ইউরোপা লিগে নেমে যাওয়ার ‘সান্ত্বনা’ও পেল না বার্সা

বার্সা গোলকিপার টের-স্টেগেনকে ফাঁকি দিয়ে গোল করছেন বায়ার্নের চুপো-মোটিংছবি: উয়েফা

সান্ত্বনাটুকুও পেল না বার্সেলোনা!

রবার্ট লেভানডফস্কি-উসমান দেম্বেলেরা ক্যাম্প ন্যুতে নামার আগেই সান সিরো থেকে খবর আসে, সর্বনাশ যা হওয়ার হয়ে গেছে! ভিক্তোরিয়া প্লজেনের বিপক্ষে ইন্টার মিলান জেতায় চ্যাম্পিয়নস লিগের গ্রুপপর্ব থেকেই বাদ বার্সেলোনা। এই শোককে শক্তি বানিয়ে জাভি হার্নান্দেজের দলের সামনে সুযোগ ছিল ‘সান্ত্বনা’র জয় তুলে নেওয়ার।

গ্রুপে নিজেদের শেষ ম্যাচটা প্লজেনের বিপক্ষে খেলবে বার্সা। তার আগে আজ প্র্রতিপক্ষ বায়ার্ন মিউনিখ, এই ম্যাচ দিয়ে অন্তত গ্রুপে একটা বড় দলের বিপক্ষে জয় তুলে নেওয়ার সুযোগ ছিল বার্সার। সেটাও হলো না। চ্যাম্পিয়নস লিগে পাঁচবারের চ্যাম্পিয়নরা ইউরোপা লিগে নেমে যাওয়ার দুঃখে বায়ার্ন-ভীতি কাটাবে কী, আবারও হেরে বসেছে।

ক্যাম্প ন্যুতে বার্সেলোনাকে ৩-০ গোলে হারিয়ে ‘সি’ গ্রুপের শীর্ষ দল হিসেবে শেষ ষোলো নিশ্চিত করল বায়ার্ন মিউনিখ। ৫ ম্যাচেই জয় তুলে নেওয়া জার্মান ক্লাবটির সংগ্রহ ১৫ পয়েন্ট। সমান ম্যাচে ১০ পয়েন্ট তুলে নেওয়া ইন্টার মিলান রানার্সআপ হিসেবে শেষ ষোলো নিশ্চিত করেছে। ৫ ম্যাচের মধ্যে শুধু প্লজেনকে হারাতে পারা বার্সা ৪ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয়স্থান নিশ্চিত করে নেমে গেছে ইউরোপা লিগে।তলানিতে থাকা প্লজেন পয়েন্টহীন।

চ্যাম্পিয়নস লিগে বায়ার্নের বিপক্ষে বার্সার এ নিয়ে টানা ষষ্ঠ হারের ম্যাচে একটি পরিসংখ্যান জানিয়ে রাখা ভালো। প্রথমার্ধে বায়ার্নের গোলপোস্টে বার্সা কোনো শট নিতে পারেনি। চ্যাম্পিয়নস লিগে ঘরের মাঠে গত ১৫ বছরে দ্বিতীয়বার এমন ঘটনা দেখল বার্সা। প্রথমবার কবে? শেষ মৌসুমে, সেই বায়ার্নের বিপক্ষেই!

গোলের পর সাদিও মানের স্যালুট
ছবি: উয়েফা

ভীতিটা আজ আরও স্পষ্ট হতেও সময় লাগেনি। ম্যাচ শুরুর ১০ মিনিটের মাথায় ডান প্রান্ত থেকে সার্জ নাব্রির দুরপাল্লার বাঁকানো পাস ধরতে বাঁ প্রান্ত থেকে দৌড় শুরু করেন সাদিও মানে। তাঁকে মার্কিংয়ে রাখা বার্সার ডিফেন্ডার হেক্টর বেয়েরিন আগেই দৌড় শুরু না করলে মানে অফসাইড হতে। বেয়েরিনের এই ভুলের সুযোগ নিয়ে তাঁকে পেছনে ফেলে বার্সা গোলকিপার টের-স্টেগেনকে ফাঁকি দিতে ভুল হয়নি মানের। ১-০ গোলে এগিয়ে যায় বায়ার্ন।

নাব্রি ৩১ মিনিটে বায়ার্নের দ্বিতীয় গোলেরও উৎস। এবার তাঁর ডিফেন্সচেরা দৌড় দেখে ডান প্রান্ত দিয়ে বক্সে ঢোকেন চুপো-মোটিং। নাব্রির পাস থেকে ঠান্ডা মাথার ফিনিশে গোল ক্যামেরুন ফরোয়ার্ড।

৪৩ মিনিটে গোল লা্ইন থেকে বল ‘ক্লিয়ার’ করেন বার্সার ডিফেন্ডাররা। মানের চিপ গোল লাইন থেকে ফেরানো হয়। এরপর জামাল মুসায়লার দুটি শট কাছ থেকে রুখে দেন টের-স্টেগেন। বায়ার্নের দূর্ভাগ্য তিনবার চেষ্টা করেও তখন গোল পায়নি। পরের মিনিটেই প্রতিআক্রমণে উঠে বায়ার্নের বক্সে পেনাল্টি আদায় করেন লেভানডফস্কি। কিন্তু ভিএআরে দেখা যায়, বায়ার্নের ম্যাথিয়াস ডি লিট ফাউল করেননি, আগে বলে মেরেছেন। পেনাল্টি তুলে নেওয়া হয়। তখন  লেভার হতাশাক্লিষ্ট মুখে তাকানো যাচ্ছিল না।

বার্সা কোচ জাভির হতাশাক্লিষ্ট মুখ
ছবি: উয়েফা

সাবেক ক্লাবের বিপক্ষে বিরতির পর গোলের সুযোগ পেয়েছেন এই পোলিশ স্ট্রাইকার। সুযোগ নষ্ট করেছেন। বদলি নামা আনসু ফাতি ও পেদ্রিও গোলের সুযোগ পেয়েছেন। কিন্তু বায়ার্নের জাল খুঁজে পাননি কেউ। যোগ করা সময়ের ৫ মিনিটে পাভার্দের গোলে বার্সার যন্ত্রণা আরও বেড়েছে। জশুয়া কিমিখের ক্রস থেকে গোল করেন। তার আগে ৫৫ মিনিটে অফসাইডের কারণে নাব্রির একটি গোল বাতিল হয়। নইলে আরও বেশি গোল ব্যবধানে জিততে পারত বায়ার্ন।