রেকর্ড ভেঙেচুরে আসছে পিএসজির ১৬ বছর বয়সী ‘ভিনগ্রহের খেলোয়াড়’

পিএসজির একাডেমি থেকে উঠে এসেছেন ওয়ারেন জায়ার–এমেরিছবি: এএফপি

পার্ক দে প্রিন্সেসে কাল রাতে ওয়ারেন জায়ার-এমেরি যখন লিওনেল মেসি ও সের্হিও রামোসদের সতীর্থ হিসেবে মাঠে নেমেছেন, তখন অনেকের কাছেই হয়তো অদ্ভুত লেগেছে। পিএসজির সর্বকনিষ্ঠ হিসেবে রেকর্ড ভাঙতে ভাঙতে চ্যাম্পিয়নস লিগের পথ পর্যন্ত উঠে এসেছেন ১৬ বছর বয়সী এ মিডফিল্ডার। পিএসজির সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে অফিশিয়াল ম্যাচে অভিষেক ও গোল করার রেকর্ড তাঁর দখলে। এবার চ্যাম্পিয়নস লিগেও তাঁর তেমন রেকর্ড হয়ে গেল।

আরও পড়ুন
আরও পড়ুন

পিএসজির হয়ে লিগ আঁ-তে সর্বকনিষ্ঠ হিসেবে অভিষেক, একাদশে অভিষেক, গোল করার রেকর্ডও ফ্রান্সে জন্ম নেওয়া এ ফুটবলারের। কাল রাতে চ্যাম্পিয়নস লিগ নকআউট পর্বের ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে একাদশের হয়ে মাঠে নামার রেকর্ড গড়েছেন ওয়ারেন জায়ার-এমেরি। ১৬ বছর ৩৪৩ দিন বয়সে মাঠে নেমে রেকর্ডটি গড়লেন এই মিডফিল্ডার। এর পাশাপাশি পিএসজির সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে চ্যাম্পিয়নস লিগে অভিষেকের রেকর্ডও তাঁর দখলেই।

তবে কাল জয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে পারেননি ওয়ারেন। শেষ ষোলোর প্রথম লেগে বায়ার্ন মিউনিখের কাছে ১-০ গোলে হেরেছে তাঁর দল পিএসজি।

চ্যাম্পিয়নস লিগে পিএসজির সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড়ও ওয়ারেন
ছবি: এএফপি

ফ্রান্সের হয়ে গত বছর অনূর্ধ্ব-১৭ ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপজয়ী ওয়ারেন পিএসজির ‘জেন-জেড’ প্রকল্পের ‘এ’ তালিকাভুক্ত খেলোয়াড়। ২০১১ সালে ফরাসি ক্লাবটি কাতার স্পোর্টস ইনভেস্টমেন্টের (কিউএসআই) মালিকানাধীন হওয়ার পর নতুন প্রকল্প হাতে নিয়েছিল। লক্ষ্য স্থির করেছিল, নিজেদের একাডেমি থেকে তারা পরবর্তী মেসিকে বের করবে। এই এক যুগে পিএসজির একাডেমি ইউরোপে অন্যতম সেরাদের কাতারে পৌঁছেছে এবং ওয়ারেন সেই একাডেমিরই অন্যতম সেরা প্রতিভা।

ওয়ারেনের বাবাও ফুটবলার ছিলেন। ফ্রান্সের সবচেয়ে পুরোনো ক্লাবগুলোর একটি রেড স্টারের হয়ে খেলেছেন। ছেলেও বাবার পথে হেঁটেছেন। ৮ বছর বয়সে পিএসজি তাঁকে একাডেমিতে নিয়ে নেওয়ার পর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। ওয়ারেন এখন পিএসজির ‘জেন-জেড’ (গোল্ডেন জেনারেশন) প্রকল্প থেকে বের হওয়া সবচেয়ে সম্ভাবনাময় ফুটবলার।

আরও পড়ুন

পোর্তো ছেড়ে গত বছর জুনে পিএসজিতে যোগ দেওয়া পর্তুগিজ মিডফিল্ডার ভিতিনহা ওয়ারেনের জায়ার-এমেরির সঙ্গে কয়েকটি অনুশীলন সেশনের পর হোর্হে মেন্দেজের কাছে তাঁর বিষয়ে জানতে চেয়েছিলেন। মেন্দেজ তাঁদের দুজনেরই এজেন্ট। মেন্দেজকে ভিতিনহা বলেছিলেন, ‘এই বাচ্চা ছেলেটা কে? সে তো ভিনগ্রহের!’

বক্স টু বক্স মিডফিল্ড প্লে-তে অভ্যস্ত ওয়ারেনের ম্যাচের গতিপ্রকৃতি বোঝার ক্ষমতা অসামান্য। বল কাড়া থেকে খেলা বানানোতেও মুনশিয়ানা কম নয়। মাত্র ১৫ বছর বয়সে পিএসজির মূল দলে সুযোগ পাওয়ার পর প্রথম অনুশীলন সেশনে ওয়ারেনকে দেখে চমকে যান পিএসজি তারকা মার্কো ভেরাত্তি। তরুণ সতীর্থের প্রতিভা দেখে বিষ্মিত হয়েছিলেন। ওয়ারেনও একের পর এক সুযোগ কাজে লাগানোর চেষ্টা করে পিএসজিকে যেন বুঝিয়ে দিতে চাইছেন, অতিরিক্ত মিডফিল্ডার না কিনলেও চলবে। এর বদলে বেশি বেশি ম্যাচ খেলার সুযোগ পেলে তিনি নিজেই পুরো প্রস্তুত হয়ে উঠবেন।

পিএসজি কোচ ক্রিস্তফ গালতিয়ের সম্ভবত ওয়ারেনকে বেশি বেশি খেলার সুযোগ করে দিয়ে তাঁকে প্রস্তুত করে তুলতেই চ্যাম্পিয়নস লিগে কাল রাতে মাঠে নামিয়েছিলেন। মেসি ও রামোসের পাশে তাঁকে দেখার পর অনেকের সেই অদ্ভুত অনুভূতিটা সম্পর্কে ধারণা দেওয়া যায়। চ্যাম্পিয়নস লিগে মেসির অভিষেক ২০০৪ সালে আর ওয়ারেনের জন্ম ২০০৬ সালে। অর্থাৎ, মেসির চ্যাম্পিয়নস লিগে খেলার সময়ের চেয়েও কম ওয়ারেনের বয়স। শুধু কী তা-ই! রামোসের কথাই ধরুন। ২০০৬ সালের ৮ মার্চ-ওয়ারেন যেদিন জন্ম নিয়েছিলেন, সেদিন এই চ্যাম্পিয়নস লিগেই রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে আর্সেনালের মুখোমুখি হয়েছিলেন রামোস।

আরও পড়ুন