অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলে যা পেতে চান কাবরেরা

লড়াই, লড়াই, লড়াই। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জামাল ভূঁইয়াদের কাছে বাংলাদেশ কোচ হাভিয়ের কাবরেরার প্রত্যাশা এটাই। ঢাকা ছাড়ার আগেই তা বলেছিলেন। ২০২৬ বিশ্বকাপ বাছাইয়ে দুই দল আগামীকাল মুখোমুখি হওয়ার আগে আজ মেলবোর্নের সংবাদ সম্মেলনেও একই কথা বলেন স্প্যানিশ কোচ।

অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে ৯০ মিনিট লড়াই করা ছাড়া আর কী–ই বা করার থাকতে পারে বাংলাদেশ দলের! মালদ্বীপকে পেছনে ফেলে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠেই অসম এক লড়াইয়ের সামনে জামাল ভূঁইয়া–বিশ্বনাথ ঘোষ–রাকিব হোসেনরা। অস্ট্রেলিয়া নিয়মিত বিশ্বকাপ খেলে, বিশ্বের বড় বড় দলকে ভালোই চ্যালেঞ্জ জানায় মাঠে। গত ডিসেম্বরে কাতার বিশ্বকাপের দ্বিতীয় রাউন্ডে লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনার সঙ্গে ২–১ গোলে হারলেও ভালোই আতঙ্ক ছড়িয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। ২–০ গোলে পিছিয়ে পড়ার পর আর্জেন্টিনার বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ার জোর লড়াই, প্রায় ঘুরে দাঁড়ানোর ব্যাপারটা তো স্মৃতিতে জ্বলজ্বলেই। গ্রুপ পর্বে ফ্রান্সের কাছে ৪–১ গোলে হারলেও তিউনিসিয়া আর ডেনমার্ককে দুই ম্যাচেই ১–০ গোলে হারিয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠে এসেছিল অস্ট্রেলিয়া।

ব্যক্তিগত নৈপুণ্য, দলীয় শক্তি, কোনো কিছুতেই অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের তুলনা হয় না। তাহলে? বাংলাদেশের করণীয় কী মেলবোর্নে? ফুটবলবোদ্ধাদের মত হলো, অসহায় আত্মসমর্পণের কোনো জায়গা নেই। মাঠে নামলে নিজেদের সেরাটা দিয়েই খেলতে হবে। কাবরেরাও সেটিই বলছেন বারবার, ‘অস্ট্রেলিয়া এশিয়ার অন্যতম সেরা দল। খুব সম্ভবত বিশ্বেরও অন্যতম সেরা। শারীরিক দিক দিয়ে ওরা অনেক এগিয়ে। আশা করি, ম্যাচে আমরা ওদের খুব বেশি সেট পিস উপহার দেব না। অবশ্যই এ ম্যাচে আমরা লড়াই করব।’

নিজেদের সেরা খেলাটা যেন ফুটবলাররা অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলতে পারেন, কাবরেরার চাওয়াও সেটাই, ‘আমাদের খেলোয়াড়দের খেলতে হবে নিজেদের খেলাটাই। নিজেদের সেরা খেলাটা খেলেই এ ম্যাচ থেকে সর্বোচ্চটা আদায় করে নিতে হবে।’

অস্ট্রেলিয়ার ম্যাচটা কাবরেরার কাছে নিজেদের উন্নতি পরখ করার লড়াইও, ‘আমরা এ বছর ভালো ফুটবল খেলছি। এ ম্যাচে আমাদের প্রমাণ করতে হবে যে আমরা আগের চেয়ে ভালো দল। অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে ভালো লড়াই করে যে অভিজ্ঞতা হবে, সেটি দিয়েই গ্রুপের বাকি দুই প্রতিপক্ষের সঙ্গে আমরা ভালো খেলতে চাই। এ বছর যে ধরনের ফুটবল আমরা খেলেছি, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সেটিই ধরে রাখতে চাই।’

অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়ার কাছে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচটি ‘কঠিন লড়াই’। আর এ লড়াইয়ে তিনি অনুপ্রেরণা চান অস্ট্রেলিয়াপ্রবাসী বাংলাদেশিদের কাছ থেকে। দল মেলবোর্নে পৌঁছানোর পর থেকে প্রবাসী বাংলাদেশি ফুটবলপ্রেমীরা দলকে অনুসরণ করছেন টিম হোটেলে কিংবা অনুশীলন মাঠে। জামালের আশা, প্রবাসী বাংলাদেশিরা বৃহস্পতিবার মাঠে গিয়ে দলের জন্য গলা চড়াবেন, ‘আমরা পৃথিবীর যে প্রান্তেই খেলি না কেন, বাংলাদেশের মানুষের সমর্থন পাই। আমরা জানি, তাঁরা নিজেদের সবটা দিয়ে আমাদের সমর্থন করেন। সেই সমর্থন আমাদের অনুপ্রাণিত করে।’

সমর্থকদের জন্যই ভালো খেলতে চান জামাল। তাঁর কথা, ‘আমরা আমাদের বাংলাদেশি সমর্থকদের দেখাতে চাই যে বাংলাদেশ দলটা ভালো। এ দলে এমন কিছু খেলোয়াড় আছে, যারা এই স্তরে ভালো খেলতে পারে, তাদের সামর্থ্য আছে।’