পার্থক্যটা কত বেশি, বাংলাদেশকে বোঝাল মালয়েশিয়া

সমতায় ফেরার পর জামাল ভূঁইয়ার উল্লাসছবি: বাফুফে

কুয়ালালামপুরের গ্যালারিতে ছিল লাল-সবুজ পতাকা হাতে কয়েক হাজার বাংলাদেশি সমর্থক। পুরোটা সময় জুড়ে জামাল ভূঁইয়া, মোহাম্মদ ইব্রাহিমদের জন্য গলা ফাটিয়েছেন তারা। কিন্তু তাদের বাড়ির রাস্তা ধরতে হয়েছে কষ্ট নিয়ে।

স্বাগতিক মালয়েশিয়ার কাছে বাংলাদেশ ম্যাচটি হেরেছে ৪-১ গোলে। প্রথম গোল খেয়ে পিছিয়ে পড়েও সমতায় ফিরে আশা দেখিয়েছিল বাংলাদেশ। দ্বিতীয়ার্ধে দুই গোল খেয়ে শেষ পর্যন্ত স্কোরলাইনে লেখা হয়েছে ৪-১।

এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বে এটি বাংলাদেশের টানা তৃতীয় হার। এই হারে চার দলের গ্রুপের তলানিতে থেকে বাছাইপর্ব শেষ করল বাংলাদেশ আর গ্রুপ রানার্সআপ হয়ে মালয়েশিয়া পেয়েছে এশিয়ান কাপের টিকিট।

আগের দুই ম্যাচে হেরেও আজ জিতলে অনেক ‘যদি’ ‘কিন্তু’ র ওপর ভর করে গ্রুপের রানার্সআপ হওয়ার সম্ভাবনা ছিল বাংলাদেশের। সেদিকে লক্ষ না রেখে নিজেদের উন্নতির ছাপই দেখাতে চেয়েছিল হাভিয়ের কাবরেরার দল।

বল নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন বিপলু আহমেদ
ছবি: বাফুফে

আজকের বড় ব্যবধানের হারে সেই কঙ্কালসার দেহটায় ফুটে উঠল বাংলাদেশ দলের। যে রক্ষণভাগের জন্য গেল কয়েক দিনে প্রশংসা করতে হয়েছে কাবেররার দলের, আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলতে গিয়ে রক্ষণভাগের বড় বড় ফাঁক ফোকরই বের হয়ে আসল। সহজ গোলের সুযোগ নষ্ট করেছেন ফরোয়ার্ডেরাও।

র‍্যাঙ্কিংয়ে মালয়েশিয়া এগিয়ে ৩৪ ধাপ। এ ছাড়া অতীত পরিসংখ্যানেও এগিয়ে ছিল তারা। এক জয় ও দুই ড্রয়ের বিপরীতে বাংলাদেশের ৬ হার। সেই পরিসংখ্যানের পাশে আজ আরও একটা হার যোগ হলো।

আরও পড়ুন

বাছাইপর্বের আগের দুই ম্যাচের একাদশটাই আজ নামিয়েছিলেন কাবরেরা। স্বাগতিকদের আক্রমণে দিশেহারা হয়ে যাওয়ার মতো অবস্থা হয়েছিল বিশ্বনাথ ঘোষ, টুটুল হোসেনদের।

আরও পড়ুন

১৬ মিনিটে নিজেদের বক্সের মধ্যে অতি আত্মবিশ্বাস দেখাতে গিয়ে পেনাল্টি থেকে প্রথম গোল খাওয়া। মিডফিল্ডার আতিকুর রহমান ফাউল করলে পেনাল্টি পায় মালয়েশিয়া। স্পটকিক থেকে গোল করতে কোনো ভুল করেননি ফরোর্ড সাফাউই রশিদ।

৩১ মিনিটে মোহাম্মদ ইব্রাহিমের গোলে সমতায় ফেরে বাংলাদেশ। আগের ম্যাচে তুর্কমিনিস্তানের বিপক্ষে যেভাবে গোলটি এসেছিল, আজকের গোলটিও প্রায় একই রকম।

তবে আজ ইব্রাহিমের হেডটি ছিল দুর্দান্ত। বিশ্বনাথ ঘোষের লম্বা থ্রোইন থেকে রাকিব হোসেন ফ্লিক করলে গোল মুখ থেকে হেডে বল জালে জড়িয়ে দেন উইঙ্গার ইব্রাহিম।

কিন্তু সমতায় ফেরার স্বস্তি টিকে ছিল মাত্র ৭ মিনিট। ৩৮ মিনিটে ডিওন কুলসের গোলে আবারও এগিয়ে যায় মালয়েশিয়া। এই গোলে কুলসের কৃতিত্বের চেয়ে বাংলাদেশের গোলকিপার আনিসুর রহমানের দায়ই বেশি।

কাছের পোস্টে মারা কুলসের সাধারণ একটি শট ঠেকাতে পারেননি আনিসুর। ২০১৯ সাল পর্যন্ত বেলজিয়াম বয়সভিত্তিক জাতীয় দলের হয়ে খেলেছেন তিনি। ৫ বছর খেলেছেন বেলজিয়ামের শীর্ষ ক্লাব ক্লাব ব্রুগাতে।

গ্যালারিতে ছিল লাল-সবুজ পতাকা হাতে কয়েক হাজার বাংলাদেশি সমর্থক
ছবি: বাফুফে

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে অফসাইড ফাঁদ তৈরি করতে গিয়ে ভুল করে খেসারত দিয়েছে বাংলাদেশ। অফসাইড ফাঁদ তৈরি করেছিল রক্ষণভাগ। সেই ফাঁদ ভেঙে মাঝমাঠ থেকে বাড়ানো পাসে ফ্লিক হেডে ৩-১ করেছেন শাফিক আহমেদ।

দুই গোল ব্যবধানে এগিয়ে যাওয়ার পরই ম্যাচটা কার্যত শেষ হয়ে যায়। জয়টা এক প্রকার নিশ্চিত করতে প্রয়োজন ছিল চতুর্থ গোল। ৭৩ মিনিটে সেই কাজটি করেছেন ড্যারেন লক। গোল মুখে ফাঁকা অবস্থায় পা লাগিয়ে গোলটি করেছেন তিনি।