এমবাপ্পের সঙ্গে লাগতে গেল না কেএফসি

ফ্রান্সের তারকা কিলিয়ান এমবাপ্পেছবি: এএফপি

আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন কেএফসি ফ্রান্সের সহসভাপতি অ্যালেইন বেরাল। স্পোর্ট বিজনেস ক্লাব ওয়েবসাইটে তিনি বলেছিলেন, কেএফসি ফ্রান্স আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ভাবছে। তবে এ ব্যবস্থা কিলিয়ান এমবাপ্পে, নাকি ফ্রান্স ফুটবল ফেডারেশনের বিরুদ্ধে নেওয়া হবে, সে বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছুই বলেননি তখন।

পরে কেএফসি ফ্রান্স জানায়, এই জ্যেষ্ঠ নির্বাহীর কথায় প্রতিষ্ঠানের দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন ঘটেনি। অর্থাৎ, অ্যালেইন বেরালের মন্তব্যটা ব্যক্তিগত, কেএফসি ফ্রান্স এর দায় নেবে না।

এমবাপ্পে এর আগে ফ্রান্স জাতীয় দলের অনুশীলনে কিছু স্পনসর প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ফটোশুট থেকে অন্যান্য কার্যক্রমে অংশ নেওয়ায় আপত্তি জানান। ফাস্ট ফুড চেইন শপ এবং বেটিংয়ের সঙ্গে জড়িত কিছু প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তিনি এবং ফ্রান্স জাতীয় দলের আরও কিছু খেলোয়াড় নিজেদের জড়াতে চাননি। এতে তাঁদের ব্যক্তিগত স্পনসর চুক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে মন্তব্যও করা হয়।

পরে এমবাপ্পে-ভারানদের সঙ্গে বসে খেলোয়াড়দের ইমেজ–স্বত্ব চুক্তির কিছু বিষয় পাল্টাতে রাজি হয় ফ্রান্স ফুটবল ফেডারেশন (এফএফএফ)। এরপর ঘটনাটা সেখানেই থেমে যাওয়ার কথা। কিন্তু অ্যালেইন বেরালের মন্তব্যের পর আবারও বিতর্ক শুরু হয়। স্পোর্ট বিজনেস ক্লাব ওয়েবসাইটকে তিনি বলেন, ‘আমরা টাকা দিয়েছি। দরকার হলে নিজেদের অধিকার আদায় করে নেব।’

পরে সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে কেএফসি ফ্রান্সের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘গতকাল যে কথা বলা হয়েছে এবং তা সংবাদমাধ্যমেও এসেছে, সে জন্য অনুশোচনা করছে কেএফসি ফ্রান্স। এটা ব্যক্তিগত মতামত। প্রতিষ্ঠানের অবস্থানের সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই। কেএফসি ফ্রান্স আরও জানাচ্ছে, অ্যালেইন বেরাল প্রতিষ্ঠানের মুখপাত্র হিসেবে কথা বলেননি। ফ্রান্স ফুটবল ফেডারেশনের স্পনসর হওয়া নিয়ে গর্ব করে কেএফসি। প্রতিষ্ঠানটি বিশ্বাস করে, এফএফএফ এ নিয়ে খেলোয়াড়দের সঙ্গে কথা বলে সমাধান বের করবে, আর ফ্রান্সে এমবাপ্পের সমর্থকদের মধ্যে বেশ ওপরের দিকেই থাকবে কেএফসি।’

সূত্র মারফত ইএসপিএনের আগে জানিয়েছিল, জাতীয় দল আন্তর্জাতিক সূচিতে থাকতে কোন কোন স্পনসর প্রতিষ্ঠান খেলোয়াড়দের সঙ্গে সংযুক্ত থাকবে, সে বিষয়ে নিজস্ব ইচ্ছা-অনিচ্ছা আছে এমবাপ্পের। এ নিয়ে ফরাসি তারকার উদ্ধৃতিও প্রকাশ করে ইএসপিএন, ‘ফরাসি ফেডারেশন খেলোয়াড়দের ইমেজ–স্বত্ব চুক্তি পাল্টাতে না চাওয়ায় আমি ফটোশুটে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বিশ্বকাপের আগেই বিষয়টি সুরাহা করতে অনুরোধ করেছিলাম। কিন্তু দুর্ভাগ্য, কোনো সমাধানে পৌঁছানো যায়নি।’

এরপরই ঘটনার মোড় ঘুরতে শুরু করে। সোমবার অনুশীলনের আগে হুগো লরিস, রাফায়েল ভারান ও এমবাপ্পেকে নিয়ে বৈঠকে বসেন ফ্রান্স ফুটবল ফেডারেশনের (এফএফএফ) সভাপতি নোয়েল দি গ্রেত। খেলোয়াড়েরা সেখানে এমবাপ্পের সিদ্ধান্তের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন।

বৈঠকে দুই পক্ষই ইমেজ–স্বত্ব নিয়ে ফেডারেশনের নীতি পাল্টানোর বিষয়ে একমত হয়। এরপর জাতীয় দলের সঙ্গে স্পনসর প্রতিষ্ঠানগুলোর বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশ নিতে সম্মত হন এমবাপ্পে। এফএফএফ এরপর বিবৃতিতে জানায়, ইমেজ–স্বত্ব চুক্তি যত দ্রুত সম্ভব পুনর্মূল্যায়ন করা হবে, ‘দলের নেতৃত্বে থাকা খেলোয়াড়দের সঙ্গে এফএফএফ সভাপতি, প্রধান কোচ ও ফেডারেশনের বিপণন বিভাগের ইতিবাচক আলোচনার পর যত দ্রুত সম্ভব খেলোয়াড়দের ইমেজ–স্বত্ব চুক্তি পুনর্মূল্যায়ন করা হবে।’