কোপা আমেরিকা ফাইনালে বিশৃঙ্খলা: দর্শকদের সঙ্গে ১৭১ কোটি টাকায় সমঝোতা

গত বছর কোপা আমেরিকার ফাইনালে টিকিট হাতে নিয়েও অনেক দর্শক ঢুকতে পারেননি স্টেডিয়ামে।এএফপি

ফ্লোরিডার হার্ড রক স্টেডিয়ামে গত বছরের জুলাইয়ের সেই রাত মনে আছে? কোপা আমেরিকার ফাইনাল। কলম্বিয়াকে ১-০ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল আর্জেন্টিনা। কিন্তু ম্যাচ শুরুর আগেই মাঠের বাইরে হয়ে যায় এক অদ্ভুত নাটক। দর্শকের ঢল সামলাতে হিমশিম খায় আয়োজকেরা। বিশৃঙ্খলার কারণে ফাইনাল শুরু হতে দেরি হয় এক ঘণ্টার বেশি। টিকিট হাতে নিয়েও অনেক দর্শক ঢুকতে পারেননি স্টেডিয়ামে। কেউ কেউ আবার নিরাপত্তাহীনতার কথা ভেবে, ভিড়-ধাক্কার ভয় কাটাতে আগেভাগেই স্টেডিয়াম ছেড়ে চলে যান।

ফাইনালে এমন অব্যবস্থাপনার কারণে ম্যাচের কয়েক দিন পরই শুরু হয় মামলা-ঝড়। দক্ষিণ আমেরিকা ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা কনমেবল ও হার্ড রক স্টেডিয়াম কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা করতে থাকেন ক্ষুব্ধ সমর্থকেরা। অভিযোগ ছিল, তাঁরা টিকিট কিনেছিলেন, কিন্তু দর্শকের ভিড় নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার কারণে মাঠে প্রবেশ করতে পারেননি। ইএসপিএন জানিয়েছিল, প্রতিটি মামলায় এক লাখ ডলারের বেশি ক্ষতিপূরণ দাবি করা হয়।

আরও পড়ুন

শেষ পর্যন্ত সমঝোতায় পৌঁছেছে দুই পক্ষ। বিবাদীদের তালিকায় ছিল কনমেবল, কনক্যাকাফ, বেস্ট সিকিউরিটি আর স্টেডিয়ামের মালিক-পরিচালক সাউথ ফ্লোরিডা স্টেডিয়াম এলএলসি। শর্ত অনুযায়ী, তারা সম্মিলিতভাবে ১ কোটি ৪০ লাখ ডলার (প্রায় ১৭১ কোটি ৬৭ লাখ টাকা) জমা দেবে একটি তহবিলে। ফাইনালের বিশৃঙ্খলায় ক্ষতিগ্রস্তরা সেখান থেকে ক্ষতিপূরণ পাবেন। তবে কে কতটা অর্থ পাবেন, তা নির্ভর করবে কতজন ক্ষতিপূরণ দাবি করেন, তার ওপর।

গত বছর কোপা আমেরিকার ফাইনালে দর্শকের ঢল সামলাতে হিমশিম খায় আয়োজকেরা।
এএফপি

মামলার বাদীপক্ষ ও ক্লাস কাউন্সিলের পক্ষে আইনজীবী জেফ নিউসাম বলেছেন, ‘সমর্থকদের পাশে দাঁড়ানোই ছিল এই মামলার উদ্দেশ্য। আজ আমরা গর্বের সঙ্গে বলতে পারি, কোপা আমেরিকা ক্লাস-অ্যাকশন মামলার বাদীদের জন্য সত্যিকারের স্বস্তি এনে দিতে পেরেছি।’ তিনি আরও যোগ করেন, ‘আমরা এখন আদালতে সমঝোতা উপস্থাপনের অপেক্ষায় আছি।’

আরও পড়ুন

কনক্যাকাফ, হার্ড রক স্টেডিয়াম কর্তৃপক্ষ কিংবা কনমেবল—কেউই এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
ফাইনালের দিন টিকিটবিহীন অনেক দর্শক নিরাপত্তাব্যূহ ভেঙে ঢোকার চেষ্টা করেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুরো ভেন্যু লকডাউন করে দেওয়া হয়। কিন্তু বাইরের ভিড়ে অনেকে চাপা পড়ার আশঙ্কা দেখা দিলে আবারও গেট খুলে দেওয়া হয়। এতে টিকিট থাকুক বা না থাকুক—কিছু দর্শক ঢুকে পড়েন। ধারণক্ষমতা পূর্ণ হয়ে গেলে আবারও গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়।

মায়ামি পুলিশ কোপার ফাইনালে বিশৃঙ্খলার ঘটনায় ২৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছিল
এএফপি

ফলে অনেক টিকিটধারী দর্শক আর ঢুকতে পারেননি। ইএসপিএন জানিয়েছিল, এসব কারণে ফাইনাল শুরু হতে দেরি হয় ৮২ মিনিট।
মায়ামি পুলিশ জানায়, সেদিন ২৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং ৫৫ জনকে বের করে দেওয়া হয় স্টেডিয়াম থেকে। অগ্নিনির্বাপক কর্তৃপক্ষ জানায়, তারা সেদিন ১২০টি ঘটনায় সাড়া দেয়, যার মধ্যে ১১৬টি ছিল চিকিৎসা-সংক্রান্ত।

আরও পড়ুন