বিশ্বকাপ মঞ্চ কাজে লাগাতে মরিয়া ফিলিস্তিনিরাও

তিউনিসিয়ার সমর্থকরা ফিলিস্তিনের পক্ষে ব্যানার উঁচিয়ে ধরেনছবি: টুইটার

বিশ্বকাপ আয়োজক কাতারের মানবাধিকার ও সমকামিতা-বিদ্বেষের বিরুদ্ধে মুখে হাত দিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন জার্মানির ফুটবলাররা। এ ছাড়া ইরানজুড়ে চলা নারী অধিকার আন্দোলনের পক্ষে অবস্থান জানাতে গিয়ে প্রথম ম্যাচে জাতীয় সংগীতে ঠোঁট মেলাননি ইরানের ফুটবলাররা।

এ দুই দেশের মতো বিশ্বকাপ মাঠে নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরার সুযোগ নেই ফিলিস্তিনিদের। এশিয়ার বাছাইপর্ব উতরাতে না পারায় মধ্যপ্রাচ্যের দেশটি কাতারের টিকিট কাটতে পারেনি।

তবে বছরের পর বছর ধরে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে লড়াই করে চলা ফিলিস্তিন অবস্থান জানান দেওয়ার ন্যূনতম সুযোগটিও হাতছাড়া করছে না। ফিলিস্তিনের পতাকা ও পতাকার রঙে সজ্জিত পোশাক পরে দোহার স্টেডিয়াম এলাকায় ঘোরাফেরা করছেন ফিলিস্তিনিরা।

বিশ্বকাপে ফিলিস্তিনিদের উপস্থিতিকে আরেক ধাপ এগিয়ে দিচ্ছে তিউনিসিয়া।

উত্তর আফ্রিকার দেশটি কাতার বিশ্বকাপে ‘ডি’ গ্রুপে খেলছে। ২২ নভেম্বর এডুকেশন সিটি স্টেডিয়ামে ডেনমার্কের বিপক্ষে ম্যাচের সময় গ্যালারিতে ফিলিস্তিনের পক্ষে ব্যানার ওড়ান তিউনিসিয়ার সমর্থকেরা। ব্যানারে লেখা ‘ফ্রি প্যালেস্টাইন’। আজ আল জানুব স্টেডিয়ামে তিউনিসিয়া-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচের সময়ও একই ব্যানার তুলে ধরেন তাঁরা।

গ্যালারিতে ফিলিস্তিনের পতাকা তুলে ধরেন সমর্থকরা
ছবি: এএফপি

কাতারভিত্তিক টিভি চ্যানেল আল–জাজিরার খবরে বলা হয়, খেলা দেখতে আসা ও দোহায় অবস্থানরত বিপুলসংখ্যক ফিলিস্তিনি বিশ্বকাপকে বিশ্ববাসীর মনোযোগ আকর্ষণের মাধ্যম হিসেবে বেছে নিয়েছেন। তাঁদের কেউ ফিলিস্তিনের পতাকা নিয়ে ঘুরছেন, কেউ পতাকার রঙে সজ্জিত পোশাক পরেছেন।

আরও পড়ুন

ফিলিস্তিনের মানচিত্র আঁকা একটি টি-শার্ট পরিধান করা বাদের নামের এক ফিলিস্তিনি আল–জাজিরাকে বলেন, ‘বিশ্বকাপ আমাদের জন্য কথা বলার মঞ্চ। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ কাতারে এসেছে। অনেকে আমাদের দেখে কাছে এসে জিজ্ঞেস করে কোন দেশ? এটা আমাদের মাতৃভূমিকে তুলে ধরার সুযোগ করে দেয়। তাদের আমাদের ইতিহাস আর সংস্কৃতির কথা শোনায়।’

শুধু পোশাক বা কথা বলার মাধ্যমেই নয়, দেশাত্মবোধক গানের সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়ে ও নেচেও মানুষের মনোযোগ টানার চেষ্টা করছেন ফিলিস্তিনিরা। মরক্কো, তিউনিসিয়া, মিসর ও কাতারের সমর্থকেরাও ফিলিস্তিনের পক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছেন বলে জানান বাদের, ‘এমন অনেকেই আছেন, যাঁরা ফিলিস্তিনি নন, কিন্তু আমাদের গান শুনে ও পতাকা দেখে এগিয়ে আসেন। আমাদের যন্ত্রণা অনুভব করে মুসলিম হিসেবে তারাও সমর্থন দেন।’

আরও পড়ুন

ফিলিস্তিনের মতো ইসরায়েলের ফুটবল অনুরাগীরাও কাতারে বিশ্বকাপ দেখতে গেছেন। কাতারের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক না থাকলেও বিশ্বকাপের জন্য দেশটির নাগরিকদের দোহায় প্রবেশের সুযোগ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

তেল আবিব থেকে দোহায় চালু হওয়া বিশেষ ফ্লাইটে একসঙ্গে বিশ্বকাপ দেখতে যেতে পারছেন ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের নাগরিকেরা।