আর্জেন্টাইন নারী ফুটবলারের পায়ে রোনালদোর ট্যাটু, কেন

আর্জেন্টিনা নারী দলের ফরোয়ার্ড ইয়ামিলা রদ্রিগেজছবি: রয়টার্স

সাত দিন আগে ইনস্টাগ্রামে নিজের একটি ছবি পোস্ট করেন ইয়ামিলা রদ্রিগেজ। আর্জেন্টিনা নারী দলের জার্সি পরা সেই ছবির একটি অংশে চোখ আটকে গিয়েছিল অনেকের। ইয়ামিলা আর্জেন্টিনা নারী জাতীয় দলের ফরোয়ার্ড। অথচ ইয়ামিলার বাঁ পায়ের হাঁটুতে কিনা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো মুখ। মানে রোনালদোর মুখচ্ছবির ট্যাটু!

আরও পড়ুন

আর্জেন্টাইনদের এটি চোখে লাগারই কথা। লিওনেল মেসি এখনো খেলছেন, তাঁকে বাদ দিয়ে আর্জেন্টিনার এক ফুটবলারের পায়ে কেন রোনালদোর ট্যাটু—এই প্রশ্ন তাই উঠছেই। সঙ্গে এখনকার পৃথিবীর রীতি অনুযায়ী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনাও। রোনালদো–মেসির দ্বৈরথ ফুটবল ইতিহাসের অনন্য এক অধ্যায়। এই নিয়ে দুজনের ভক্তদের মধ্যে ঝগড়াঝাঁটিও নৈমিত্তিক ঘটনা। সেখানে একজন আর্জেন্টাইন ফুটবলারের পায়ে রোনালদোর ট্যাটু করানো নিয়ে আলোচনা তো হবেই। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘৃণাসূচক বার্তা পাওয়াটাও অস্বাভাবিক নয়।

ইয়ামিলার শরীরে আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি ডিয়েগো ম্যারাডোনার ট্যাটুও আছে। কিন্তু রোনালদোর ট্যাটু থাকায় যেহেতু সমালোচনা হচ্ছে, সেটির জবাবটাই দিয়েছেন আর্জেন্টিনার হয়ে নারী বিশ্বকাপে অংশ নেওয়া এই ফরোয়ার্ড। গত সোমবার ইতালির বিপক্ষে আর্জেন্টিনার ১–০ গোলে হারের ম্যাচে বেঞ্চ থেকে মাঠে নামা ইয়ামিলা কাল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ছবি পোস্ট করেন। ছবিটি আসলে মেসি ও রোনালদোর গ্রাফিকস। পর্তুগালের জার্সি পরা রোনালদো মেসির কাঁধে হাত দিয়ে আছেন।

সেই ছবির ওপরে ইয়ামিলা লিখেছেন, ‘দয়া করে থামুন, আমার সময়টা ভালো যাচ্ছে না। কোন সময় বলেছি যে আমি মেসিবিরোধী? আমি যা বলিনি, তা বলা বন্ধ করুন, কারণ আমার সময়টা ভালো যাচ্ছে না। সময়টা আপনাদের (ভক্ত) জন্য খারাপ কাটছে, তা নয়, বরং নির্মমভাবে যা যা বলা হচ্ছে, সেসবের জন্য। কারও কোনো আদর্শ কিংবা পছন্দের খেলোয়াড় কি থাকতে পারে না?’

আরও পড়ুন

প্রয়াত আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি ম্যারাডোনার ট্যাটু করিয়েছেন ইয়ামিলা তাঁর বাঁ ঊরুতে। তিনি মেসিবিরোধী, এ সমালোচনা নিয়ে ইয়ামিলা বলেছেন, ‘কখনোই বলিনি আমি মেসিবিরোধী। কখনোই তা হব না। মেসি আমাদের জাতীয় দলের গ্রেট অধিনায়ক। কিন্তু বাস্তবতা হলো, ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো আমার আদর্শ ও প্রেরণা। তবে তার অর্থ এই নয় যে, আমি মেসিকে ঘৃণা করি...আমি (দুজনের মধ্যে) অন্যজনকে বেশি পছন্দ করি, যিনি আমার প্রেরণা। তাতে সমস্যা কী?’

২৫ বছর বয়সী ইয়ামিলা আরও লিখেছেন, ‘আমরা শুধু নিজের দেশের খেলোয়াড়দেরই ভালোবাসতে বাধ্য নই। দয়া করে বোঝার চেষ্টা করুন, ফুটবলে সবারই পছন্দের জায়গা আছে এবং কারও প্রশংসা করার অর্থ এই নয় যে অন্যদের খাটো করা। যথেষ্ট হয়েছে, এবার থামুন। আমার কষ্ট হচ্ছে।’

অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডে চলছে নারী বিশ্বকাপ। আর্জেন্টিনা নারী দলের হয়ে এবারই প্রথম বিশ্বকাপে খেলছেন ইয়ামিলা। ছেলেদের বিশ্বকাপে তিনবার চ্যাম্পিয়ন হলেও মেয়েদের বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হওয়া দূরে থাক, এখনো কোনো ম্যাচই জিততে পারেনি আর্জেন্টিনা। এবারও প্রথম ম্যাচেই হেরেছে। ইতালির বিপক্ষে সেই ম্যাচে হেরেছে নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার ৩ মিনিট আগে গোল খেয়ে।