শীতের জানুয়ারিতে গরম ফুটবল নিয়ে হাজির চ্যাম্পিয়নস লিগ
জানুয়ারিতে চ্যাম্পিয়নস লিগের ম্যাচ—এমন কিছু আগে কখনো দেখেনি ফুটবল। ৩৬ দলের নতুন কাঠামোর চ্যাম্পিয়নস লিগে বেড়ে গেছে ম্যাচের সংখ্যা। দলগুলো এবার চিরাচরিত ৬ ম্যাচের হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে গ্রুপ পর্বের পরিবর্তে প্রথম রাউন্ড খেলছে আটটি ভিন্ন দলের বিপক্ষে আটটি ম্যাচ। বাড়তি সেই দুটি ম্যাচ আয়োজন করতে গিয়েই জানুয়ারিতে ঢুকেছে চ্যাম্পিয়নস লিগ।
লিগ পদ্ধতির প্রথম পর্বের শেষ দুটি ম্যাচ জানুয়ারিতেই খেলবে দলগুলো। আজ ও আগামীকাল সপ্তম ম্যাচ খেলতে মাঠে নামবে ৩৬টি দল। অষ্টম ম্যাচ আগামী সপ্তাহেই।
জানুয়ারির শেষ এই দুই সপ্তাহে অবিশ্বাস্য কিছু দেখার জন্য প্রস্তুত থাকা ভালো। জানুয়ারির ইউরোপে কনকনে শীতে মাঠের ‘গরম’ ফুটবল উষ্ণতা ছড়ানোর সব উপকরণই যে সাজিয়ে রেখেছে।
ইউরোপীয় ফুটবলের বড় কিছু ক্লাবের ভাগ্য যে এখনো সুতোয় ঝুলছে। ৩৬ দল থেকে ২৪টি দল যাবে নকআউট পর্বে। সেই ২৪-এ জায়গা না পাওয়ার শঙ্কা নিয়েই জানুয়ারি পর্ব খেলতে নামবে ম্যানচেস্টার সিটি, পিএসজি ও রিয়াল মাদ্রিদের মতো পরাশক্তিরা।
আগামীকাল প্যারিসে মুখোমুখি হবে মধ্যপ্রাচ্যের তেলের টাকার ঝনঝনানিতে চলা পিএসজি ও ম্যানচেস্টার সিটি। পেপ গার্দিওলার সিটি এই মুহূর্তে আছে পয়েন্ট তালিকার ২২-এ। পিএসজি আছে ২৫ নম্বরে। ২০২৩ সালের চ্যাম্পিয়ন সিটি ও ২০২০ সালের রানার্সআপ পিএসজি, দুই দলই এই ম্যাচের পর পয়েন্ট তালিকার ২৪-এর বাইরে থাকার শঙ্কায় আছে।
চ্যাম্পিয়নস লিগের সবচেয়ে সফল দল রিয়াল মাদ্রিদও সিটি-পিএসজির মতো সংগ্রাম করছে। ১৫ বারের চ্যাম্পিয়নরা প্রথম ছয়ের ম্যাচের তিনটিতেই হেরেছে, এই মুহূর্তে দলটি আছে ২০ নম্বরে।
রিয়াল-সিটির মতো দলের যখন এই অবস্থা ব্রেস্তের মতো পুঁচকে দল দেখিয়েছে চমক। উয়েফা র্যাঙ্কিংয়ে সবার নিচের দলটি প্রথমবার চ্যাম্পিয়নস লিগে খেলতে এসে চমকে দিয়েছে। চার ম্যাচ জেতা দলটি আছে সাতে।
লিল ছাড়াও শীর্ষ আটে আছে লিভারপুল, বার্সেলোনা, আর্সেনাল, লেভারকুসেন, অ্যাস্টন ভিলা, ইন্টার মিলান ও লিল।
সব দলের সঙ্গে ব্রেস্তের মতো ‘অচেনা’ ক্লাবকে দেখে নতুন কাঠামোর জয়গানই গাইলেন উয়েফার ডেপুটি জেনারেল সেক্রেটারি জর্জো মার্কেত্তি। কিছুদিন আগে এপিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মার্কেত্তি বলেন, ‘টুর্নামেন্ট শুরুর আগে শীর্ষ আট দল হিসেবে এই আট দলের নাম বলাটা অসম্ভব ছিল। আমার মনে হয় কাঠামোর বড় অবদান আছে এতে। কাজটা আরও কঠিন হয়েছে।’
নকআউট পর্বে কারা যাবে
২৯ জানুয়ারি প্রথম পর্ব শেষে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে থাকা আট দল সরাসরি সুযোগ যাবে শেষ ষোলোতে। নবম থেকে ২৪তম স্থানে থাকা দলগুলো যাবে নকআউট প্লে-অফে। তলানির ১২ দল বাদ পড়বে।
এ পর্যন্ত মাত্র দুটি দলে নকআউট পর্ব খেলা নিশ্চিত হয়েছে। এই দুই দলের একটি লিভারপুল জিতেছে প্রথম ছয় ম্যাচেই। আজ লিলের বিপক্ষে ১ পয়েন্ট পেলেই শেষ ষোলোও নিশ্চিত করে ফেলবে আর্নে স্লটের দল। সেরা ২৪-এ থেকে নকআউট পর্ব নিশ্চিত করা অন্য দলটি বার্সেলোনা।
মঙ্গলবারের ম্যাচ
লিভারপুল আতিথেয়তা দেবে আটে থাকা লিলকে। বার্সেলোনা যাবে পর্তুগালে, খেলবে ১৫ নম্বর দল বেনফিকার বিপক্ষে। ১১ নম্বরে থাকা আতলেতিকো মাদ্রিদ আজ চারে থাকা লেভারকুসেনকে হারিয়েই উঠে যেতে পারে চারে। দুদলের পয়েন্টের ব্যবধান যে মাত্র এক।
১৯৮২ সালে ইউরোপিয়ান কাপজয়ী অ্যাস্টন ভিলা আজ মোনাকোকে হারালেই উঠে যেতে পারে নকআউট পর্বে। আর আজ ২৬ নম্বরে থাকা স্টুটগার্ট স্লোভানকে হারালে চাপে ফেলে দেবে পিএসজি ও সিটিকে।
বুধবারের ম্যাচ
রিয়াল মাদ্রিদ ঘরের মাঠে খেলবে সালজবুর্গের বিপক্ষে। তৃতীয় স্থানে থাকা আর্সেনাল ২৪ নম্বরে থাকা দিনামো জাগরেবকে হারিয়ে নিশ্চিত করে ফেলতে পারে নকআউট পর্ব। আর্সেনাল জিতলে একটু সুবিধা পাবে ম্যান সিটিও।
ষষ্ঠ স্থানে থাকা ইন্টার মিলানের প্রতিপক্ষ স্পার্তা প্রাগ। ইন্টারের সমীকরণও আর্সেনালের মতো। দশে পড়ে থাকা বায়ার্ন যাচ্ছে ফেইনুর্ডের বিপক্ষে খেলতে।