হতাশা কাটাতে ‘বিতর্কিত’ মনোবিদের শরণাপন্ন রোনালদো

ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড তারকা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোছবি: টুইটার

ক্যারিয়ারে এমন কঠিন সময় কমই এসেছে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর ক্যারিয়ারে। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে একরকম ব্রাত্য হয়ে পড়েছেন, জাতীয় দল পতুর্গালের হয়েও দেখা মিলছে না ‘সিআর সেভেন’–এর ঝলক। চারপাশ থেকে বিঁধছে সমালোচনার তির। প্রশ্ন একটাই, রোনালদো কি তবে ফুরিয়ে গেলেন?

ফুটবলের মহাতারকা হলেও দিন শেষে রোনালদো একজন সাধারণ মানুষই। তবে সাফল্যের শিখর স্পর্শ করা এই পর্তুগিজ তারকা এত সহজে অবশ্য হাল ছাড়ার পাত্র নন। কঠিন সময় থেকে বেরোতে এবার পেশাদার মনোবিদের শরণাপন্ন হয়েছিলেন তিনি। জর্ডান পিটারসন নামের সেই মনোবিদ অবশ্য একজন ইন্টারনেট সেলিব্রিটিও।

পিটারসন একই সঙ্গে মনোবিদ, লেখক, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও ইউনিভার্সিটি অব টরন্টোর ইমেরিটাস অধ্যাপক। তবে ডানপন্থী ধ্যানধারণার প্রচারক হিসেবে তাঁকে নিয়ে বেশ বিতর্কও আছে। যদিও রোনালদো সেসব বিতর্ক পাত্তা না দিয়েই নিজের হতাশা কাটাতে দেখা করেছেন পিটারসনের সঙ্গে।

পাঁচবারের ব্যালন ডি’অরজয়ী তারকা মূলত পিটারসনের বই পড়েই তাঁর প্রতি আগ্রহী হন। বই পড়ে উপকৃত হওয়ার পর রোনালদো সেই মনোবিদকে নিজের বাসায় আমন্ত্রণ জানান।

দুই সপ্তাহ আগে রোনালদো তাঁর সঙ্গে ইনস্টাগ্রামে নিজের ছবিও পোস্ট করেন। নিজেদের সাক্ষাৎ নিয়ে বিস্তারিত কিছু না লিখলেও সেই ছবিতে রোনালদো ক্যাপশন দিয়েছিলেন, ‘তোমার সঙ্গে দেখা হয়ে ভালো লাগল।’

সম্প্রতি ইংল্যান্ডের টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব পিয়ার্স মরগাননের শোতে এসে রোনালদোর সঙ্গে নিজের সাক্ষাৎকে ঘিরে গড়ে ওঠা ‘রহস্য’ উন্মোচন করেন এই পিটারসন। সেই শোতে তিনি জানিয়েছেন, রোনালদো তাঁর কাছ থেকে থেরাপি নিয়েছেন এবং এই সাক্ষাতের পর রোনালদোর উন্নতি হয়েছে বলেও মনে হচ্ছিল তাঁর।

এই সাক্ষাৎ নিয়ে পিটারসন আরও বলেছেন, ‘সে আমাকে তার সঙ্গে দেখা করার জন্য আমন্ত্রণ জানায়। কয়েক মাস আগে সে নিজের জীবনে কিছু সমস্যার মধ্য দিয়ে যাচ্ছিল, তখন তার এক বন্ধু তাকে আমার কিছু ভিডিও পাঠায়। সে জানায়, সেসব ভিডিও সে দেখেছে এবং আমার একটি বইও সে পড়েছে। এগুলো তাকে উপকৃত করেছে। সে তখন আমার সঙ্গে কথা বলার ইচ্ছা পোষণ করে।’

তাঁদের মধ্যে কী কথা হয়েছে, তা জানাতে গিয়ে পিটারসন বলেছেন, ‘এরপর আমি তার বাসায় যাই এবং তার সঙ্গে প্রায় দুই ঘণ্টা কথা হয়। ঠিকঠাক থাকার জন্য তার কাছে যা যা আছে, সব সে আমাকে দেখায়। আমাদের বেশির ভাগ কথাবার্তা হয়েছে ভবিষ্যতে সে কী চায়, তা নিয়ে এবং যে সমস্যাগুলোর মুখোমুখি সে হচ্ছে, সেসব নিয়ে।’

পিটারসনের এই আলাপই বলে দিচ্ছে, মাঠে ও মাঠের বাইরে সময়টা ভালো যাচ্ছে না রোনালদোর। একদিকে মাঠের পারফরম্যান্সে নিজেকে হারিয়ে খুঁজছেন। অন্যদিকে কয়েক মাস আগে পুড়েছেন সন্তান হারানোর বেদনায়।

আরও পড়ুন

এর মধ্যে কদিন আগে ভক্তের ফোন ভাঙার ঘটনায় অভিযুক্তও হয়েছেন তিনি। বিশ্বকাপের আগে এসব ঘটনা থেকে তৈরি হওয়া হতাশা কাটাতেই এখন পেশাদার মনোবিদের সাহায্য নিচ্ছেন এই পর্তুগিজ তারকা, সেটি অনুমান করাই যায়।