১০ জন নিয়েও আবাহনীকে রুখে মোহামেডানে স্বস্তি
দুই প্রধানের এই ম্যাচটার দিকে তাকিয়ে ছিল গোটা ফুটবল অঙ্গনই। মোহামেডান জিতলে এই প্রথম পেশাদার লিগের শিরোপা অনেকটা হেলে যেত তাদের দিকে। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আবাহনীর চেয়ে সাদা–কালোরা এগিয়ে যেত সাত পয়েন্ট। ছয় ম্যাচ হাতে রেখে সাত পয়েন্ট এগিয়ে যাওয়া মানে উৎসবের প্রস্তুতি শুরু করতে পারতেন সমর্থকেরা। আবাহনী জিতলে সাদা–কালোর সঙ্গে তাদের ব্যবধান দাঁড়াত মাত্র এক পয়েন্ট।
কিন্তু মোহামেডান-আবাহনী কোনো দলই মেলাতে পারেনি জয়ের সমীকরণ। কুমিল্লায় আজ ৪৮ মিনিট ১০ জন নিয়ে খেলেছে মোহামেডান। তারপরও আবাহনীর সঙ্গে গুরুত্বপর্ণ লিগ ম্যাচটিতে গোলশূন্য ড্র করতে পেরছে সাদা–কালোরা।
এই ড্রয়ের ফলে দুই দলের পয়েন্টের পার্থক্যে কোনো পরিবর্তন হলো না। ম্যাচের আগে দুদলের মধ্যে থাকা চার পয়েন্টের ব্যবধান ম্যাচ শেষেও একই থাকল। ১৮ ম্যাচের লিগে ১২ ম্যাচ শেষে মোহামেডানের পয়েন্ট ৩১। আবাহনীর ২৭।
এই দুদলের পেছনে থাকা বসুন্ধরা কিংসও ময়মনসিংহে আজ ১২তম ম্যাচটা ড্র করেছে পয়েন্ট তালিকার চতুর্থ দল রহমতগঞ্জের সঙ্গে। মোহামেডানের সঙ্গে ১০ পয়েন্টের ব্যবধান কমিয়ে ৭-এ আনার সুযোগটা তাই হারিয়েছে কিংস। ব্যবধান রয়ে গেছে ১০-ই।
মোহামেডান আজ শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক মেজাজে খেলছিল। প্রথম ১৫-১৬ মিনিট খেলেছে বেশ প্রাধান্য নিয়ে। কিন্তু সময়ের সঙ্গে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেনি মোজাফফরভ, দিয়াবাতেরা। ৪২ মিনিটে তো সাদা–কালোরা হয়ে যায় ১০ জনের দল।
আবাহনীর এক খেলোয়াড়কে কনুইয়ের গুতো মেরে সরাসরি লাল কার্ড দেখেন মোহামেডানের ডিফেন্ডার মাহবুব আলম। ৪৫ মিনিটে কুমিল্লার ভাষাসৈনিক শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে দেখা দেয় উত্তেজনা। ক্ষুব্ধ মোহামেডান–সমর্থকেরা বোতল, স্মোক ফ্লেয়ার ছুড়ে মারেন। মাঠ ধোঁয়াময় হয়ে থাকে কিছু সময়। মিনিট দশেক বন্ধও ছিল খেলা।
১০ জনের দল নিয়ে এমন ম্যাচে জেত অনেক কঠিন। ড্র করতে পারাও কৃতিত্ব। মোহামেডানের এই ড্রটা তাদের কাছে আসলে জয়েই সমান। ম্যাচ শেষে মোহামেডানের ডাগআউট দেখেই সেটা বোঝা গেছে। কোচ আলফাজ আহমেদের কথায়ও বোঝা যাচ্ছে তা। কুমিল্লা থেকে ফোনে বললেন, ‘১০ জন নিয়ে আবাহনীর মতো দলের সঙ্গে জেতা কঠিন। লাল কার্ডটা পিছিয়ে দেয় আমাদের। এ অবস্থায় এক পয়েন্ট পেয়ে আমি অখুশি না। তবে জিতলে বেশি খুশি হতাম।’
আবাহনীর কাছে এই ড্রটা হারের মতোই। ৭০ মিনিটের পর আবাহনী চাপ তৈরি করেছে মোহামেডানের রক্ষণে। ৮০ মিনিটে পর তো ব্যতিব্যস্তই ছিলেন মোহামেডান গোলকিপার সুজন। এই সময় টানা তিনটি কর্নার পায় আবাহনী। মোহামেডান রক্ষণেও চিড় ধরছিল বারবার। কিন্তু সুমন রেজা, ইব্রাহিম, রাফায়েলদের ফিনিশিংয়ের অভাবে গোল আসেনি। চলতি প্রিমিয়ার লিগে মোহামেডানের সঙ্গে পয়েন্টের ব্যবধান কমিয়ে আনার একটা সুযোগই হারাল আবাহনী।