আক্ষেপ নিয়েই অবসরে ফুটবলের আশরাফুল
দুই দশকের বেশি সময় ফুটবলের সঙ্গেই কেটেছে। ক্লাব ও বাংলাদেশ জাতীয় দল মিলিয়ে পোস্টের নিচে থেকে ছড়িয়েছেন সৌরভ। হাতে উঠেছে জাতীয় দলের অধিনায়কের আর্মব্যান্ডও। বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক গোলরক্ষক আশরাফুল ইসলাম (রানা) আজ ফুটবলকে বিদায় বলে দিলেন। বিদায়বেলায় তাঁর কণ্ঠে ছিল খানিকটা আক্ষেপের সুর।
২০১৫ থেকে ২০২১ পর্যন্ত বাংলাদেশের জার্সিতে খেলেছেন আশরাফুল। এই সময়ে ২৫ ম্যাচে গোলবার সামলে নয়টিতে ক্লিন শিট রেখেছেন। এরপর আরও দুই বছর জাতীয় দলে ডাক পেলেও ম্যাচ খেলার সুযোগ পাননি। তখনই আশরাফুল চেয়েছিলেন অবসর নিতে। কোচকে বিষয়টি জানালেও সেটা আর হয়ে ওঠেনি। আজ ব্রাদার্সের মাঠে দাঁড়িয়ে সেই পুরোনো কথার ঝাঁপিই খুললেন ৩৭ বছর বয়সী এই গোলকিপার, ‘২০২৩ সাল পর্যন্ত জাতীয় দলে ডাক পেতাম। যদিও সেই সময় জিকোই খেলেছে। তখন মনে হয়েছিল, জাতীয় দল থেকে আনুষ্ঠানিক অবসরের ঘোষণা দিই। যাতে নতুনরা সুযোগ পায়। কোচকে বলেছিলাম, কিন্তু সেই সুযোগটা হয়ে ওঠেনি। এ নিয়ে খানিকটা আক্ষেপ রয়েছে তাই ক্লাব পর্যায়েই আনুষ্ঠানিকভাবে করছি।’
আগামীকাল প্রিমিয়ার লিগে মোহামেডানের বিপক্ষে পেশাদার ক্যারিয়ারের শেষ ফুটবল ম্যাচটা খেলবেন ব্রাদার্স ইউনিয়নে খেলা আশরাফুল। সাদা–কালোদের সঙ্গে তাঁর অনেক স্মৃতি। ২০১৫-২০১৬ মৌসুমে ক্লাবটির হয়ে খেলেছিলেন। তাই এমন মাহেন্দ্রক্ষণে মোহামেডানকেই বেছে নিয়েছেন আশরাফুল, ‘মোহামেডানের হয়ে আমার ফুটবল ক্যারিয়ার শুরু। শেষ ম্যাচটা মোহামেডানের সঙ্গেই খেলতে চাই। আবার মোহামেডান এবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। তাই মোহামেডানের ম্যাচ দিয়েই ইতি টানছি ক্যারিয়ারের।’
২০০৩ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী থেকে ফুটবলার হিসেবে পথচলা শুরু। ২০১৪ সালে সেনাবাহিনীর চাকরি ছেড়ে পুরোদস্তুর ফুটবলার বনে যান। ২০১৫ সালের ১৯ ডিসেম্বর নেপাল ম্যাচ দিয়ে জাতীয় দলে অভিষেক হয় তাঁর। ২০১৬ সালে পান অধিনায়কের দায়িত্ব। এরপর এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের প্লে–অফে হারের পর ১৪ মাসের বেশি ফুটবলের বাইরে ছিল বাংলাদেশ। সে জন্য অধিনায়ক থাকার পরও দুটির বেশি ম্যাচে নেতৃত্বে থাকা হয়নি। অবসরের এই সময়ে সেই অভিজ্ঞতার কথাও বললেন আশরাফুল, ‘২০১৯ সালে কলকাতার সল্টলেকে ৬০ হাজার ভারতীয় দর্শকের সামনেই ভারতের সঙ্গে ড্র করে বাংলাদেশ। এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের সেই ম্যাচটিই আমার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে সুখের স্মৃতি। আর সবচেয়ে কষ্টের ২০১৬ সালে ভুটানে এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের প্লে–অফে হেরে যাওয়া। সেই হারের পর বাংলাদেশ ১৪ মাসের বেশি আন্তর্জাতিক ফুটবলের বাইরে ছিল।’
ফুটবল ছাড়লেও এই খেলার সঙ্গে সম্পর্কটা পুরোপুরি ছিন্ন করতে চান না আশরাফুল। স্বপ্ন দেখেন একদিন জাতীয় দলের গোলকিপার কোচ হওয়ার, ‘আমি ইতিমধ্যে ‘‘বি’’ লাইসেন্স কোচিং কোর্স করেছি, গোলরক্ষক কোর্সও করব। সামনে হয়তো কোনো পর্যায়ে কোচিং করাতে পারি। সাবেক জাতীয় ফুটবলার হিসেবে অবশ্যই স্বপ্ন দেখি, একদিন জাতীয় দলের গোলরক্ষক কোচ হবো।’