সাফজয়ী নারী ফুটবলারদের ছাদখোলা বাসে সংবর্ধনা পাওয়ার রাতে আনন্দে ঘুমাতে পারেনি রুমা আক্তার। বাফুফে ভবনের ক্যাম্পে থাকা রুমা খুব কাছ থেকে দেখেছিল সাবিনা খাতুন, মারিয়া মান্দাদের আনন্দ-উদ্যাপন। কিশোরগঞ্জের এই কিশোরীর সামনেও সাফের ট্রফি উঁচিয়ে ধরার সুযোগ এসেছে।
বাংলাদেশের অনূর্ধ্ব–১৫ নারী দলের অধিনায়ক হিসেবে সেই সুযোগ সে পাচ্ছে ঢাকার কমলাপুর স্টেডিয়ামে ১ নভেম্বর শুরু হতে যাওয়া সাফ অনূর্ধ্ব-১৫ নারী চ্যাম্পিয়নশিপে।
২০১৭ সালে প্রথম সাফ অনূর্ধ্ব-১৫ নারী চ্যাম্পিয়নশিপে শিরোপা জেতে বাংলাদেশ। ২০১৮ ও ২০১৯ সালে ফাইনালে ভারতের কাছে হেরে রানার্সআপ। কিন্তু শক্তিশালী ভারত এবার নেই। অনূর্ধ্ব-১৫ নারী দল গঠন করেনি তারা।
বাংলাদেশই তাই শীর্ষ ফেবারিট। টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ ছাড়া খেলছে শুধু নেপাল ও ভুটান। তিন দল একে–অন্যের সঙ্গে দুবার খেলবে। সর্বোচ্চ পয়েন্ট পাওয়া দল শিরোপা জিতবে। ভুটানের সঙ্গে বাংলাদেশের দুটি ম্যাচ ১ ও ৭ নভেম্বর। ৫ ও ১১ নভেম্বর নেপালের সঙ্গে। প্রতিদিন একটি করে ম্যাচ। শুরু বিকেল সাড়ে চারটায়।
ঘরের মাঠে নেপাল ও ভুটানকে হারিয়ে বাংলাদেশের পক্ষে চ্যাম্পিয়ন হওয়া মোটেও কঠিন নয়। দেশের মাটিতে খেলাও বাড়তি সুবিধা। তবে বাংলাদেশ কোচ গোলাম রব্বানী নেপাল ও ভুটানকে সমীহ করছেন।
আজ বাফুফে ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘কোরিয়ান কোচের অধীনে নেপাল দল তাদের একাডেমিতে নিয়মিত অনুশীলন করেছে। ভুটানেও মেয়েদের ফুটবল একাডেমি আছে। ওরাও ভালো প্রস্তুতি নিয়ে এসেছে। মনে হচ্ছে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ টুর্নামেন্টই হবে।’
তবে চ্যাম্পিয়ন হওয়াই বাংলাদেশ কোচের মূল লক্ষ্য, ‘আমাদের এই মেয়েরা কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেনি। কিন্তু অনেক প্রতিভাবান খেলোয়াড় আছে। আমি ওদের নিয়ে আশাবাদী। চ্যাম্পিয়ন হতেই খেলব।’
চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লক্ষ্যের কথা বলেছে কিশোরগঞ্জের জাফরাবাদ উচ্চবিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী ও বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক রুমাও। তাঁর কথা, ‘এত তাড়াতাড়ি জাতীয় দলের (বয়সভিত্তিক) জার্সি পরতে পারব ভাবিনি। দেশের মাটিতে খেলা, ট্রফিটা দেশেই রেখে দিতে চাই।’
২৩ সদস্যের বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৫ দলে শুধু ডিফেন্ডার জয়নব বিবি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছে আগে। বাকি ২২ জনই প্রথম খেলবে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায়। গত জুন থেকে তারা প্রস্তুতি শুরু করে। কোনো প্রস্তুতি ম্যাচ অবশ্য খেলা হয়নি।
তবে অনভিজ্ঞ হলেও বাফুফের টেকনিক্যাল ডিরেক্টর পল স্মলি এই মেয়েদের মধ্যে দেখছেন সম্ভাবনা, ‘এই টুর্নামেন্ট দিয়ে আশা করি নতুন প্রজন্মের মেয়েরা উঠে আসবে। ২৩ জন মেয়েই এই টুর্নামেন্টে খেলতে কঠোর পরিশ্রম করেছে।’