কার্যক্রম নিয়ে রিয়াল তাদের অসন্তোষ প্রকাশ করে আসছে।
গতকাল এক বিবৃতিতে রিয়াল মাদ্রিদ জানিয়েছে, তারা ইতিমধ্যেই ফিফাকে অনুরোধ করেছে যেন ‘প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া সব ক্লাবের পূর্বানুমতি ছাড়া’ ম্যাচটির অনুমোদন দেওয়া না হয়। আরএফইএফ-কে তাদের অনুরোধ প্রত্যাহার করতে চাপ দিতে রিয়াল উয়েফাকেও অনুরোধ জানিয়েছে। শুধু তা–ই নয়, মায়ামিতে ম্যাচ খেলার অনুমতির বিরুদ্ধে স্পেনের সুপ্রিম স্পোর্টস কাউন্সিলের (সিএসডি) সঙ্গেও যোগাযোগ করেছে ক্লাবটি।
বিবৃতিতে রিয়াল মাদ্রিদ বলেছে, ‘প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী ক্লাবগুলোকে আগে থেকে না জানিয়ে নেওয়া এই পদক্ষেপ লিগের মূল নীতি (একটি ম্যাচ নিজেদের মাঠে, অন্যটি প্রতিপক্ষের মাঠে) লঙ্ঘন করে। এতে প্রতিযোগিতার ভারসাম্য নষ্ট হয় এবং যারা এই অনুরোধ করেছে, সেই ক্লাবগুলো অন্যায্য সুবিধা পায়।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘প্রতিযোগিতার সততা বজায় রাখতে সব ম্যাচ একই শর্তে হওয়া জরুরি। একতরফাভাবে এই নিয়ম বদল করলে সমতার নীতি ভাঙা হয় এবং এমন একটি খারাপ উদাহরণ তৈরি হয়, যা খেলার শুদ্ধতা এবং স্বচ্ছতাকে ঝুঁকির মুখে ফেলে।’
লা লিগা সভাপতি তেবাস গত বছর ইএসপিএন-কে বলেছিলেন, ২০২৫-২৬ মৌসুমেই তারা যুক্তরাষ্ট্রে ম্যাচ আয়োজনের স্বপ্ন পূরণ করতে চান। এর আগে ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে বার্সেলোনা-জিরোনার ম্যাচ এবং গত মৌসুমে বার্সেলোনা-আতলেতিকো মাদ্রিদের ম্যাচ যুক্তরাষ্ট্রে আয়োজনের প্রস্তাব এসেছিল। কিন্তু প্রথমটি ফিফার বাধায় এবং দ্বিতীয়টি সময়ের অভাবে বাতিল হয়ে যায়।
গত বছর ফিফা এই ধরনের ম্যাচ বিদেশে আয়োজনের প্রভাব মূল্যায়নের জন্য একটি ওয়ার্কিং গ্রুপ তৈরি করে। মজার ব্যাপার হলো, এর আগে লা লিগার মার্কিন অংশীদার ‘রেলেভেন্ট স্পোর্টস’ ফিফার বিরুদ্ধে মামলা করেছিল, যখন ফিফা মায়ামিতে ম্যাচ আয়োজনের পরিকল্পনা আটকে দিয়েছিল। পরে দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতা হলে মামলা তুলে নেওয়া হয়।
তবে লা লিগা একা নয়। ইতালির ফুটবল ফেডারেশনও এই মৌসুমে ফেব্রুয়ারিতে এসি মিলান বনাম কোমো ম্যাচ অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে আয়োজনের পরিকল্পনাকে সমর্থন জানিয়েছে।