২০২৬ বিশ্বকাপের অফিশিয়াল বল ‘ট্রাইওন্ডা’ সম্পর্কে জেনে নিন

বলটি বানিয়েছে অ্যাডিডাস। এ নিয়ে টানা ১৫ বারের মতো ফিফা বিশ্বকাপের বল সরবরাহ করছে বিশ্ববিখ্যাত ক্রীড়াসামগ্রী প্রস্তুতকারক এই প্রতিষ্ঠান।

২০২৬ বিশ্বকাপের অফিশিয়াল বল ট্রাইওন্ডাছবি: ফিফা

নিউইয়র্কের ব্রুকলিন ব্রিজ পার্কে জমকালো অনুষ্ঠানে একে একে হাজির হলেন পাঁচ বিশ্বকাপজয়ী—জার্মানির ইয়ুর্গেন ক্লিন্সমান, ব্রাজিলের কাফু, ইতালির আলেসান্দ্রো দেল পিয়েরো, স্পেনের জাভি হার্নান্দেজ এবং ফ্রান্সের জিনেদিন জিদান। তাঁদের সবার হাতে একটি করে ফুটবল।

জিদান এলেন সবার শেষে। সবাইকে একসঙ্গে পেয়ে নিজের মুঠোফোনে ভিডিও ধারণ করলেন কাফু। এটি তো আর যেনতেন মুহূর্ত নয়! কিছুক্ষণ পরেই অনুষ্ঠানের সঞ্চালক ঘোষণা করলেন, ‘এখন আমি আপনাদের সামনে ২০২৬ ফিফা বিশ্বকাপের অফিশিয়াল ম্যাচ বল ট্রাইওন্ডাকে উপস্থাপন করছি।’

ক্লিন্সমান, কাফু, জিদান, দেল পিয়েরো এবং জাভি—পাঁচ বিশ্বকাপজয়ী ২০২৬ বিশ্বকাপের বল উন্মোচন করেছেন
ছবি: এএফপি

আলোঝলমলে ব্রুকলিন ব্রিজ পার্কের চারপাশ থেকে তখন শুধুই করতালির আওয়াজ। কাল রাতে এভাবেই ২০২৬ বিশ্বকাপের বল উন্মোচন করেছে বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা।

ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনো বলেছেন, ‘আপনাদের সামনে ট্রাইওন্ডা উপস্থাপন করতে পেরে আমি খুশি ও গর্বিত। বিশ্বকাপের জন্য অ্যাডিডাস আরেকটি আইকনিক বল তৈরি করেছে, যার নকশায় কানাডা, মেক্সিকো ও যুক্তরাষ্ট্রের ঐক্য ও উচ্ছ্বাস ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।’

ট্রাইওন্ডা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক—

বলটি বানিয়েছে অ্যাডিডাস। এ নিয়ে টানা ১৫ বারের মতো ফিফা বিশ্বকাপের বল সরবরাহ করছে বিশ্ববিখ্যাত ক্রীড়াসামগ্রী প্রস্তুতকারক এই প্রতিষ্ঠান।

ট্রাইওন্ডা তৈরিতে ফুটবলে সবচেয়ে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করেছে অ্যাডিডাস
ছবি: এএফপি

যেহেতু যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকো যৌথভাবে ২০২৬ বিশ্বকাপ আয়োজন করছে, তাই বলটিতে এই তিন দেশের ঐক্য তুলে ধরা হয়েছে। এতে ব্যবহার করা হয়েছে ফুটবল ইতিহাসের সবচেয়ে আধুনিক প্রযুক্তি।

ট্রাইওন্ডা মানে কী?

ট্রাইওন্ডা নামটি এসেছে দুটি শব্দ থেকে—ট্রাইওন্ডাট্রাই মানে তিন আর ওন্ডা মানে ঢেউ। বলে লাল, সবুজ ও নীল—এই তিন রঙের ঢেউ দিয়ে আয়োজক দেশগুলোকে বোঝানো হয়েছে।

বলের নকশায় তিন দেশের জাতীয় প্রতীকও আছে। যুক্তরাষ্ট্রের তারকা, কানাডার ম্যাপল পাতা এবং মেক্সিকোর ইগল।

বলের ওপর এসব প্রতীক গ্রাফিকস আকারে ও খোদাই করা হয়েছে। বলটিতে সোনালি রঙের ছোঁয়াও আছে। এর মাধ্যমে বিশ্বকাপ ট্রফির প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা হয়েছে এবং মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে, এই বল ফুটবলের সর্ববৃহৎ মঞ্চের জন্য।

২০২৬ বিশ্বকাপের বল ট্রাইওন্ডা হাতে ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনো
ছবি: ফিফা

ট্রাইওন্ডায় প্রযুক্তির ব্যবহার

বলে নতুন চার-প্যানেল নকশা আছে, যা এটিকে আরও স্থির এবং টেকসই করেছে। পুরু সেলাই এবং ঠিকঠাক রেখাগুলো বাতাসে বলের চলাচল স্থিতিশীল রাখবে। খোদাই করা প্রতীকগুলো বল ভেজা অবস্থায়ও ভালো গ্রিপ করা নিশ্চিত করবে।

আরও পড়ুন

সবচেয়ে বড় নতুনত্ব হলো অ্যাডিডাসের কানেক্টেড বল প্রযুক্তি। বলের (ভেতরে) একপাশে থাকা ৫০০ হার্জ সেন্সর ভিএআর ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদের রিয়েল–টাইম তথ্য দেব।

এর ফলে দ্রুততম সময়ের মধ্যে অফসাইড ধরা যাবে। এ ছাড়া হ্যান্ডবল বা ফাউলের মতো বিতর্কিত পরিস্থিতি সহজেই চিহ্নিত করা যাবে।

ট্রাইওন্ডা নিয়ে কারিকুরি করছেন বর্তমান বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনার অধিনায়ক লিওনেল মেসি
ছবি: ইনস্টাগ্রাম

অ্যাডিডাসের মহাব্যবস্থাপক স্যাম হ্যান্ডি বলটি নিয়ে বলেছেন, ‘প্রতিটি ছোটো জিনিসই বড় প্রভাব ফেলে। খোদাই করা নকশা, স্তরযুক্ত গ্রাফিকস এবং উজ্জ্বল রং এই বলকে অন্যগুলোর থেকে আলাদা করেছে। এখন পর্যন্ত এটাই আমাদের তৈরি করা সবচেয়ে সুন্দর এবং আকর্ষণীয় ফিফা বিশ্বকাপের বল।’