রবসন আর মিগুয়েলের মধ্যে আসলে কী ঘটেছিল

কিংসের দুই ব্রাজিলিয়ান রবসন আর মিগুয়েলের মধ্যে কী ঘটেছিল কালছবি: সংগৃহীত

শনিবার কিংস অ্যারেনায় বসুন্ধরা কিংস আর ঢাকা আবাহনী লিমিটেডের বড় ম্যাচের ফল ছাপিয়েও আলোচনায় কিংসের দুই ব্রাজিলিয়ান রবসন দা সিলভা ও মিগুয়েল ফেরেইরার মধ্যে বচসা। ম্যাচের ৭৯ মিনিটের মাথায় মাঠের মধ্যেই বচসায় জড়িয়ে পড়েন কিংসের দুই সেরা ফুটবলার। এর মাত্রা এতটাই ছিল যে রবসন অধিনায়কত্বের আর্মব্যান্ড ছুড়ে ফেলে মাঠ থেকেই বেরিয়ে যেতে চাইছিলেন। কিংসের অন্য ফুটবলাররা তাঁকে রীতিমতো জাপটে ধরে মাঠ ছাড়া থেকে নিবৃত্ত করেন। একই দলের দুই বিদেশি ফুটবলারের মধ্যে ঝগড়া বাংলাদেশের ঘরোয়া ফুটবলে নজিরবিহীন।

কালকের ঘটনাটি অবশ্য হালকা করেই দেখছেন স্প্যানিশ কোচ অস্কার ব্রুজোন। প্রথম আলোকে তিনি বলেছেন, ‘ব্যাপারটা যেভাবে দেখা হচ্ছে, আসলে তা নয়। দুজনের মধ্যে কথা–কাটাকাটি হয়েছে। সেটি সেখানেই শেষ হয়ে গেছে। দুজনই কিংসের গুরুত্বপূর্ণ ফুটবলার। দুজনই দুজনের খুব ভালো সতীর্থ।’

কাল আবাহনীর বিপক্ষে ম্যাচে সতীর্থ ব্রাজিলিয়ান মিগুয়েলের সঙ্গে বচসায় জড়ান রবসন
ছবি: বাফুফে

দুজনই অত্যন্ত উঁচু মানের ফুটবলার। দুজনই কিংসের নানা সাফল্যে রাখছেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। কাল আবাহনীর বিপক্ষে তাঁরা যখন বচসায় জড়ালেন, তখন দলও এগিয়ে আছে ২-১ গোলে। যদিও ওই সময় আবাহনী কিংসের ওপর যথেষ্ট চাপ সৃষ্টি করে খেলছিল। আবাহনীর দুই বিদেশি ফরোয়ার্ড ওয়াশিংটন আর কর্নেলিয়াস স্টুয়ার্ট বারবার কিংসের রক্ষণ ভেঙেও গোল করতে পারছিলেন। ওই পরিস্থিতিতে চাপ থেকেই এমন ঘটনায় রবসন আর মিগুয়েল জড়ালেন কি না, সেটি নিয়েও আলোচনা হচ্ছে। ম্যাচের ৭৯ মিনিটে মিগুয়েলের কাছ থেকে প্রত্যাশিত একটি পাস না পাওয়াতেই রবসন মেজাজ হারিয়েছিলেন। এ ঘটনায় এক মিনিট খেলা বন্ধও ছিল।

ব্যাপারটাকে বড় করে দেখতে চান না কোচ অস্কার ব্রুজোন
ছবি: প্রথম আলো

ব্যাপারটি নিয়ে বসুন্ধরা কিংসের কর্মকর্তারা মুখে কুলুপই এঁটেছেন। কেউই এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে রাজি নন। তবে ক্লাবের একটি সূত্র জানাচ্ছে, এ ঘটনায় কর্মকর্তারাও রীতিমতো হতবাক। দুজনই ব্রাজিলের ফুটবলার। দুজনের সম্পর্ক কর্মকর্তাদের জানামতে যথেষ্ট ভালো। একই সঙ্গে তাঁরা চলেন, ফেরেন। কিন্তু কাল মাঠে তাঁরা দুজন কেন এভাবে মেজাজ হারালেন, সেটি কিছুতেই বুঝতে পারছেন না কেউই। কাল আবাহনীর বিপক্ষে ম্যাচ জিতেও কিংস শিবির ছিল থমথমে। নীরবে মাঠ ত্যাগ করে তাঁরা ড্রেসিংরুমে নিজেদের বন্দী করেন। সেখানেই এক দফা রুদ্ধদ্বার বৈঠক হয়েছে। সাংবাদিকেরা অপেক্ষায় থাকলেও তাঁরা কোনো কথা বলেননি।

কিংসের অনেক সাফল্যের মধ্যমনি মিগুয়েল
ছবি: সংগৃহীত

কিংসের বিদেশি ফুটবলারদের আচরণ নিয়ে আগে থেকেই প্রশ্ন আছে। এর আগে নিজেদের মধ্যে না হলেও প্রতিপক্ষ দলের খেলোয়াড়দের সঙ্গে মাঠেই তাঁদের বাজে আচরণ করতে দেখা গেছে। কিছুদিন আগেই রহমতগঞ্জের বিপক্ষে লিগের এক ম্যাচে মিগুয়েল প্রতিপক্ষের এক খেলোয়াড়ের গলা চেপে ধরেছিলেন। যদিও তাঁকে সেই ঘটনায় বড় কোনো শাস্তি পেতে হয়নি।

কিংসের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, রবসন ও মিগুয়েলের এ ঘটনা মোটেও ভালো চোখে দেখছেন না ক্লাবের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তারা। আগামীকাল সোমবার দুই খেলোয়াড়ের সঙ্গে বসে পুরো ঘটনা পর্যালোচনাও করা হবে। প্রয়োজনে ব্যবস্থাও নেওয়া হতে পারে।