তারকা ফুটবলারদের সৌদি যাওয়া ঠেকাতে বার্সেলোনার এ কোন কৌশল
বয়স মাত্র ২১। অ্যাস্টন ভিলার মতো ক্লাবের হয়ে নিয়মিত সুযোগ পেয়ে নিজেকে মেলেও ধরছিলেন জন দুরান। কলম্বিয়ান এই স্ট্রাইকারের সামনে সুযোগ ছিল সামনের দিনগুলোয় নিজেকে প্রমাণ করে শীর্ষ ক্লাবগুলোতে জায়গা করে নেওয়ার। কিন্তু সে পর্যন্ত যেন তর সইল না। ইউরোপীয় ফুটবল ছেড়ে মধ্যপ্রাচ্যে পাড়ি জমিয়েছেন দুরান।
৭ কোটি ১০ লাখ পাউন্ডে তাঁকে কিনে নিয়েছে সৌদি আরবের ক্লাব আল নাসর। এখন থেকে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো এবং সাদিও মানেদের সঙ্গে খেলতে দেখা যাবে তাঁকে।
দুরান সাম্প্রতিকতম উদাহরণ হলেও এই ধারা শুরু হয়েছে আরও আগে থেকে। রোনালদোকে দিয়েই মূলত সৌদি আরবের ফুটবল-বিপ্লবের শুরু। এরপর টাকা ছড়িয়ে ইউরোপীয় ফুটবলের ভিত কাঁপিয়ে অনেক প্রতিষ্ঠিত, উদীয়মান এবং অভিজ্ঞ ফুটবলারদের নিয়ে যায় সৌদি ক্লাবগুলো।
সাদিও মানে, করিম বেনজেমা, নেইমার এবং রবার্তো ফিরমিনোসহ অনেকেই এরপর পাড়ি জমান সৌদি আরবে। সৌদি আরবের এমন আগ্রাসী দলবদল সে সময় বেশ উদ্বেগ তৈরি করে। ইয়ুর্গেন ক্লপ এবং পেপ গার্দিওলাসহ অনেকেই তখন নিজেদের দুশ্চিন্তার কথা জানান। কিন্তু এরপরও কোনোভাবে আটকানো যাচ্ছিল না ফুটবলারদের সৌদি–যাত্রা।
তবে এবার বার্সেলোনার সৌজন্যে ইউরোপের দলগুলো বোধ হয় খেলোয়াড়দের সৌদি যাওয়া ঠেকানোর নতুন টোটকা পেল। মূলত পেদ্রির সঙ্গে নতুন চুক্তি করতে গিয়েই এই কৌশলটি সামনে এনেছে বার্সা। যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘অ্যান্টি সৌদি ক্লজ’ বা ‘সৌদিবিরোধী ধারা’।
চুক্তিতে বিশেষ এই শর্তটি মূলত পেদ্রির সৌদি আরব যাত্রা ঠেকাতেই দেওয়া হয়েছে। স্প্যানিশ এই মিডফিল্ডারের চুক্তিতে এই শর্ত যোগ করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে একাধিক ইউরোপীয় সংবাদমাধ্যম। প্রশ্ন হচ্ছে কীভাবে কাজ করবে নতুন এই শর্তটি।
পেদ্রিকে দিয়েই বিষয়টা বোঝা যাক। এই তরুণ ফুটবলারের সঙ্গে নতুন চুক্তিতে বার্সা রিলিজ ক্লজ রেখেছে ১০০ কোটি ইউরো। অর্থাৎ কেউ যদি চুক্তি শেষ হওয়ার আগে পেদ্রিকে কিনতে চায়, তখন তাঁকে রিলিজ ক্লজে উল্লেখ করা এই অর্থ পরিশোধ করেই কিনতে হবে।
কিন্তু এই রিলিজ ক্লজের বাধাও আটকে রাখতে পারছিল না সৌদি ক্লাবগুলোকে। ফলে নিজেদের সেরা খেলোয়াড়দের সুরক্ষিত রাখতে অভিনব কৌশল নিয়েই হাজির হতে হলো বার্সাকে। চুক্তিতে (পেদ্রির সঙ্গে করা চুক্তি) তারা যুক্ত করল ‘অ্যান্টি সৌদি ক্লজ’।
এই শর্ত অনুযায়ী সৌদি আরবের ক্লাবগুলো চাইলেও রিলিজ ক্লজের পুরোটা পরিশোধ করে আর খেলোয়াড় কিনতে পারবে না। চুক্তি অনুযায়ী ক্লাবের হাতে এখন ক্ষমতা আছে ফুটবলারদের সৌদি যাওয়া আটকে দেওয়ার। আর এভাবেই বার্সা নিজেদের গুরুত্বপূর্ণ ফুটবলারদের সৌদি আরবে যাওয়া ঠেকানোর উদ্যোগ নিয়েছে।
এ কৌশল হয়তো শুধু বার্সার মধ্যেই সীমায়িত থাকবে না। সৌদি হুমকি ঠেকাতে ইউরোপের অন্য ক্লাবগুলোও নিশ্চয়ই সামনের দিনগুলোতে বার্সার এই কৌশলের পথে হাঁটবে।