গোলকিপার এদেরসন গোল করিয়েই যাচ্ছেন
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে গত এক দশকের মধ্যে এবারই সবচেয়ে বাজে মৌসুম কাটছে ম্যানচেস্টার সিটির। টানা চারবারের চ্যাম্পিয়ন সিটি ২০২৪–২৫ মৌসুমে শিরোপার লড়াই থেকে অনেক আগে ছিটকে পড়েছে। এই মুহূর্তে পয়েন্ট তালিকার চারে থাকলেও আগামী মৌসুমে চ্যাম্পিয়নস লিগে খেলা এখনো নিশ্চিত নয়।
সিটির প্রথম পছন্দের গোলকিপার এদেরসনের সময়টাও খুব একটা ভালো যাচ্ছে না। প্রিমিয়ার লিগে এখন পর্যন্ত ২২ ম্যাচে ২৫ গোল খেয়েছেন এই ব্রাজিলিয়ান। অথচ লিগে এর আগে সাত মৌসুম খেলে একবারও ম্যাচের চেয়ে বেশি গোল খাননি। এবারের মৌসুমে ক্লিনশিটেও আছেন পিছিয়ে—৭টি। যেখানে এক মৌসুমে তাঁর সর্বনিম্ন ক্লিনশিট ছিল ১১টি।
তবে এই মৌসুমে একটা জায়গায় এদেরসন নিজেকে সবার ওপরে নিয়ে গেছেন। ৩১ বছর বয়সী এই গোলকিপার সব মৌসুম মিলিয়ে গোলে সহায়তা করেছেন ৭টি, যা প্রিমিয়ার লিগ ইতিহাসে গোলকিপারদের মধ্যে সর্বোচ্চ। ইংল্যান্ডের ক্লাব ফুটবলের শীর্ষ এই প্রতিযোগিতায় পাঁচটির বেশি গোলে সহায়তা আর কোনো গোলকিপার করতে পারেননি।
প্রিমিয়ার লিগে গোলকিপারদের গোলে সহায়তা
৫ অ্যাসিস্ট নিয়ে দুইয়ে আছেন সাবেক গোলকিপার পল রবিনসন। বর্তমানে ৪৯ বছর বয়সী রবিনসন প্রিমিয়ার লিগ খেলেছেন চারটি ক্লাবের হয়ে—লিডস ইউনাইটেড, টটেনহাম হটস্পার, ব্ল্যাকবার্ন রোভার্স ও বার্নলি। ৪টি করে অ্যাসিস্টে যৌথভাবে তিনে আছেন আরও দুই সাবেক গোলকিপার ডেভিড সিম্যান ও পেপে রেইনা।
প্রিমিয়ার লিগে ৩ অ্যাসিস্ট নিয়ে ২০২৪–২৫ মৌসুম শুরু করেছিলেন এদেরসন। এখন পর্যন্ত তিনি সতীর্থদের দিয়ে করিয়েছেন ৪ গোল, যার সর্বশেষটি গতকাল ক্রিস্টাল প্যালেসের বিপক্ষে। নিজেদের মাঠ ইতিহাদ স্টেডিয়ামে কাল প্যালেসের কাছে দুই গোলে পিছিয়ে পড়েও দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে ম্যানচেস্টার সিটি। পেপ গার্দিওলার দল ম্যাচটা জিতে নিয়েছে ৫–২ গোলে।
দলের চতুর্থ গোলে অবদান রাখেন গোলকিপার এদেরসন। ৫৬ মিনিটে তাঁর লম্বা করে বাড়ানো বল থেকেই গোল করেছেন তরুণ মিডফিল্ডার জেমস ম্যাকঅ্যাটি। এই মৌসুমে এর আগে নিউক্যাসল ইউনাইটেড, চেলসি ও ব্রেন্টফোর্ডের বিপক্ষে এদেরসনের বাড়ানো বল থেকে গোল করেছিলেন তাঁর সতীর্থরা।
প্রিমিয়ার লিগের ২০২৪–২৫ মৌসুমে এ নিয়ে আটটি গোলে সহায়তা করলেন গোলকিপাররা। এদেরসনের চারটির পাশাপাশি ব্রাইটনের বার্ট ভেরব্রুগেন, এভারটনের জর্ডান পিকফোর্ড, ব্রেন্টফোর্ডের মার্ক ফ্লেকেন ও ফুলহামের বার্নড লেনো একটি করে গোলে সহায়তা করেছেন। এর আগে দুবার গোলকিপাররা আটটি করে গোলে সহায়তা করেছেন—১৯৯২–৯৩ ও ২০০৭–০৮ মৌসুমে।
গোলকিপার হয়েও সিটির খেলোয়াড় হিসেবে লিগের এই মৌসুমে অ্যাসিস্টের তালিকায় শীর্ষ তিনে আছেন এদেরসন। ৮টি গোলে সহায়তা করে সবার ওপরে আছেন সাভিনিও। দুইয়ে থাকা কেভিন ডি ব্রুইনা সতীর্থদের দিয়ে করিয়েছেন ৭ গোল। জেরেমি ডোকু, ইলকায় গুন্দোয়ান, বের্নার্দো সিলভা, মাথেউস নুনেস ও এদেরসন করেছেন ৪টি করে অ্যাসিস্ট।
প্রতিপক্ষকে গোল করা থেকে বিরত রাখার পাশাপাশি সতীর্থদের দিয়ে গোল করানোর দারুণ সামর্থ্যের কারণে এদেরসনকে প্রশংসায় ভাসিয়েছেন ম্যানচেস্টার সিটির সাবেক উইঙ্গার শন রাইট–ফিলিপস।
তিনি বলেছেন, ‘ওর (এদেরসনের) লম্বা করে বল বাড়ানো দেখে মনে হচ্ছে মাঠে কেভিনের (ডি ব্রুইনা) মতোই যেন আরেকজন খেলছে। খেলোয়াড়েরা যদি আরও দৌড়াতে পারত, তাহলে এ বছর সে আরও বেশি গোলে সহায়তা করতে পারত।’