অনেক নাটকের পর অবশেষে আতলেতিকোয় সুয়ারেজ

অবশেষে আতলেতিকোয় সুয়ারেজছবি: রয়টার্স

শেষ পর্যন্ত আতলেতিকো মাদ্রিদেই যাচ্ছেন লুইস সুয়ারেজ। মাঝখান দিয়ে বার্সেলোনা নিজেদের হাত নোংরা করল। সভাপতি বার্তোমেউ শর্তটর্ত আরোপ করতে গিয়ে জলঘোলা করলেন। আতলেতিকো মাদ্রিদ নিজেদের ওয়েবসাইটে লিখেছে সুয়ারেজ মেডিকেল পরীক্ষায় উতরে গেলেই চুক্তির আনুষ্ঠানিকতা সেরে ফেলবে তারা। উরুগুইয়ান এই স্ট্রাইকারকে বিনা মূল্যে ছেড়ে দিলেও পরে আতলেতিকোর কাছে পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে সর্বোচ্চ ৬ মিলিয়ন বা ৬০ লাখ ইউরো পেতে পারে বার্সেলোনা। ২০১৪ সালে ন্যু ক্যাম্পে যোগ দেওয়ার পর থেকে ২৮৩ ম্যাচে ১৯৮ গোল করে নিজেকে অপরিহার্য তারকায় পরিণত করেছিলেন তিনি। লিওনেল মেসি ও নেইমারের সঙ্গে মিলে তৈরি করেছিলেন ভয়ংকর ত্রিফলা ‘এমএসএন’।

মৌসুমের শুরুতে বার্সেলোনার কোচ হিসেবে রোনাল্ড কোমান দিয়েই জানিয়ে দেন তাঁর পরিকল্পনায় সুয়ারেজ নেই। উরুগুইয়ান তারকা বার্সা ছেড়ে কোথায় যোগ দেবেন, এ নিয়ে শুরু হয় জল্পনা-কল্পনা। প্রথমে শোনা গিয়েছিল জুভেন্টাসের কথা। তুরিনের যাওয়া যখন প্রায় নিশ্চিত, তখনই জটিলতা তৈরি হলো ইতালীয় ভিসা পাওয়া নিয়ে। ইতালিয়ান নিয়ম অনুযায়ী এক মৌসুমে ইউরোপীয় নন, এমন দুজনের বেশি খেলোয়াড় নেওয়া যায় না। সে কোটা পূরণ হয়ে যাওয়ায় ইতালীয় পাসপোর্ট নিয়েই জুভেন্টাসে যেতে হতো তাঁকে। আর সেটার জন্য ‘বি ওয়ান’ পরীক্ষা দিতে হয়েছিল সুয়ারেজকে। সেখানেও জটিলতা তৈরি হয়। ৩৩ বছর বয়সী তারকা সেই পরীক্ষায় পাস করলেও অভিযোগ ওঠে, তাঁকে নিয়ে প্রশ্ন ফাঁস করিয়ে পাস করানো হয়েছে। এসব জটিলতার মধ্যেই এ মৌসুমের চ্যাম্পিয়নস লিগের গ্রুপ পর্বের স্কোয়াড ঘোষণার মেয়াদ পেরিয়ে যায়। সুয়ারেজের তাই জুভেন্টাসে আর যাওয়া হয়নি।

এরপর সম্ভাব্য গন্তব্য হিসেবে আতলেতিকো সামনে আসে। কিন্তু এবার বাঁধ সাধে খোদ বার্সেলোনা সভাপতিই। সুয়ারেজকে ‘ফ্রি এজেন্ট’ হতে দেওয়ার সমঝোতাপত্রে উল্লেখ ছিল, পিএসজি, ম্যানচেস্টার সিটি, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ও রিয়াল মাদ্রিদ—এই চার ক্লাবে যেতে পারবেন না তিনি। কিন্তু বার্তোমেউ তাতে আতলেতিকোর নামও জুড়ে দিতে চেয়েছিলেন। সুয়ারেজ এরপর বার্সেলোনাকে হুমকিই দিয়ে বসেন আলাদা সংবাদ সম্মেলন করে। এরপরই নিজেদের অবস্থান বদলায় বার্সা। আতলেতিকোতে সুয়ারেজকে যেতে দিতে রাজি হন তারা। সুয়ারেজের আতলেতিকো যাত্রার কথা এখন নিজেরাই টুইট করে জানিয়েছে বার্সেলোনা।

আতলেতিকোয় অনেক কম বেতনেই যোগ দিয়েছেন সুয়ারেজ। বার্সেলোনায় তিনি ৩০ মিলিয়ন ইউরো পেতেন বছরে। সেটি আতলেতিকোয় কমে নামল ৬ মিলিয়ন ইউরোয়। সবশেষ মৌসুমে ৩৬ ম্যাচে ২১ গোল করেছিলেন তিনি। মৌসুমের মাঝামাঝি সময়ে চোটে আক্রান্ত না হলে এই গোলের সংখ্যা হয়তো আরও বাড়ত। ২০১৫-১৬ মৌসুমে বার্সেলোনার জার্সিতে ৫৯ গোল করে ইউরোপীয় লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েছিলেন তিনি। পেয়েছিলেন গোল্ডেন শু। বার্সেলোনার হয়ে সুয়ারেজ জিতেছেন চারটি লা লিগা ও একটি চ্যাম্পিয়নস লিগ। ২০১৫-১৬ চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালে জুভেন্টাসের বিপক্ষে গোল করেছিলেন তিনি।