ডিফেন্ডাররা দলকে জেতালে গর্ব হয় তপুর

তারিক কাজীর একমাত্র গোলেই জিতেছে বাংলাদেশছবি: প্রথম আলো

২০১৩ সাল থেকে জাতীয় দলে খেলছেন। ৪৬ ম্যাচে গোল ৬টি। বাংলাদেশের বর্তমান জাতীয় দলে ডিফেন্ডার তপু বর্মণই সর্বোচ্চ গোলদাতা। দলকে জিতিয়েছেন একাধিকবার। ঘরের মাঠে সাফে দুবার দলকে জিতিয়েছেন।

গোল করেছেন মালদ্বীপেও। আজ সিলেটে ফিফা প্রীতি ম্যাচে সেশেলসের বিপক্ষে বাংলাদেশের জয়ের নায়কও একজন ডিফেন্ডার। তারিক কাজীর একমাত্র গোলেই জিতেছে বাংলাদেশ

ম্যাচের পর কোচ হাভিয়ের কাবরেরার সঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে আসনে তপু বর্মণ। সেখানেই আসে প্রসঙ্গটা। বারবার ডিফেন্ডারদের ত্রাতা হওয়া কেমন লাগছে জানতে চাইলে তপু বলেন, ‘এখন অলআউট ফুটবলে কে গোল করল, কে করল না, সেটা বিষয় নয়। যে সুযোগ পাবে বা যার কাছে বল আসবে, সে-ই গোল করবে। অবশ্যই সবাই গোল করার চেষ্টা করে। তারিক আজ গোল করেছে, এটা বেশ ভালো।’

আরও পড়ুন

বছরের পর বছর ডিফেন্ডাররা যেভাবে দলকে টানছেন, এটা দেখে গর্ব হয় কি না—প্রশ্নে তপুর উত্তর, ‘আধুনিক ফুটবলে দেখুন ডিফেন্ডাররা অনেক ম্যাচ জেতায়। আমাদের দেশেও জেতায়। কাজেই ডিফেন্ডার হিসেবে বাংলাদেশকে জেতাতে পারলে গর্ব হয়।’

কোচ হাভিয়ের কাবরেরার সঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে আসনে তপু বর্মণ
ছবি: প্রথম আলো

জয়ের পর নিজের তৃপ্তি জানিয়ে বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য ছিল আজকের ম্যাচটা জিতব। কোচ বলে দিয়েছেন আনন্দ করার সময় নেই। ২৮ তারিখের ম্যাচটার জন্য আমরা এখন তৈরি হব। ভালো খেলার জন্য অবশ্যই।’

এই ম্যাচের জন্য ২২ দিন ধরে সৌদি আরব আর সিলেটে পরিশ্রম করেছেন জানিয়ে তপুর সংযোজন, ‘আমাদের পরিশ্রমের ফল এই ১-০ জয়। সেশেলস একটা সময় আমাদের ওপর ভালো চাপ দিয়েছিল। সেখান থেকে পরিস্থিতি সামলে জিতে বেরিয়ে আসা ভালোই। সবকিছু মিলিয়ে এটি ছিল আমাদের একটা টিম ওয়ার্ক।’

আরও পড়ুন

কোচ আগের দিন বলেছিলেন গর্ব করার মতো খেলতে চান। কিন্তু সেটা হয়নি। তবে ছয় মাস পর বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে নেমে যেমন পারফরম্যান্স করার উচিত ছিল, সেটা করতে পেরেছেন বলে দাবি তপুর, ‘আমরা মাঠে ৯৯.৯ ভাগ দিতে পেরেছি। সামনের ম্যাচে আশা করি আরও ভালো খেলব। কারণ, আমরা এখন বুঝতে পেরেছি কোচ আমাদের নিয়ে আরও কাজ করবেন। অবশ্যই আমি খুশি। জেতাটাই অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটা দলের জন্য।’

বাংলাদেশ কোচ হাভিয়ের কাবরেরা বলেন, ‘এই জয়ে আমরা গর্বিত।’ তবে উদ্‌যাপনের সময় নেই জানিয়ে বলেছেন, ‘আমরা ২৮ তারিখের ম্যাচটার দিকে এখন তাকিয়ে আছি।’ ম্যাচ সম্পর্কে তাঁর মূল্যায়ন,‌ ‘কখনো কখনো আমরা ম্যাচটা ভালোভাবে ধরেছি। আবার কখনো ম্যাচে ওরা ভালো লড়াই করেছে। আমরা প্রথম ২০-২৫ মিনিট ভালো ফুটবল খেলেছি। আমরা ভেতরে ঢুকছিলাম। অ্যাটাকিং মিডফিল্ডারা যাচ্ছিল বারবার। এটা ভালো দিক।’

দ্বিতীয়ার্ধে কোচের বিশ্বাস ছিল, বাংলাদেশ দল বল পায়ে রাখতে পারবে। কিন্তু এই সময় ভুল হয়েছে অনেক। দ্বিতীয়ার্ধের প্রথম পাঁচ মিনিট পরই বাংলাদেশ কোথায় যেন হারিয়ে খুঁজছিল নিজেদের। এর কারণ খুঁজে বের করতে ম্যাচ ভিডিও নিয়ে বসবেন বলে জানালেন কোচ।

বিরতির সময় বাংলাদেশ কোচের নির্দেশনা ছিল, সেশেলসের ব্যাকলাইনের পেছনের জায়গাটা কাজে লাগাতে। কিন্তু এই অর্থে অতিথি দলের হাইলাইন বা ব্যাকলাইন কোনোটাই ভাঙতে পারেনি স্বাগতিকেরা। কোচ তা স্বীকারও করে নিয়েছেন, ‘দ্বিতীয়ার্ধে যা করা দরকার ছিল, সেটা আমরা পারিনি। আমাদের এখন দেখতে হবে দ্বিতীয়ার্ধে কী ঘটেছে, ওরা কীভাবে ভালো খেলল। উন্নতি করতে না পারলে দ্বিতীয় ম্যচেও আমাদের সমস্যায় পড়তে হবে।’ কোচের সংযোজন, ‘আমরা সেশেলসের অনেক ম্যাচ দেখেছি। ওরা প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ একটা দল।’

সেশেলসের কোচ বলেছেন, দ্বিতীয়ার্থে বাংলাদেশ অনেক বেশি শরীরনির্ভর ফুটবল খেলেছে ও সময় নষ্ট করেছে। যেটা ম্যাচের গতি নষ্ট করেছে। তবে এটা স্বীকার করতেই হবে, দ্বিতীয়ার্থে সেশেলস ভালো খেলেছে।

এ ম্যাচে জয় বাংলাদেশের প্রাপ্য নয়, দাবি সেশেলসের কোচ নেভিল বার্থ
ছবি: প্রথম আলো

জামাল ভূঁইয়াকে এদিন রক্ষণের কাজে নয়, আক্রমণে রেখেছিলেন কোচ। জামাল অনেক বলও তৈরি করেছেন। কোচ সে প্রসঙ্গে বলেন,‌ ‘ম্যাচ দেখে থাকলে বুঝবেন, আমাদের মাঝমাঠ সংগঠিত ছিল। দুই সোহেল রানাই সৃজনশীলতা দেখিয়েছে। জামাল ও জনি মাঠে ছিল দারুণ। জামাল চূড়ান্ত পাস দিয়েছে। আমরা ভাগ্যবান যে এলিটা মাঠে আসার পর আক্রমণে ধার বাড়ে। সে আজ গোল পায়নি। তবে আশা করি, আগামী ম্যাচে সে গোল পাবে।’

তবে এ ম্যাচে জয় বাংলাদেশের প্রাপ্য নয়, বলছেন সেশেলসের কোচ নেভিল বার্থ। তাঁর কথা, ‘আমাদের কিছু ভুলে হেরেছি। বাংলাদেশের এই জয় প্রাপ্য নয় । ম্যাচ ১-১ হলে ঠিক ছিল। এমনকি আমরা জিততেও পারতাম।’