বাংলাদেশের ফুটবল অঙ্গনে সবার মনোযোগ ভালোভাবেই কেড়ে নিয়েছেন শেখ মোরছালিন। দেশের এই উদীয়মান ফুটবলার এরই মধ্যে পরিণত হয়েছেন তারকায়। দেশের ফুটবলে যে তারকাসংকট, সেটি মোরছালিন পূরণ করতে পারবেন বলেই আশা সবার। সে কারণেই প্রত্যাশার চাপটাও যেন হঠাৎ করেই বেড়ে গেছে বসুন্ধরা কিংসের এই ফুটবলারের ওপর। আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে দুটি সহজ সুযোগ নষ্ট করেছিলেন। গোলশূন্য ড্র হওয়া সেই ম্যাচে ওই মিস তাঁকে হঠাৎ করেই ‘খলনায়কে’ পরিণত করেছিল। কিন্তু দ্বিতীয় ম্যাচে গোল করে প্রত্যাশার প্রতিদান দিয়েছেন তিনি। তিনি এখন চান ভুলভ্রান্তি কমিয়ে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের অপরিহার্য খেলোয়াড় হিসেবে নিজেকে তৈরি করতে।
আফগানিস্তানের বিপক্ষে নিজের তৃতীয় আন্তর্জাতিক গোলটি করে বেশ উচ্ছ্বসিতই মোরছালিন, ‘প্রথম ম্যাচে একটি সহজ সুযোগ নষ্ট করেছি। খুব খারাপ লেগেছে। আমি মিস না করলে হয়তো বাংলাদেশ সেদিন ম্যাচটা জিতেই যেত। তবে দ্বিতীয় ম্যাচে গোলটা করে খুব ভালো লাগছে।’
গত জুনে ভারতের বেঙ্গালুরুতে অনুষ্ঠিত সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে দুটি গোল মোরছালিনকে রাতারাতি তারকায় পরিণত করে। মালদ্বীপের বিপক্ষে দ্বিতীয় ম্যাচে গোল করেন। দুর্দান্ত এক গোলে নিজেকে আরও রাঙান ভুটানের বিপক্ষে ম্যাচেও। দীর্ঘদিন পর সাফের সেমিফাইনালে ওঠা বাংলাদেশকে ফাইনালেও তুলতে পারতেন এই তরুণ তুর্কি। সেমিফাইনালে কুয়েতের বিপক্ষে প্রথম মিনিটেই দারুণ একটি সুযোগ পেয়েছিলেন। কিন্তু সেটি কাজে লাগাতে পারেননি। কুয়েতের বিপক্ষে গোলটি অসম্ভব পোড়ায় মোরছালিনকে, ‘কুয়েতের বিপক্ষে সেই মিসটি মনে করতে চাই না। হয়তো যত দিন খেলব, সেটা আমাকে তাড়া করে বেড়াবে। অমন সুযোগ! আমি সত্যিই দুঃখিত। গোলটা করতে পারলে আমরা হয়তো ফাইনালের পথে অনেক দূর এগিয়ে যেতাম।’
কুয়েতের বিপক্ষে ওই মিস কিংবা আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথম প্রীতি ম্যাচের মিসের পর কোচ হাভিয়ের কাবরেরা কী বলেছিলেন মোরছালিনকে, ‘কোচ আমার মিস নিয়ে বকাঝকা করেননি। তিনি সব সময় আমাকে উৎসাহিত করেন। আমার প্রতি তাঁর আস্থা আছে, এটাই বলেছেন। সেই সঙ্গে বলেছেন, খেলার মাঠে মিস হবে। কিন্তু ভুল থেকে শিক্ষা নিতে হবে। নিজের ভুলগুলো নিয়ে কাজ করতে হবে। আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচের মিসের পর সেটিই বলেছেন—ভুল থেকে শিখতে হবে। একই ভুল যেন বারবার না হয়। আমি সেই কাজই করছি। আমাকে অনেক পথ যেতে হবে। আমাকে অনেক পরিশ্রম করতে হবে।’
মোরছালিন দেশের হয়ে খেলতে চান অনেক দিন। দেশের হয়ে গোলও করতে চান অনেক। তাঁর লক্ষ্য সেটিই, ‘আমি নিয়মিত খেলে যেতে চাই দেশের হয়ে। সেটা সহজ নয়, আমি জানি। দিনের পর দিন পারফরম্যান্স করে গেলেই সেটি সম্ভব হবে। আমি গোল করতে চাই অনেক। ২০টি, ২৫টি, ৩০টি...আরও অনেক। আমি স্বপ্ন দেখি, আন্তর্জাতিক ফুটবলে দেশের হয়ে আমি অনেক গোল করব। আমাকে সবাই মনে রাখবে।’