চ্যাম্পিয়নস লিগে গত রাতে কোন ম্যাচে কী ঘটেছে
কেমন হলো চ্যাম্পিয়নস লিগে গত রাতে ম্যাচগুলো। যে চারটি গ্রুপের খেলা হয়েছে সেখানে কোন দলের কী অবস্থান—
গ্রুপ ‘এইচ’
পিএসজির তিন তারকা লিওনেল মেসি, নেইমার ও কিলিয়ান এমবাপ্পে প্রথমার্ধেই গোলের খাতায় নাম লেখান। জোড়া গোল করেন মেসি। বিরতির পর আরও একটি গোল করে মেসির মতো জোড়া গোল তুলে নেন এমবাপ্পেও। অন্য গোলটি সোলেরের। হাইফার হয়ে আত্মঘাতী গোল গোল্ডবার্গের। ম্যাচের ৩৮ ও ৫০ মিনিটে ইসরাইলি ক্লাবটির হয়ে জোড়া গোল করেন সেক। তবে বল পোস্টে না লাগলে হ্যাটট্রিক পেতে পারতেন দুটি গোল বানিয়ে দেওয়া মেসি। এই জয়ে নকআউট পর্বও নিশ্চিত হলো পিএসজির।
জেনে রাখা ভালো: চ্যাম্পিয়নস লিগে এ নিয়ে তৃতীয় ম্যাচে ৭+ গোল পেল পিএসজি। ২০০০ সালে রোজেনবার্গের বিপক্ষে জিতেছিল ৭-২ গোলে। ২০১৭ সালে সেল্টিকের বিপক্ষে জয়টা ৭-১ গোলে।
ঘরের মাঠে ১৭ মিনিটে আন্তনিও সিলভার গোলে এগিয়ে যায় বেনফিকা। ৪ মিনিট পরই কর্নার থেকে হেডে গোল করেন জুভেন্টাসের ময়েস কিন। কিন্তু ২৮ মিনিটে বক্সে হ্যান্ডবলের অপরাধে পেনাল্টি থেকে গোল হজম করে জুভেন্টাস। গোলটি করেন বেনফিকার হোয়াও মারিও। ৩৫ মিনিটে বেনফিকাকে তৃতীয় গোলটি এনে দেন রাফা সিলভা। বিরতির পর ৫০ মিনিটে নিজের দ্বিতীয় গোলটি আদায় করে নেন রাফা। আরকাদিউস মিলিক ও ওয়েস্টন ম্যাককেনি এরপর জুভেন্টাসের হয়ে দুটি গোল দিলেও হার এড়াতে পারেনি ইতালিয়ান ক্লাবটি। এই হারে চ্যাম্পিয়নস লিগ থেকে বিদায় নিশ্চিত হলো জুভেন্টাসের। শেষ ষোলোয় উঠল পর্তুগিজ ক্লাব বেনফিকা।
জেনে রাখা ভালো: ২০১৩ সালের পর এই প্রথম চ্যাম্পিয়নস লিগের গ্রুপপর্ব পাড়ি দিতে পারল না জুভেন্টাস।
গ্রুপ ‘জি’
বরুসিয়া ডর্টমুন্ড ০-০ ম্যানচেস্টার সিটি
জার্মান ক্লাবটির মাঠে ৫৮ মিনিটে পেনাল্টি পেয়েছিল ম্যানচেস্টার সিটি। বক্সে রিয়াদ মাহরেজকে ফাউল করেন ডর্টমুন্ডের এমেরে কান। কিন্তু পেনাল্টি থেকে গোল করতে পারেননি মাহরেজ। ডর্টমুন্ড গোলকিপার গ্রেগর কোবেল ডান দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে পেনাল্টি রুখে দেন। গোলশূন্য ড্রয়ে দুই দলেরই খুশি থাকার কথা। সিটি এই গ্রুপের শীর্ষস্থান নিয়ে শেষ ষোলোয় উঠেছে। ডর্টমুন্ড উঠেছে গ্রুপের রানার্সআপ দল হিসেবে।
জেনে রাখা ভালো: ২০১৬ সালে পেপ গার্দিওলা ম্যানচেস্টার সিটি কোচের দায়িত্ব নেওয়ার পর এ পর্যন্ত ৮০টি পেনাল্টি থেকে ২৫টি শটে গোল করতে পারেননি ক্লাবটির খেলোয়াড়েরা।
সেভিয়া ৩-০ কোপেনহেগেন
বিরতির পর স্বাগতিকদের হয়ে গোল করেন ইউসুফ এল নেসরি, ইসকো ও গঞ্জালো মন্তিয়েল। এই জয়ে শেষ ষোলোয় ওঠার আশা ক্ষীণভাবে হলেও টিকিয়ে রাখল সেভিয়া। ডেনিশ ক্লাবটির কপালও খারাপ। তাঁদের খেলোয়াড় ভিক্টর ক্লাসেনের শট পোস্টে লেগে লক্ষ্যভ্রষ্ঠ হয়। ডিফেন্ডার দাভিট খোচালোভা লাল কার্ড দেখায় যোগ করা সময়ে ১০ জন নিয়ে খেলেছে সেভিয়া।
জেনে রাখা ভালো: সেভিয়ার হয়ে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে এটাই প্রথম গোল ইসকোর। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারির পর চ্যাম্পিয়নস লিগে এটাই প্রথম গোল স্প্যানিশ তারকার।
এক নজরে ফল:
সালজবুর্গ ১–২ চেলসি
সেল্টিক ১–১ শাখতার
লাইপজিগ ৩–২ রিয়াল মাদ্রিদ
ডর্টমুন্ড ০–০ ম্যানচেস্টার সিটি
পিএসজি ৭–২ ম্যাকাবি হাইফা
সেভিয়া ৩–০ কোপেনহেগেন
জাগরেব ০–৪ মিলান
বেনফিকা ৪–৩ জুভেন্টাস
গ্রুপ ‘ই’
২৩ মিনিটে মাতেও কোভাচিচের গোলে এগিয়ে যায় চেলসি। বিরতির পর ৪৮ মিনিটে চুকু্বুইকে আদামার গোলে সমতায় ফেরে সালজবুর্গ। ৬৪ মিনিটে কাই হাভার্টজের দুর্দান্ত শটে করে গোলে জয় তুলে নেওয়ার সঙ্গে শেষ ষোলোর টিকিটও কেটেছে চেলসি।
জেনে রাখা ভালো: কোচ গ্রাহাম পটারের অধীনে এ নিয়ে টানা ৯ ম্যাচে অপরাজিত চেলসি।
দিনামো জাগরেব ০-৪ এসি মিলান
জাগরেবের মাঠে প্রথমার্ধে মাতেও গাব্বিয়ার গোলে এগিয়ে যায় মিলান। বিরতির পর ইতালিয়ান ক্লাবটির হয়ে গোল করেন রাফায়েল লিয়াও, অলিভার জিরু ও রবার্ট লুবিচিচ। এই জয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগের শেষ ষোলোয় খেলার আশা বাঁচিয়ে রাখল ইতালিয়ান ক্লাব মিলান।
জেনে রাখা ভালো: ১৭ বছর পর চ্যাম্পিয়নস লিগে প্রতিপক্ষের মাঠে ৪ গোল করল মিলান। সর্বশেষ ৪ গোল করেছিল তুর্কি ক্লাব ফেনারবাখের মাঠে। চ্যাম্পিয়নস লিগে নিজেদের ইতিহাসে প্রতিপক্ষের মাঠে এ নিয়ে চতুর্থবার ৪ গোল করল ইতালিয়ান ক্লাবটি।
গ্রুপ ‘এফ’
সেল্টিক ১- ১ শাখতার
৩৪ মিনিটে গিয়াকৌমাকসিসের গোলে এগিয়ে যায় স্বাগতিক সেল্টিক। কিন্তু বিরতির পর ৫৮ মিনিটে শাখতার ফরোয়ার্ড মিখাইলো মাদরুকের অবিশ্বাস্য গোলে সমতায় ফেরে ইউক্রেনের ক্লাবটি। এই হারে চ্যাম্পিয়নস লিগের শেষ ষোলোয় ওঠার আশা মিলিয়ে গেল স্কটিশ ক্লাব সেল্টিকের। আগামী সপ্তাহে লাইপজিগকে হারাতে পারলেই শেষ ষোলোয় উঠবে শাখতার দোনেৎস্ক।
জেনে রাখা ভালো: চ্যাম্পিয়নস লিগের এই মৌসুমে পাঁচ ম্যাচ খেলে এখনো জিততে পারেনি সেল্টিক।
লাইপজিগ ৩-২ রিয়াল মাদ্রিদ
প্রথমার্ধে ভিনিসিয়ুস ও বিরতির পর রদ্রিগো পেনাল্টি থেকে গোল করেন রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে। গার্ভাদিওল ও এনকুনুর গোলের ১৮ মিনিটের মধ্যেই ২ গোলে এগিয়ে গিয়েছিল লাইপজিগ। জার্মান ক্লাবটির হয়ে ৮১ মিনিটে তৃতীয় গোলটি করেন তিমো ভের্নার।
জেনে রাখা ভালো: চ্যাম্পিয়নস লিগে রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে সবচেয়ে কম বয়সে পেনাল্টি থেকে গোল করার রেকর্ড গড়লেন ব্রাজিলের রদ্রিগো গোয়েস। ২১ বছর ২৮৯ দিন বয়সে গোল করে রাউলের রেকর্ড ভাঙলেন তিনি। ২০০০ সালে ২২ বছর ২৬১ দিনে দিনামো কিয়েভের বিপক্ষে গোল করে রেকর্ডটি গড়েছিলেন রাউল গঞ্জালেস।