অথচ তারাই 'ফুটবলের জন্মদাতা'!

আন্তর্জাতিক ফুটবলে আবারও সাফল্যহীন ইংল্যান্ড। ছবি: এএফপি
আন্তর্জাতিক ফুটবলে আবারও সাফল্যহীন ইংল্যান্ড। ছবি: এএফপি

ফুটবলে শেষ কবে বড় কোনো সাফল্য পেয়েছিল ইংলিশরা? আইসল্যান্ডের কাছে হেরে ফুটবলের আরও একটি বড় আসর থেকে ইংল্যান্ডের বিদায়ের পর এমন প্রশ্ন আছে সবার মনেই। কিন্তু অনেক চেষ্টা করেও ইংলিশ সাফল্যের টাটকা কোনো স্মৃতি মনে করতে পারছেন না কেউই। এমনটাই স্বাভাবিক, ১৯৬৬ সালে ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ জয়ের পর ফুটবলে যে বড় কোনো সাফল্যই নেই ইংল্যান্ডের; যারা নিজেদের ফুটবলের ‘জনক’ বলে গর্ব অনুভব করে।

ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ফুটবল লিগ হিসেবে পরিচিত। আর্সেনাল, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, চেলসি, লিভারপুল কিংবা টটেনহামের মতো ক্লাব। লিগে দারুণ সব ফুটবলার। ফুটবলের উন্নত অবকাঠামো বলতে যা বোঝায়, তার প্রায় সবই আছে দেশটিতে। বিশ্বের সবচেয়ে প্রতিযোগিতামূলক, সবচেয়ে সেরা লিগ। কিন্তু তারপরেও জাতীয় দলের কোনো সাফল্য নেই!
ফুটবলের বড় আসরগুলোতে ইংল্যান্ডের গল্পটা চিরদিনই আক্ষেপের, হতাশার আর না পাওয়ার বেদনার। বড় আসরে ইংল্যান্ডের বিদায়ের মুহূর্তে চোখের জল নিয়ে শূন্য দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকাই যেন একমাত্র নিয়তি ইংলিশ ফুটবলপ্রেমীদের।
১৯৫০ সালে প্রথমবার বিশ্বকাপ ফুটবলে অংশ নেওয়া ইংলিশদের আগে ও পরে সাফল্য বলতে ওই একটাই। ১৯৬৬ বিশ্বকাপ, যা নিয়েও কিছু মানুষের​ মনে প্রশ্ন আছে। এর বাইরে তাদের ‘সেরা’ সাফল্য ১৯৯০ বিশ্বকাপ চতুর্থ স্থানে থেকে শেষ করা। গত চার বিশ্বকাপের তিনবারই দ্বিতীয় রাউন্ডের মধ্যেই বাদ পড়েছে তারা। গতবার বাদ পড়েছে প্রথম রাউন্ডেই!
বিশ্বকাপ জিতলেও ইউরোপ সেরার ট্রফি কিন্তু জেতা হয়নি তাদের। সবচেয়ে বড় সাফল্য ১৯৯৬ সালে সেমিফাইনালে খেলা। ১৯৬৮ সালে একবার তৃতীয় স্থান পেলেও সেবারের প্রতিযোগিতাটি ছিল চার দলকে নিয়ে।
’৯৬ ইউরোর সেমিফাইনালে খেলার বাইরে ২০০৪ ও ২০১২ সালে শেষ আটে পৌঁছেছিল। ইউরোয় সাফল্য বলতে এতটুকুই। গ্রুপ পর্ব থেকে বাদ পড়ার ঘটনা ঘটেছে চারবার।
এবারও প্রত্যাশা ছিল আকাশছোঁয়াই। ওয়েইন রুনিরা ছিলেন, ছিলেন ভার্ডি-কেইন-রাশফোর্ডদের মতো তরুণ তারকারা। নতুন দিনের প্রত্যাশার কথা শোনাচ্ছিলেন এই তরুণেরা। কিন্তু ইংল্যান্ডের নিয়তি বাঁধা পড়ে রইল সেই একই বৃত্তেই। নবাগত দল আইসল্যান্ডের কাছে হেরেই আন্তর্জাতিক ফুটবলে সাফল্যের স্বপ্ন আরও একবার বিসর্জন দিল তারা।
ইংল্যান্ড পারে না, ইংল্যান্ড সাফল্য পায় না—এ যেন অভিশপ্ত এক পরম্পরা।