এমবাপ্পের চোখ ধাঁধানো গোল, ৬৩ বছর আগের রেকর্ড ভাঙলেন জিরু

জিরুর গোলের পর এমবাপ্পের অভিনন্দনছবি: এএফপি

স্তাদ দি ফ্রান্সে ম্যাচের তখন ৫৬ মিনিট। ডান প্রান্ত থেকে দৌড়ের ওপরই কিলিয়ান এমবাপ্পেকে পাস বাড়ান অলিভিয়ের জিরু। অস্ট্রিয়ার বক্স তখনো বেশ দূরের পথ। এমবাপ্পে চাইলেই বলটা সতীর্থদের যে কাউকে পাস দিতে পারতেন।

বল ধরে রেখে গোছাল আক্রমণে উঠতে ওই পজিশন থেকে সাধারণত এটাই করে থাকেন খেলোয়াড়েরা। কিন্তু এমবাপ্পে অন্য ধাতে গড়া। অস্ট্রিয়ার রক্ষণ নিয়ে তাঁর যেন একটু রসিকতা করার ইচ্ছা হলো! ছুটলেন নিজের ‘ট্রেডমার্ক’ গতিতে, কাটালেন পাঁচ–পাঁচজন ডিফেন্ডার, এরপর বক্সের ভেতর থেকে নেওয়া শটে গোল। দুর্দান্ত!

উয়েফা নেশনস লিগে কাল অস্ট্রিয়ার বিপক্ষে ফ্রান্সের ২–০ গোলের জয়ে এমবাপ্পের গোলটি দর্শকদের চোখে লেগে থাকবে অনেক দিন। এই টুর্নামেন্টে এর আগে ২ হার ও ২ ড্রয়ে গ্রুপ ‘এ১ ’–এ বাজে অবস্থার মধ্যে ছিল ফ্রান্স।

কাল রাতের জয়টা নিঃসন্দেহে আত্মবিশ্বাস বাড়াবে দিদিয়ের দেশমের দলের। ম্যাচের দ্বিতীয় মিনিটেই এগিয়ে যেতে পারত ফ্রান্স। দূরপাল্লার শটে এমবাপ্পে অস্ট্রিয়া গোলকিপারকে পরাস্ত করলেও অফ সাইডের কারণে গোলটি বাতিল হয়। এরপর চুয়ামেনির বাইসাইকেল কিকও অস্ট্রিয়ার গোলপোস্টকে চোখ রাঙিয়ে লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।

৬৫ মিনিটে আঁতোয়ান গ্রিজমানের নিখুঁত ক্রস থেকে গোল করে ফ্রান্সের জয়ের ব্যবধান বাড়ান জিরু। আর মাত্র ২ গোল করলেই ফ্রান্সের জার্সিতে সর্বোচ্চ গোলদাতা থিয়েরি অঁরিকে ধরে ফেলবেন জিরু। ১১২ ম্যাচে তাঁর গোলসংখ্যা আপাতত ৪৯। তবে কাল ফ্রান্সের জার্সিতে সবচেয়ে বেশি বয়সে গোল করার রেকর্ডও গড়েন ৩৫ বছর বয়সী এ ফরোয়ার্ড। কাল রাতে আসলে নিজের পারফরম্যান্স দিয়ে জিরু বুঝিয়েছেন, দেশমের তৃতীয় পছন্দের ফরোয়ার্ড হওয়ার চেয়েও বেশি যোগ্যতা আছে তাঁর।

জিরু গোলটি করেছেন ৩৫ বছর ৩৫৭ দিন বয়সে। ফ্রান্সের জার্সিতে এটাই সবচেয়ে বেশি বয়সে গোলের রেকর্ড। এর আগে রেকর্ডটি ছিল ফ্রান্সের হয়ে ১৯৫৮ বিশ্বকাপ খেলা ডিফেন্ডার রজার মার্শের। ১৯৫৯ সালে স্পেনের বিপক্ষে ৩৫ বছর ২৮৭ দিন বয়সে গোল করেছিলেন মার্শ। অর্থাৎ, ৬৩ বছর আগের রেকর্ড ভাঙলেন জিরু।

অস্ট্রিয়ার বিপক্ষে হারলে অবনমন ঘটত ফ্রান্সের। কিন্তু জয় তুলে নিয়ে কিছুটা হলেও সুবিধাজনক জায়গায় আছে দেশমের দল। ৫ ম্যাচে ৫ পয়েন্ট নিয়ে ‘এ১’ গ্রুপের তিনে ফ্রান্স। তবে এই ম্যাচে জুলস কুন্দে ও গোলকিপার মাইক মেইগান চোট পাওয়ায় দুশ্চিন্তার জায়গায়ও রয়েছে ফ্রান্স কোচ দেশমের জন্য।

জয়ের পর দেশম বলেন, ‘আমাদের যা করার দরকার ছিল, সেটাই করেছি। আমরা ভালো ডিফেন্স করেছি, সব মিলিয়ে ভালো খেলেছে সবাই।’ এই গ্রুপ থেকে অন্য ম্যাচে ডেনমার্ককে ২–১ গোলে হারিয়েছে ক্রোয়েশিয়া। ৫ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে ক্রোয়েশিয়া। ৯ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে ডেনমার্ক।

গ্রুপ ‘এ৪’ থেকে ওয়েলসকে ২–১ গোলে হারায় বেলজিয়াম। কেভিন ডি ব্রুইনা ও মিচি বাতসুইয়াই গোল করেন বেলজিয়ামের হয়ে। এই গ্রুপ থেকে অন্য ম্যাচে পোল্যান্ডকে ২–০ গোলে হারায় নেদারল্যান্ডস।

৫ ম্যাচে ১৩ পয়েন্ট নিয়ে এই গ্রুপের শীর্ষে নেদারল্যান্ডস। সমান ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে বেলজিয়াম এবং ৪ পয়েন্ট নিয়ে তিনে পোল্যান্ড।