কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে কর্নার নেওয়ার ‘টুল’ বানিয়েছে গুগল

কর্নার কিকে সফলতা পেতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি ব্যবহার করে ‘টুল’ বানিয়েছে গুগল। ছবিটি প্রতীকীএএফপি

কর্নার কিক নিতে সেরা কৌশলগুলো কি হতে পারে—এ বিষয়ে সার্চ ইঞ্জিন প্রতিষ্ঠান গুগল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি ব্যবহার করে একটি ‘টুল’ বানিয়েছে বলে জানিয়েছেন গবেষকেরা। এ টুল অনুমোদন করেছেন লিভারপুলের ফুটবল বিশ্লেষকেরা।

লিভারপুলের কোনো খেলোয়াড় কিংবা অন্য কেউ এই টুলের পরামর্শ এখনো মাঠে ফলাননি। অর্থাৎ, কোনো মানুষ এখন পর্যন্ত এই টুল ব্যবহার করেননি। একজন বিশেষজ্ঞ দাবি করেছেন, এই টুলের কার্যকারিতা শুধু মাঠেই বোঝা যাবে।

কর্নার কিক কীভাবে নেওয়া হবে—ম্যাচের আগেই এ নিয়ে পরিকল্পনা করে রাখে ক্লাবগুলো। বড় ক্লাবগুলো আরও এক কাঠি সরেস। বেশ আগে থেকেই তারা ভিডিও ফুটেজ এবং অন্যান্য তথ্য বিশ্লেষণ করে কর্নার কিক নেওয়ার পরিকল্পনা তৈরিতে বিশেষজ্ঞ নিয়োগ করেছে।

আরও পড়ুন

গুগলের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে কাজ করার সেকশনের নাম ‘গুগল ডিপমাইন্ড’। এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি ব্যবহার করে কর্নার নিয়ে নিজেদের গবেষণাপত্র (ট্যাকটিকএআই সিস্টেম) জার্নাল নেচার কমিউনিকেশনসে প্রকাশ করেছে গুগল। আর এই ‘টুল’ ভালোভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল লিভারপুলের পাঁচ বিশেষজ্ঞকে।

কর্নার থেকে গোল করা এবং গোল ঠেকানোর সময় খেলোয়াড়দের কোথায় কোথায় দাঁড় করাতে হবে—সে বিষয়ে কোচকে পরামর্শ দিতে পারে গুগলের এই ট্যাকটিকএআই সিস্টেম। ৫০টি আলাদা কর্নার সেটআপ করে বিশেষজ্ঞদের বলা হয়েছিল, পূর্বের কর্নার নেওয়ার পদ্ধতিগুলো এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির পরামর্শ থেকে সেরাটা বেছে নিতে। বিশেষজ্ঞরা ৫০টি আলাদা কর্নার সেটআপে জানতেন না কোনগুলো প্রচলিত পদ্ধতি এবং কোনগুলো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে তৈরি করা। লিভারপুলের বিশ্লেষকেরা এর মধ্যে ৪৫ বারই ট্যাকটিকএআই পদ্ধতি বেছে নিয়েছেন। অর্থাৎ, প্রায় ৯০ শতাংশ সময়ই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির পরামর্শ পছন্দ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।

ছবিটি বানিয়েছে গুগল ডিপমাইন্ড। কর্নার কিকের সময় খেলোয়াড়দের অবস্থান ঠিক করে দেবে এই টুল
গুগল ডিপমাইন্ড

গুগল ডিপমাইন্ড সেকশনের গবেষক ও বিজ্ঞানী পিটার ভেলিচকোভিচ দাবি করেন, এই টুলই প্রথম ‘এআই অ্যাসিস্ট্যান্ট’, যা ‘সাহায্য এবং বাস্তব পরামর্শ দিতে সক্ষম’। খেলাধুলায় মানুষের মস্তিষ্কপ্রসূত কৌশলের সঙ্গে এই টুলের কৌশলের পার্থক্য নেই বললেই চলে। প্রিমিয়ার লিগে খেলোয়াড়দের পজিশন, ওজন, গতি ও উচ্চতার তথ্য কাজে লাগিয়ে এই টুল তৈরি করা হয়েছে। প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচে গড়ে প্রায় ১০টি করে কর্নার কিক দেখা যায়।

আরও পড়ুন

লিভারপুল ও ডিপমাইন্ড এই প্রথম একসঙ্গে কাজ করছে না। গুগল ডিপমাইন্ড কিনে নেওয়ার আগে এটি ছিল একটি ব্রিটিশ স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠান। এই ট্যাকটিকএআই সিস্টেম ‘টুল’ নিয়ে গবেষণায় নেতৃত্ব দেওয়া লেখক ঝে ওয়াং জানিয়েছেন, ডিপমাইন্ড–এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ডেমিস হাসাবিস লিভারপুলের ‘বড় ভক্ত’। ভেলিচকোভিচ জানিয়েছেন, লিভারপুলের খেলোয়াড়েরা এখনো ট্যাকটিকএআই সিস্টেম ব্যবহার করেননি। তবে ভবিষ্যতে তাকিয়ে ভেলিচকোভিচ বলেছেন, ‘আমরা হয়তো দেখব ক্লাবগুলো (টুলের) একই কৌশল ব্যবহার করছে।’

কর্নার নিয়ে লিভারপুলের নিকট অতীতে একটি সুখস্মৃতিও আছে। ২০১৯ চ্যাম্পিয়নস লিগ সেমিফাইনালে বার্সেলোনার বিপক্ষে কর্নার থেকে ডিভক ওরিগির গোলটি অনলাইনে ভোটাভুটিতে এই ক্লাবের পক্ষে সর্বকালের সেরা গোলের স্বীকৃতি পেয়েছে।

আরও পড়ুন