রিয়াল–আতলেতিকো, ডাকনামেও গল্পের ছড়াছড়ি
খেলার মাঠে খেলা তো হয়ই, এর বাইরে হয় বিচিত্র অনেক কিছুই। মাঠে ও মাঠের বাইরের বিচিত্র সব ঘটনা নিয়েই এ আয়োজন।
ফুটবল দলগুলোকে ডাকনামে ডাকার চল নতুন কিছু নয়। তবে রিয়াল মাদ্রিদ ও আতলেতিকো মাদ্রিদের ডাকনামগুলোর পেছনে আছে মজার সব গল্প।
রিয়াল মাদ্রিদের সবচেয়ে প্রচলিত ডাকনাম খুব সরল—‘লস ব্লাঙ্কোস’ বা ‘লস মেরেঙ্গেস’। দুটি নামই সাদা ঝকঝকে জার্সির সঙ্গে মিলিয়ে রাখা। ফরাসি উৎসের মিষ্টান্ন ‘মেরেং’–এর সাদা ডিম ও ক্রিমের সঙ্গে প্রথম মিল খুঁজে বের করেন মাতিয়াস প্রাত্স ক্যানেতে নামের ১৯৫০ ও ’৬০-এর দশকে বিখ্যাত এক ধারাভাষ্যকার।
রিয়ালের আরও একটি ডাকনাম আছে—‘লস ভিকিঙ্গোস’ বা ভাইকিংস। তবে এই নামের ইতিহাস নিয়ে বিতর্ক আছে। কেউ বলেন, ১৯৬০ সালের ইউরোপিয়ান কাপ ফাইনালে আইনট্রাখট ফ্রাঙ্কফুর্টকে ৭-৩ গোলে হারানোর পর দ্য টাইমসের রিপোর্টের শুরু হয়েছিল এভাবে, ‘ভাইকিংরা যেমন ইউরোপ ঘুরে সবকিছু ধ্বংস করত, রিয়ালও তেমন করছে।’ সেখান থেকেই ‘ভাইকিংস’ নামটা এসেছে।
আবার আরেক দল মনে করে, ১৯৭০-এর দশকে রিয়ালের দলে গুন্টার নেতজার, পল ব্রাইটনার, হেনিং ইয়েনসেন ও উলি স্টিলিকের মতো লম্বা-সোনালি চুলের জার্মান-ডেনিশ খেলোয়াড় আসার পর প্রতিবেশী ক্লাব আতলেতিকো মাদ্রিদের সমর্থকেরাই প্রথম ‘লস ভিকিঙ্গোস’ বা ভাইকিংস বলে ডাকতে শুরু করেন।
একই সময়ে আতলেতিকোকে ‘লস ইন্ডিওস’ ডাকা শুরু করেন রিয়ালের সমর্থকেরা। কারণ, আতলেতিকো দলে তখন ছিলেন আর্জেন্টাইন রুবেন আয়ালা, রুবেন ‘পানাদেরো’ দিয়াস ও ব্রাজিলিয়ান লুইস পেরেইরা, লেভিনিয়ার মতো বেশ কিছু দক্ষিণ আমেরিকান খেলোয়াড়। এখান থেকেই ‘ইন্ডিওস’ নামের প্রচলন। আমেরিকান আদিবাসীদের ইউরোপীয়রা ভুল করে ইন্ডিয়ান ডাকত, সেই থেকেই এ নামকরণ।
প্রতিপক্ষের দেওয়া নামটা পছন্দই হয়ে যায় আতলেতিকোর। দলটি মাসকট এখনো ‘ইন্ডি’ নামে পরিচিত। মাসকটটি হলো একটি রাকুন, যার মাথায় নেটিভ আমেরিকানদের পালকের হেডড্রেস, গায়ে লাল-সাদা রং।
তবে আতলেতিকোর সমর্থকেরা বরাবরই বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেছেন আরেক ‘লস কোলচোনেরোস’ ডাকনামে, বাংলায় যেটার মানে দাঁড়ায় ‘জাজিম নির্মাতা’। লাল-সাদা ডোরা জার্সিকে ব্যঙ্গ করে প্রতিপক্ষ সমর্থকেরা এই নাম দিয়েছিলেন। কারণ, সে সময় স্পেনে জাজিম বানাতে ব্যবহৃত কাপড়ও ছিল এমন লাল-সাদা ডোরা। এ নামও টিকে গেছে। যদিও আনুষ্ঠানিক যোগাযোগে এখন আতলেতিকোকে বলা হয় ‘রোহিব্লাঙ্কো’—লাল আর সাদা।